প্রতিনিধি ৬ মে ২০২৩ , ১০:০৫:২৩
সরকার পতনের দাবিতে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামছে বিএনপি। ইতিমধ্যে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন নীতিনির্ধারকরা।
সরকারবিরোধী সমমনা দল ও জোটগুলোর সঙ্গে কর্মসূচি প্রণয়ন নিয়ে আলোচনা সেরেছেন তারা। আগামীকাল সোমবার বিএনপি’র সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৈঠকে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে কঠোর আন্দোলনে নামতে চায় দলটির নেতারা। এজন্য চলতি সপ্তাহে আন্দোলনের কর্মসূচি ও অভিন্ন রূপরেখার যৌথ ঘোষণা দিতে চায় বিরোধীরা। অনেকেই বলছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরালো করতে নতুন করে কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটগুলো। এবারের কর্মসূচি নিয়ে সতর্ক অবস্থানে তারা। যেকোনো উপায়ে আন্দোলনের ফল পেতে চায় দলীয় হাইকমান্ড। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই এক দফার আন্দোলনের মধ্যদিয়ে ক্ষমতাসীন সরকারের পতন নিশ্চিত করতে চায় বিএনপি।
এর আগে রোডমার্চ, লংমার্চ ও ঢাকা ঘেরাও-এর মতো কর্মসূচি নিয়েও ভাবছে দলটি।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত করতে রাজপথে আন্দোলনের বিকল্প নেই। নতুন কর্মসূচির বিষয়ে স্থায়ী কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। পরবর্তী কর্মসূচি কী হবে তা শিগগিরই জানা যাবে। নেতারা বলছেন, বিগত সময়ের চেয়ে এবারের কর্মসূচি হবে গতিশীল। দ্রুত সময়ের মধ্যে আন্দোলনকে চূড়ান্ত রূপ দেবে বিএনপি। কর্মসূচির মধ্যদিয়েই সরকারকে বিদায় করতে চায় তারা। এবারের আন্দোলনের মধ্যদিয়েই সরকারের পতন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও পরবর্তী সরকার ব্যবস্থার কাঠামো ঠিক করতে চান তারা।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতারা বলছেন, গত বছরের ডিসেম্বরে যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা হলেও সমমনা দলগুলোর সঙ্গে দাবি দাওয়া নিয়ে মতানৈক্য ছিল। তার মধ্যেও সরকারবিরোধী দলগুলো ৪ মাসের বেশি সময় ধরে যুগপৎ কর্মসূচি পালন করেছে। রমজান ও ঈদের কারণে আন্দোলন কিছুটা শিথিল করা হয়। আগামীর দিনগুলো অতি গুরুত্বপূর্ণ। যুগপৎ আন্দোলনকে বেগবান করতে সমমনা দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছে বিএনপি। রূপরেখা ও যুগপৎ কর্মসূচি চূড়ান্ত করতেই গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, ১২ দলীয় সমমনা জোট ও এলডিপি প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমেদের মতামত নিয়েছে বিএনপি। সমমনাদের মতামতের উপর পর্যালোচনা করে আগামীকাল সোমবার বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় পরবর্তী কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে। একইসঙ্গে আন্দোলনের অভিন্ন রূপরেখাও বৈঠকে উত্থাপন করা হবে।
জানা যায়, সমমনাদের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে ঢাকা, গণভবন ও বঙ্গভবন ঘেরাও এবং রোডমার্চই বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। এছাড়া অবরোধের মতো কর্মসূচির কথা ভাবা হচ্ছে। জোটের নেতারা বিএনপিকে কঠোর আন্দোলন ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছে। সমমনা জোটের নেতারা জানান, এক দফা আন্দোলনে নামার আগে ঢাকা অভিমুখে রোডমার্চ, লংমার্চের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। ঢাকার আগে সাংগঠনিক বিভাগীয় শহরে একই কর্মসূচি পালন করতে চান তারা। এ ছাড়া প্রতিটি সিটি করপোরেশন এলাকায় বড় সমাবেশ, পদযাত্রার মতো কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছেন সরকার বিরোধীরা।
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ মানবজমিনকে বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক উপায়ে জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলন করছে। অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছে। সরকার পতনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে আগামী দিনে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি। আসছে নতুন কর্মসূচির মধ্যে সারা দেশে সভা-সমাবেশে, লংমার্চ, রোডমার্চ, ঘেরাও, অবরোধ যেকোনোটিই আসতে পাবে। জনগণের দাবি আদায়ে, জনগণকে নিয়েই গণতান্ত্রিকভাবে হরতালের মতো কর্মসূচিও ঘোষণা করতে পারে বিএনপি। সময় ও পরিস্থিতি অনুযায়ী যেকোনো কর্মসূচি আসতে পারে।
তিনি বলেন, এখনই সরকারের উচিত জনগণের দাবি মেনে নিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। দেশের গণতন্ত্র পূনরুদ্ধারে বিএনপির আন্দোলনের বিকল্প নেই।