আন্তর্জাতিক

বিশ্বে খাদ্যের দাম ১২ মাস ধরে কমেছে: এফএও

  প্রতিনিধি ৯ এপ্রিল ২০২৩ , ৬:৪৪:৪৯

বিশ্বে খাদ্যের দাম ১২ মাস ধরে কমেছে: এফএও

শেয়ার করুন

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) খাদ্যের মূল্যসূচক গত মাস পর্যন্ত টানা ১২ মাস ধরে কমেছে। গত বছরের মার্চে এ সূচক রেকর্ড উচ্চতায় ওঠার পর চলতি মার্চে তার মান ২০ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। খবর: রয়টার্স।

গত মাসে এফএওর খাদ্য মূল্যসূচক ১২৬ দশমিক ৯ পয়েন্টে নেমে এসেছে, ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ১২৯ দশমিক ৭ পয়েন্ট। রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর ২০২২ সালের মার্চে এ সূচক রেকর্ড ১৫৯ দশমিক ৭ পয়েন্টে উঠেছিল। এরপরের চার মাসেও এর মান ১৫০ পয়েন্টের ওপর ছিল। গত জুলাইয়ে তা ১৪০-এর ঘরে নেমে আসে।

গত এক বছরে বিশ্ববাজারে খাদ্যের সরবরাহ বেড়েছে। সেই সঙ্গে বছরব্যাপী চলা উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে খাদ্যের চাহিদা কমেছে এবং কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্য পরিবহনে রাশিয়া-ইউক্রেনের চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে।

রোমভিত্তিক এফএও বলছে, দানাদার শস্য, উদ্ভিজ্জ তেল ও দুগ্ধজাত খাবারের দাম কমার কারণে খাদ্যসূচক কমেছে। এসব পণ্যের দাম কমার কারণে চিনি ও মাংসের বাড়তি দামের প্রভাব বাজারে অতটা পড়েনি।

এফএওর প্রধান অর্থনীতিবিদ ম্যাক্সিমো তোরেও এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম কমলেও দেশে দেশে তা এখনও বেশি এবং এখনও তা বাড়ছে, এ কারণে খাদ্যনিরাপত্তার জন্য তা বাড়তি চ্যালেঞ্জের কারণে হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে যেসব দেশ স্থানীয় উৎপাদনের চেয়ে বেশি খাদ্য আমদানি করে, তাদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এসব দেশে ঋণের বোঝা এবং ডলার বা ইউরোর বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে খাদ্যের দাম বাড়তি।

এফএও’র সূচক অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে দানাদার শস্যজাতীয় খাবারের মূল্যসূচক কমেছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, গমের ৭ দশমিক ১, ভুট্টার ৪ দশমিক ১ ও চালের দাম কমেছে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। এছাড়া উদ্ভিজ্জ তেলের মূল্যসূচক কমেছে ৩ শতাংশ। ২০২২ সালের মার্চের তুলনায় যা ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। একই সময় দুগ্ধজাত খাদ্যের দাম কমেছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ।

এর বিপরীতে চিনির মূল্যসূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০১৬ সালের অক্টোবরের পর যা সর্বোচ্চ। তবে ভারত, থাইল্যান্ড ও চীনে চিনির উৎপাদন কমার উদ্বেগে সূচক কিছুটা বেড়েছে। মাংসের মূল্যসূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ।

এদিকে দানাদার খাদ্যশস্যের উৎপাদন ও সরবরাহবিষয়ক আরেক প্রতিবেদনে এফএও ২০২৩ সালে বিশ্বে গম উৎপাদন বৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়িয়েছে। তারা বলেছে, চলতি বছর গম উৎপাদন হতে পারে ৭৮৬ মিলিয়ন (৭৮ কোটি ৬০ লাখ) টন। ২০২২ সালের তুলনায় তা ১ দশমিক ৩ শতাংশ কম হলেও এ উৎপদান যথেষ্ট। ২০২২ সালেও দানাদার খাদ্যশস্যের পূর্বাভাস বাড়িয়েছিল সংস্থা, ২০২১ সালের তুলনায় যা ছিল ১ দশমিক ২ শতাংশ বেশি।

এফএও জানিয়েছে, ১৯৯০ সালের পর ২০২২ সালে বিশ্বে খাদ্যের দাম ছিল সবচেয়ে বেশি। সংস্থাটি প্রতি মাসে খাদ্যের মূল্যসূচক প্রকাশ করে। তাতে দেখা গেছে, ২০২২ সালে এফএও’র খাদ্যে মূল্যসূচকের গড় মান ছিল ১৪৩ দশমিক ৭ পয়েন্ট। ১৯৯০ সালে এফএও মূল্যসূচক প্রবর্তন করার পর এটি ছিল সর্বোচ্চ। সূচক অনুযায়ী, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে খাদ্য মূল্যসূচকের মান ১৮ পয়েন্ট বেড়েছে। ফলে ২০২২ সালে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ৩ শতাংশে ওঠে। তবে সব দেশে খাদ্যের দাম একই হারে বাড়েনি। আবার খাদ্য মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব যেসব দেশে একইভাবে পড়েছে, তাও নয়। অনেক দেশ আমদানি শুল্ক হ্রাস করে দাম সমন্বয় করেছে।

সংস্থাটি বলেছে, এশিয়ায় চাষযোগ্য জমির পরিমাণ বেড়েছে। তবে খরায় ভুগছে আফ্রিকা ও পশ্চিম ইউরোপ।


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content