প্রতিনিধি ২১ মে ২০২৩ , ১১:৩৪:৫৪
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদেরকে হাইকোর্ট জামিন দিলে নিম্ন আদালতে তা বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়। বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। জাতির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব যেন তৈরি না হয় সেজন্য পরিকল্পিতভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। ব্যাঙের ছাতার মতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। অর্থাৎ জাতিকে পরনির্ভরশীল বানানের জন্য এটা করেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অপকর্ম বলে শেষ করা যাবে না। আর এক মুহূর্ত ক্ষমতায় থাকলে দেশের অবস্থা আরও খারাপ হবে। আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম শফিউল আলম প্রধানের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাগপা।
তিনি বলেন, নিজেদের অধিকার নিজেদের আদায় করতে হবে, বাইরে থেকে কেউ এসে দাবি পূরণ করে দিবে না। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অর্থনীতিকে খুবলে খুবলে খাচ্ছে।
হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। অবশ্যই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। না হলে কারও অস্তিত্ব থাকবে না।
দেশের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শফিউল আলম প্রধান একটি সাম্য ও মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন এবং লড়াইও করেছেন। কিন্তু আজও সেই দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ এই সরকার দিচ্ছে না। কারণ তারা তাদের মাথা বিক্রি করে দিয়েছে। আমরা ক্রান্তিকালে এসে দাঁড়িয়েছি। এখন সিদ্ধান্ত হবে, বাংলাদেশ কি এখন গণতান্ত্রিক হবে নাকি পরনির্ভরশীল ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র হবে? একদিকে একটি শাসকগোষ্ঠী ও অন্যদিকে জনগণ। দেশের মানুষের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে সরকার। তারা অন্যায়ভাব র্যাব, পুলিশ ও দলীয় গুন্ডা দিয়ে জনগণের আন্দোলন দমাতে চায়।
তিনি বলেন, অথচ ১৯৯৬ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছিলো তখন আজকের আওয়ামী লীগ অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেসব তো পূরণ করেইনি বরং সেখান থেকে দূরে সরে গেছে। তারা দুইটি ভুয়া নির্বাচন করেছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে কোনো ভোটার ভোট দিতে যাইনি। কুত্তা ছিলো ভোট কেন্দ্রে। ২০১৮ সালেও নিশিরাতে ভোট করেছে। আজকে এই সরকার নির্বাচন ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হচ্ছে সেখানেও তারা কী করছে। এমতাবস্থায় আমাদের সিলেটের সাবেক নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ভোট না করার ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বর্তমান হাসিনা সরকার থাকলে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। কারণ তারা নির্বাচনী প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এতোগুলো মিডিয়া আছে কিন্তু স্বাধীনভাবে লিখতে ও বলতে পারেন না। অসংখ্য সাংবাদিক দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। দিনকাল বন্ধ করেছে। সাগর-রুনি দম্পতির চার্জশিট দিতে পারেনি। কেউ কথা বলতে পারে না চাকরির ভয়ে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদেরকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করতে হবে। না হলে কোনো কিছুই থাকবে না। এই হলো আওয়ামী লীগ। যারা বাকশাল করেছিলো। আজকে রাশেদ খান মেনন বলেছেন – পরিকল্পিত নির্বাচন চাই না। শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেছেন- মন্ত্রীরাই সিন্ডিকেট করছে। আজকে দেশে ঋণখেলাপি বাড়ছে।
সংগঠনের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আব্দুস সালাম, জাগপার সাধারণ সম্পাদক এসএম শাহাদত হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য খন্দকার আবিদুর রহমান, আ স ম মেজবাহউদ্দিন, অধ্যক্ষ হুমায়ূন কবির প্রমুখ।