আন্তর্জাতিক

ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা বিক্ষোভের ডাক পিটিআই’র

  প্রতিনিধি ৯ মে ২০২৩ , ১০:০১:৫৬

শেয়ার করুন

চরম নাটকীয়তায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে। এর মধ্যদিয়ে পাকিস্তানের অস্থির রাজনীতি আরও উত্তাল হয়ে উঠেছে। গতকাল তিনি দুটি মামলায় ইসলামাবাদ হাইকোর্টের শুনানিতে বাসা থেকে বের হওয়ার আগে সেনাবাহিনীর সিনিয়র একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঝাঁঝালো বক্তব্য দেন। তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ জোর
দিয়ে তুলে ধরেন। জিও নিউজ ও ডন এ খবর দিয়ে বলেছে, এরপর আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে থেকে গ্রেপ্তার করেছে রেঞ্জার্স। সেখানে তারা তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিশ। ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) তাৎক্ষণিকভাবে দেশজুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। বিভিন্ন শহরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। দলের বিভিন্ন নেতা দাবি করেছেন, ইমরানকে গ্রেপ্তার করে প্রহার করা হয়েছে।

এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ। তিনি বলেছেন, বেশ কয়েকবার নোটিশ দেয়া সত্ত্বেও ইমরান খান আদালতে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হন। জাতীয় কোষাগারের ক্ষতি করার কারণে তাকে গ্রেপ্তার করেছে জাতীয় জবাবদিহিতা বিষয়ক ব্যুরো। এ পরিস্থিতিতে ইসলামাবাদ পুলিশ প্রধান, স্বরাষ্ট্র সচিব, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলকে ১৫ মিনিটের মধ্যে আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেন ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক। বিচারক বলেন, তিনি সংযম প্রদর্শন করছেন। একই সঙ্গে সতর্ক করেছেন। বলেছেন, যদি ইসলামাবাদের পুলিশ প্রধান আদালতে উপস্থিত না হন, তাহলে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফকে তলব করবেন। ক্ষোভ নিয়ে এই বিচারক ওইসব ব্যক্তির উদ্দেশ্যে বলেছেন, আদালতে আসুন এবং আমাদেরকে বলুন- কেন ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং কোন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের সময় ইসলামাবাদ হাইকোর্টে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার গহর খান। তিনি অভিযোগ করেছেন- ইমরান খানকে নির্যাতন করা হয়েছে। তারা (পুলিশ) ইমরানের মাথায় ও পায়ে আঘাত করেছে। নিজের বিরুদ্ধে মামলায় জামিন আবেদন করতে মঙ্গলবার আদালতে গিয়েছিলেন ইমরান। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আদালতের গেট দিয়ে ইমরান খান প্রবেশ করার পরপরই আধা সামরিক বাহিনীর কন্টিনজেন্ট এবং সশস্ত্র ব্যক্তিরা তার পিছু নেয়। সাঁজোয়া যান দিয়ে এ সময় গেট ব্লক করে দেয়া হয়। দ্রুত ইমরানকে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইসলামাবাদের আইজিপি ড. আকবর নাসির খান। তিনি বলেন, আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ডন বলছে, দুটি মামলার শুনানিতে উপস্থিত হয়েছিলেন ইমরান। এ সময় তাকে রেঞ্জার্সরা তাদের হেফাজতে নিয়েছে। খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফের (পিটিআই) আইনজীবী ফয়সাল চৌধুরী। দলটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী টুইটে বলেছেন, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট ‘রেঞ্জার্সের দখলে। আইনজীবীদের নির্যাতন করা হয়েছে। ইমরান খানের গাড়ি ঘিরে ফেলা হয়’। আরেক টুইটে তিনি বলেন, আদালত চত্বর থেকে ইমরান খানকে অপহরণ করা হয়েছে। বেশ কিছু আইনজীবী এবং সাধারণ মানুষকে এ সময় নির্যাতন করা হয়েছে। অজ্ঞাত লোকজন ইমরান খানকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে। অন্যদিকে পিটিআইয়ের আজহার মাশওয়ানি অভিযোগ করেন, আদালতের ভেতর থেকেই ইমরানকে অপহরণ করেছে রেঞ্জার্স। তাৎক্ষণিকভাবে দেশজুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ ডেকেছে দলটি। টুইটারে এক ভিডিও বার্তায় পিটিআই নেতা মুশারাত চিমা বলেছেন, ইমরান খানকে তারা নির্যাতন করছে। তাকে প্রহার করছে। খান সাহেবের সঙ্গে তারা এমন সব করছে।

পিটিআইয়ের কর্মকর্তারা ইমরান খানের আইনজীবীর ভিডিও-ও শেয়ার করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, কোর্টের বাইরে বাজেভাবে আহত হয়েছেন ইমরান খান। তাকে গ্রেপ্তারের একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন তারা। দল বলেছে, পাকিস্তানের সাহসী মানুষকে রাস্তায় বেরিয়ে আসতেই হবে এবং দেশের পক্ষে দাঁড়াতে হবে। বেশ কয়েক দফা চেষ্টার পর ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হলো। এর আগে তাকে লাহোরের জামান পার্কের বাসা থেকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালায়।


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content