প্রতিনিধি ১৮ এপ্রিল ২০২৩ , ১:৪৯:৩০
যে আগুন নিয়ে খেলা করছেন সে আগুনে কিন্তু আপনারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন”, হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
সরকার ‘মার্কেটে আগুন’ নিয়ে খেলা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার বিকালে এক ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এ অভিযোগ করে বলেন, ‘‘তারা একদিকে বাজারে বাজারে আগুন দিচ্ছেন, অন্যদিকে সমস্ত ইচ্ছা-আশা-আকাংখাগুলোকে আগুনে ঝালিয়ে দিচ্ছেন।
‘‘পুরো ব্যাপারটাই হচ্ছে তাদের (সরকার) এগুলো সব সাজানো, তৈরি করা এবং এই তৈরি করা নিয়ে সেজন্য বললাম আজকে তারা আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে।”
‘এই আগুন নিয়ে খেলা করে লাভ হবে না; আগুনে কিন্তু আপনারাই (সরকার) সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন’, হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
নিউ সুপার মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের দায় সিটি করপোরেশনের মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লাগার পরে তিনি বললেন যে, এটাতে বিএনপি এবং জামায়াত জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে।
অথচ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা পরিষ্কার করে বলছেন, প্রত্যেকটি পত্রিকাতে এসেছে যে, ঢাকা সিটি করপোরেশনের লোকেরা এসেছিল সকাল বেলা ভোর সাড়ে ৫টার সময়ে, তাদের পরনে ছিল সিটি করপোরেশনের পোশাক, তারা ড্রিল মেশিন নিয়ে এসেছিল এবং যে ফুট ব্রিজটা সেটা তারা যখন ড্রিল দিয়ে সিঁড়ি ভাঙছিল… তখন আগুন লেগে যায়। তারা চেষ্টা করেছিল আগুন নেভানোর জন্য যখন আগুন ছড়িয়ে পড়ে তখন তারা পালিয়ে গেছে।”
‘আন্দোলন একমাত্র পথ’
বর্তমান সরকার একটি ‘দানবীয় সরকার’ অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব এ সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার ও সংসদ প্রতিষ্ঠায় গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। সবাইকে এক জোট হয়ে ১০ দফা কর্মসূচি ও ‘রাষ্ট্র সংস্কার’ আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হতে অনুরোধ করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগ একটা ইতিবাচক নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে চলছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘‘সেই আওয়ামী লীগের হাতেই আজকে মানুষের সমস্ত আশা-আকাংখাগুলো ভেঙ্গে চূরমার হয়েছে। সবচেয়ে বড় যে অপরাধটি আওয়ামী লীগের এই সরকার করেছে তা হলো যে, আমাদের সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান তারা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিয়েছে এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ পুরনো রাজনৈতিক দল যে এতো রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার মধ্যে পড়েছে এটা আমরা ভাবতেও পারি না।”
ঢাকার রাজারবাগে হোটেল হোয়াইট হাউজে গণতন্ত্র মঞ্চ রাজনীতিবিদের সম্মানে এ ইফতার মাহফিল হয়।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে ও গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা রাশেদ খানের সঞ্চালনায় ইফতারপূর্ব আলোচনায় জেএসডির আসম আবদুর রব, বিএনপির আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের মোস্তফা মোহসীন মন্টু, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, জাসদের নাজমুল হক প্রধান, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জাগপার খন্দকার লুতফুর রহমান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিকল্পধারা বাংলাদেশের অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, পিপলস পার্টির আবদুল কাদের, প্রগতিশীল ন্যাপের পরশ ভাসানী, বক্তব্য রাখেন।
পরে বিএনপির বরকত উল্লাহ বুলু, জহির উদ্দিন স্বপন, শ্যামা ওবায়েদ, জাতীয় পার্টির আহসান হাবিব লিংকন, গণঅধিকার পরিষদের রেজা কিবরিয়া, নুরুল হক নূর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, পিপলস পার্টির বাবুল সর্দার চাখারী, ন্যাপ ভাসানী আজহারুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ইফতারে অংশ নেন।