জাতীয়

স্যাংশনের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই-প্রধানমন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলন বিস্তারিত

  প্রতিনিধি ১৫ মে ২০২৩ , ১০:২৯:০৭

শেয়ার করুন

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকার ভয়ে নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণ চাইলে আছি না চাইলে নাই। নির্বাচনকালীন সরকারে অন্য দলের এমপিদের কেউ অংশ নিতে চাইলে সে সুযোগ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি সংসদে না থাকায় তাদের নিয়ে চিন্তার সুযোগ নেই। সোমবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। র‌্যাব’র ওপর যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। যেসব দেশ নিষেধাজ্ঞা দেবে তাদের কাছ থেকে কেনাকাটা না করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী চলমান নানা ইস্যু নিয়ে করা প্রশ্নের জবাব দেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দুই পাশে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ওয়েস্ট মিনিস্টার ডেমোক্রেসি ফলো করি। ব্রিটেনে কীভাবে ইলেকশন হয়, তারা কীভাবে করে, আমরা সেভাবেই করবো।

এর মধ্যে, একটু দেখাতে পারি- পার্লামেন্টে সংসদ সদস্য যারা আছেন, তাদের মধ্যে কেউ যদি ইচ্ছা প্রকাশ করেন যে, নির্বাচনকালীন সময়ে তারা সরকারে আসতে চান আমরা নিতে রাজি আছি। বিএনপি’র বিষয়ে তিনি বলেন, এর আগে আমরা (নির্বাচনকালীন সরকারে) নিয়েছি। এমনকি ২০১৪ সালে তো খালেদা জিয়াকেও আমি আহ্বান করেছিলাম, তারা আসেনি। এখন তো তারা পার্লামেন্টেও নাই। কাজেই তাদের নিয়ে চিন্তারও কিছু নাই।
সংবাদ সম্মেলনের অপর এক প্রশ্নে দেশে আন্দোলনরত বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি আবারও নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আলোচনায় কিসের জন্য ডাকতে যাবো? তাদের ডিমান্ডই তো ঠিক নাই। যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখার সময় বাইরে অনেক লোক বিক্ষোভ করছিল। তখন তাদের ডেকে কথা বলতে চেয়েছিলেন। এটি ঠিক থাকলে বাংলাদেশেও অনেক মানুষ রোদের মধ্যে কষ্ট করে, রাস্তায় নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে। তারাও কষ্ট করছে। আপনি কি ওদের (যুক্তরাষ্ট্রের বিক্ষোভকারীরা) মতো এদেরও (বাংলাদেশে তাদের অংশ) আলোচনায় ডাকবেন? উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, কাদেরকে? সেই উত্তরটা পরে দিচ্ছি। আলোচনায় কিসের জন্য ডাকতে যাবো? তাদের ডিমান্ডই তো ঠিক নাই। যুক্তরাজ্যে যারা ছিলেন তখন বৃষ্টি নেমেছিল। আমি ভাবলাম বাংলাদেশের প্রবাসী তারা বৃষ্টিতে ভিজবে তার চেয়ে তাদের ডাকি, কী বলতে চায় শুনি। এখন ঢাকায় বা বাংলাদেশে যারা, তাদের যদি বৃষ্টিতে ভেজা শখের মধ্যে থাকে তারা থাকুক।

কার পয়সায় এই আন্দোলন করছে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা কার পয়সায় আন্দোলন করছে? কোথা থেকে টাকা পাচ্ছে? তারা গ্রেনেড হামলা করে হত্যার চেষ্টা করেছে। আমাদের ২১ হাজার নেতাকর্মী হত্যা করেছে। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ মেরেছে। নির্বাচন ঠেকাতে ৫০০ স্কুল পুড়িয়েছে। সাড়ে ৩ হাজার লোক আগুনে পোড়া। ৩৮০০ গাড়ি পুড়িয়েছে, ২৭টি রেল পুড়িয়েছে, ৯টা লঞ্চ পুড়িয়েছে, ৭০টা সরকারি অফিস পুড়িয়েছে। তারা জ্বালাও-পোড়াও ওইগুলো করে গেছে। শেখ হাসিনা বলেন, আমি বলে দিয়েছি যে, আন্দোলন করুক কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু জ্বালাও-পোড়াও যদি কিছু করতে যায়, কোনো মানুষকে যদি আবার পোড়ায়, কাউকে ছাড়বো না। মানুষের ক্ষতি আর করতে দেবো না। সেই পোড়া মানুষগুলোর চেহারা, তাদের কষ্ট দেখলে আপনাদের কষ্ট হয় না? এক-একটা পরিবার কী অবস্থায় আছে, কেউ কী খবর রাখে? কী বীভৎস অবস্থা সৃষ্টি করেছে এই বিএনপি-জামায়াত। তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাদের ২০ দলীয় ঐক্যজোট সিট পেয়েছে মাত্র ২৯টি। এখন তারা আবার বড় বড় কথা বলে। কার পয়সায় এই আন্দোলন করছে? কোত্থেকে টাকা পাচ্ছে? বাংলাদেশের মানুষ এত অন্ধ হয়ে গেছে? চোখে দেখে না? হাজার হাজার কোটি টাকা যে লুট করে নিয়ে গেছে আর কাদের মদতে করছে, সেটা একটু খোঁজ-খবর নেন না। এত টাকা কোথায় পাচ্ছে? প্রতিদিন লোক নিয়ে আসে আর প্রতিদিন মাইক লাগিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছে। এমনি এমনি বিনা পয়সায় তো আর হচ্ছে না। কত দিচ্ছে, কত লোক আনবে, মোটরসাইকেলে কতজন আসবে সেসব হিসাব তো আছে। সেগুলো আপনারা দেখেন না কেন? একটু খোঁজ-খবর নেন, জিজ্ঞেস করেন। সরকার উৎখাত করবে, আমি জানি এই আন্দোলন করে কোথাও থেকে তারা লাভবান হচ্ছে। তারা যত পারে আন্দোলন করুক। আমি জনগণের সঙ্গে আছি, তাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের ওপর আস্থা ও বিশ্বাসই আমার একমাত্র শক্তি। আমার তো হারাবার কিছু নেই। বাবা-মা-ভাই সবই হারিয়েছি। আমি এখন দেশের জন্য কাজ করে যাই। নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, তাহলে কি আমরা ভয় পাবো? কেন ভয় পাবো? জনগণের জন্য কাজ করেছি। জনগণ যদি ভোট দেয়, আছি না দিলে নাই। আজকে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রির মর্যাদা পেয়েছে। যেহেতু করোনার কারণে আমরা ২৪ এ করতে পারিনি, ২৬ এ করবো। সেটুকু করে দিয়ে যেতে চাই।

কথা নাই, বার্তা নাই, স্যাংশনের ভয় দেখাবে!

