জাতীয়

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

  প্রতিনিধি ৩১ মে ২০২৩ , ১২:৪০:৫৪

শেয়ার করুন

হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে মুসিলম উম্মাহর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মুসলমানদের যথেষ্ঠ পরিমাণ সম্পদ রয়েছে। তাই হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়নে যথাযথভাবে এই সম্পদ ব্যবহার করতে হবে। মঙ্গলবার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) এর ক্যাম্পাসে ৩৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। ওআইসি’র মহাসচিব ও ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) চ্যান্সেলর হিসেন ব্রাহিম তাহার সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইইউটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি প্রমুখ। সমাবর্তনে ২০২১ এবং ২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পিএইচডি এবং ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

এছাড়াও অসামান্য ফলাফল অর্জনের জন্য কৃতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আইইউটি স্বর্ণপদক এবং ওআইসি স্বর্ণপদক দেয়া হয়। সমাবর্তন শেষে সরকারপ্রধান আইইউটির নবনির্মিত ছাত্রী হলেরও উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই আমি ওআইসি সদস্য দেশে যাই তাদের আমি এই অনুরোধই করি। সরকারপ্রধান বলেন, ইসলামের স্বর্ণযুগে বিশ্বসভ্যতা, বিজ্ঞান, ইতিহাস, সাহিত্য, দর্শন, রসায়ন, গণিত, চিকিৎসা, জ্যোতির্বিদ্যা ও ভূগোলসহ জ্ঞানের আরও অনেক শাখায় মুসলিম স্কলারদের ব্যাপক অবদান ছিল।

 

সে যুগের মুসলিম স্কলাররা সংস্কৃতি, জ্ঞান অর্জন, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং সমসাময়িক সাহিত্যে বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই অবস্থান থেকে মুসলিম উম্মাহর পিছিয়ে পড়ার কারণগুলো আমাদের বিশ্লেষণ করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির অভাব রয়েছে। যেটি মুসলমানদের পতনের কারণ। আমি মনে করি- হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের মুসলিম উম্মাহকে মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি মুসলিম দেশগুলোকে বিশেষ করে তাদের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও বিজ্ঞান এবং আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আধুনিক যুগে মুসলিমরা মাত্র তিনটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এটাই এই আধুনিক যুগে গবেষণা, প্রযুক্তি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর অবদানের প্রকৃত উদাহরণ। তিনি বলেন, মুসলিম জাতির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জোরালো প্রচেষ্টা প্রয়োজন- যাতে করে তারা এক্ষেত্রে আরও অবদান রাখতে পারেন।

এসময় ৪র্থ শিল্প বিপ্লব দ্বারা উপস্থাপিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, ইন্টারনেট অফ থিংস, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও অন্যান্য খাতে নিজেদের এগিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন তিনি। আইইউটি বাংলাদেশের একটি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান- যা অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) এর অর্থায়নে পরিচালিত হয়। আইইউটি’র মূল উদ্দেশ্য হল ওআইসি’র সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মানবসম্পদ উন্নয়নে-বিশেষ করে প্রকৌশল, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে অবদান রাখা।


শেয়ার করুন