প্রতিনিধি ১১ মে ২০২৩ , ১০:২৪:০০
নিত্যপণ্যের বাজারে যেন চলছে লুটপাটের মহোৎসব। ক্রমাগত বেড়েই চলেছে সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। কয়েকদিনের ব্যবধানে তেল, চিনি, আলু ও পিয়াজের দাম অস্বাভাবিক বাড়লেও মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও বেশ কিছু পণ্য। হঠাৎ ঊর্ধ্বমুখী বেশ কিছু সবজির দামও। বাজারে বর্তমানে ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। সর্বোচ্চ উঠেছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। প্রতিবছর ঈদুল আজহায় মসলার দাম বাড়লেও এবার আগে থেকেই বাড়তি। কিছু পণ্যের দাম রমজান মাসের চেয়েও বেশি। প্রশ্ন হচ্ছে নিত্যপণ্যের বাজারে কেন এই অস্থিরতা? বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়ালেও তা মূলত সিন্ডিকেট। অতি মুনাফা লাভের জন্য পণ্যের অবৈধ মজুত ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ান তারা।
চিনির বাজারে লুটপাট: বেশ কয়েকদিন ধরেই খুচরা বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি।
অথচ এতদিন সরকার নির্ধারিত পরিশোধিত খোলা চিনির দাম ছিল ১০৪ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম ছিল ১০৯ টাকা। অর্থাৎ কেজিতে অতিরিক্ত ২০ থেকে ৩০ টাকা পকেটে ঢুকিয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এরমধ্যে বুধবার পরিশোধিত খোলা চিনির দাম প্রতি কেজি ১২০ টাকা এবং প্যাকেটজাত পরিশোধিত চিনির দাম ১২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু দাম নির্ধারণের আগেই ২০-৩০ টাকা বেশি দামে চিনি বিক্রি করে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। এখন নতুন দর নির্ধারণ করে দেয়ায় বিক্রেতারা অনেকেই চিনি বিক্রি করছেন না। বাজারে হঠাৎ প্যাকেটজাত চিনি যেন উধাও। যদিও বাজারে চিনি সরবরাহে ঘাটতি নেই।
বুধবার আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে চিনির দাম কেজিতে ১৬ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। সর্বশেষ গত এপ্রিলে চিনির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তখন প্রতি কেজি খোলা চিনি ১০৪ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ১০৯ টাকা করার ঘোষণা এসেছিল। শুরুতে সে অনুযায়ী বিক্রি হলেও তারপর চিনির দাম বাড়তে বাড়তে এখন ১৪০ টাকায় উঠেছে। কয়েকদিন আগে সুগার রিফাইনার্স এসোসিয়েশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে দাম সমন্বয় করার অনুরোধ জানালে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে মূল্য নির্ধারণে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়। যদিও এর চেয়ে বেশি বাড়ানোর দাবি ছিল ব্যবসায়ীদের। চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে গত মার্চে এক দফায় শুল্ক কমিয়ে আনার ঘোষণা দেয় সরকার, যা আগামী ৩১শে মে পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। তবে আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থতি ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় শুল্কছাড়ের এই সুবিধা আরও কিছু সময়ের জন্য বাড়াতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব।