জাতীয়

৮ রংফর্সাকারী ক্রীম বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করলো বিএসটিআই

  প্রতিনিধি ১৬ মে ২০২৩ , ১১:০১:২১

শেয়ার করুন

স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মাত্রায় মার্কারি ও হাইড্রোকুইনোন নামের দুটি ক্ষতিকর উপাদান থাকায় ৮টি রং ফর্সাকারী ক্রিমের বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই)। এই ক্রিমগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন ধরণের চর্মরোগ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানা গেছে।

বিএসটিআই বাজার থেকে ১৩ টি ক্রিমের নমুনা নিয়ে ল্যাবে পরীক্ষা করে। অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে দুটি উপাদানের বেশি পরিমাণে ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায় ৮টি ক্রিমে। ফলে প্রতিষ্ঠানটি এসব ক্রিমের উৎপাদন, বিক্রি, বাজারজাত পুরোপুরি নিষিদ্ধ করেছে। ক্রেতাদেরও অনুরোধ করা হয়েছে যাতে তারা এই ক্রিমগুলো আর ব্যবহার না করেন।

বিএসটিআই সূত্রে জানা গেছে, গৌরী কসমেটিকস লিমিটেডের গৌরী ব্র্যান্ডের ক্রিমে ৭৫৫.৮৫ পিপিএম মার্কারি, এস জে এন্টারপ্রাইজের চাঁদনী ক্রিমে ৬২৯.৯৬ পিপিএম মার্কারি, কিউ সি ইন্টারন্যাশনাল এর নিউ ফেস ব্র্যান্ডের স্ক্রিন ক্রিমে ৫৯০.৩৮ পিপিএম মার্কারি, ক্রিয়েটিভ কসমেটিকস লিমিটেডের ডিউ ব্র্যান্ডের ক্রিমে ২৮৫.৮৮ পিপিএম মার্কারি, গোল্ডেন পার্ল কসমেটিকস প্রাইভেট লিমিটেডের গোল্ডেন পার্ল ক্রিমে ৬৫৪.১৩ পিপিএম মার্কারি, পুনিয়া ব্রাদার্স লিমিটেডের ফাইজা ক্রিমে ৫৯০.৪৫ পিপিএম মার্কারি, নূর গোল্ড কসমেটিকসের নূর ক্রিমে ১৯৩.৬৮ পিপিএম মার্কারি ও ১৯৮০.৬৮ পিপিএম হাইড্রোকুইনন, হোয়াইট পার্ল কসমেটিকসের হোয়াইট প্লাস ব্র্যান্ডের ক্রিমে ৯৪৮.৯৩ পিপিএম মার্কারি ও ৪৩৪.৭৩পিপিএম হাইড্রোকুইনোন এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

বিএসটিআই বলছে, নির্ধারিত স্ট্যান্ডার্ড (বিডিএস ১৩৮২:২০১৯) অনুযায়ী মার্কারির গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ মাত্রা ১ পিপিএম এবং হাইড্রোকুইনোনের সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য মাত্রা ৫পিপিএম।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালিয়ের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ডা. মো. আকরাম উল্লাহ সিকদার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ‘হাইড্রোকুইনোন একটি নির্দিষ্ট মাত্রা (২-৪ পিপিএম) পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়, অতিরিক্ত মাত্রায় থাকলেও তা ক্ষতির কারণ হবে। কিন্তু মার্কারি একটি ভারী ধাতু হওয়ার কারণে ক্রিমের মধ্যে এর ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই।’

উল্লেখ্য, ৮টি ক্রিমের প্রতিটিই হচ্ছে পাকিস্তানি ব্র্যান্ডের, যা আমদানি করে বাংলাদেশে বিক্রি করা হয়।

তবে বিএসটিআইয়ের একটি সূত্র বলছে, এ পণ্যগুলোর বৈধ কোন আমদানিক বাংলাদেশে নেই। লাগেজ পার্টির মাধ্যমে এবং চোরাই পথে এগুলো দেশে আসে। তাই সরাসরি আমাদনিকারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তবে বাজারে যারা বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিএসটিআইয়ের সহকারী পরিচালক রিয়াজুল হক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ‘এ পণ্যগুলো আমদানির জন্য কোন আমদানিকারকই বিএসটিআইয়ের ছাড়পত্র নেয়নি। এজন্য কাউকে সরাসরি ধরার সুযোগ নেই। তবে বাজারে যেখানে পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

‘এ ধরণের পণ্য যারা দীর্ঘদিন ব্যবহার করে তাদের স্ক্রিনে নানা ধরণের রোগ হতে পারে।’

বিএসটিআই বলছে, নির্দেশনা অমান্য করে কেউ যদি এগুলো আমদানি, সরবরাহ এবং বিক্রি করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content