অপর এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কী কারণে স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দেবে? যাদের দিয়ে (র‌্যাব) আমরা সন্ত্রাস দমন করলাম, জঙ্গিবাদ দমন করলাম। হলি আর্টিজানের পর বাংলাদেশে আর তেমন কোনো বড় ঘটনা ঘটেনি। কারণ, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গোয়েন্দা নজরদারি এবং আরও কিছু ভালো কাজ করেছে। যার ফলে আর কিছু তেমন হয়নি। এরপরও স্যাংশন কেন? সেটাই আমাদের প্রশ্ন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তো অর্থ মন্ত্রণালয়কে, কেনাকাটার বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে বলে দিয়েছি। এখন থেকে আমাদের শর্ত থাকবে, যারা আমাদের স্যাংশন দেবে তাদের থেকে আমরা কোনো কিছু কেনাকাটা করবো না। পরিষ্কার কথা। এখানে ভয়ের কী আছে? যেটা নিয়ে সমস্যা হয় সেটা আমরা উৎপাদন করে সমাধান করতে পারি। কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করেই তিনি বলেন, আমাদের উপর যারা স্যাংশন দেবে তাদের কাছ থেকে কিচ্ছু কিনবো না। পরিষ্কার কথা। এর মধ্যে দু’টা অ্যাকশন আমি নিয়েছি, আগেই। কোন কোন ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বলবো না আমি সব তথ্য। সাংবাদিকরা খবর না রাখলে আমি কেন বলবো। তাতে কি হয়েছে? আমার কিচ্ছু হয়নি। তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী যেখানে মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্যের অভাব, উন্নত দেশে খাবার কেনা সীমিত করে দেয়া হচ্ছে, যারা বড়লোক তাদের অসুবিধা নাই, সাধারণ মানুষের তো অনেক অসুবিধা হচ্ছে। সেদিক থেকে আমরা তো আমাদের মানুষকে প্রণোদনা দিয়েছি। রোজার সময় তো মানুষের হাহাকার শোনা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোজার সময় আমরা মানুষকে যথেষ্ট সাহায্য করেছি। আমাদের নেতাকর্মীরা করেছে। তো আমাদের দুশ্চিন্তার কী আছে? কথা নাই, বার্তা নাই, স্যাংশনের ভয় দেখাবে! আমরা ভয় পেয়ে বসে থাকবো কেন? আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। যারা আমাদের সপ্তম নৌবহরের ভয় দেখিয়েছিল, আমরা সেটি পার করে বিজয় অর্জন করেছি। সেটি ভুললে চলবে না, আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলতে হবে। আমাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ, এটা সেটা শুনতে হয়। এ সময় বাংলাদেশের কিছু নাগরিকই দেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে বিদেশে যায় বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, নিজের ভাঁড় ভালো নাই, ঘি ওয়ালার দোষ দিয়ে লাভ কী? তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয়টি হলো, আমাদের দেশের কিছু মানুষই বাংলাদেশের বদনাম করে। তাদের স্বার্থ রক্ষা, অথচ তারা যে কতো রকম দুর্নীতি, অপকর্ম, কতকিছুর সঙ্গে জড়িত, সেগুলোতো আমাদের সাংবাদিকরা খুঁজে বের করে না। খুঁজলে দেখা যাবে অনেক কিছু পাওয়া যাবে। এরাই বাংলাদেশের বদনাম করে। এক্ষেত্রে শ্রম ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া ব্যক্তিদের কথা আলাদাভাবে তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের কিছু শ্রমিক নেতা আছে, নিজেরা খাবেন দাবেন, আরাম-আয়েশে থাকবেন, দামি গাড়িতে চলবেন, পরিবেশ নিয়ে আন্দোলন করেন, দামি-দামি গাড়িতে চলেন। মামলা করেন, মামলা করে কয়টা মামলার রায় পাওয়া গেছে? প্রথমে মামলা, পরে আসে নেগোসিয়েশন। নেগোসিয়েশন মানেই তো আদান-প্রদান। এবং আয়েশে থেকে বাংলাদেশের বদনামটা করে আসে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের লোকরা গিয়েই তো বিভিন্ন জায়গায় বদনামটা করে আসে। এটাই দুর্ভাগ্যজনক। সাংবাদিকরা যদি এদিকটায় নজর দেন, অনেক কিছু পাবেন, অনেক তথ্য পাবেন। তিনি বলেন, আরেকটা হচ্ছে তাদের হীনম্মন্যতা। উন্নয়ন প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য যত রকমের অপপ্রচার তারা চালিয়ে যাচ্ছে। হয় তাদের জ্ঞানের অভাব, আর নয় তাদের দুরভিসন্ধি। অথবা প্রতিহিংসাপরায়ণতা। রাজনীতি যখন করি, রাজনীতিতে সমালোচনা-বিরোধিতা তো থাকবেই, এটা তো খুব স্বাভাবিক। এটা আছেও। আমাদের কাজ আমরা করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার কথা হচ্ছে, বাংলাদেশ একটা উর্বর ভূমি। বাংলাদেশের মানুষ অনেক শক্তিশালী। তাছাড়া, অনেক দেশের মানুষ বয়োবৃদ্ধ হয়ে গেছে, আমাদের আয়ুষ্কাল বেড়েছে ঠিক। আমাদের নারী সমাজ, যুব সমাজ, সাধারণ মানুষ প্রত্যেকে কাজ করে, আমরা নিজেদের কাজ করে নিজেরা খাব। আমাদের ওপর যারা স্যাংশন দেবে তাদের কাছ থেকে কিচ্ছু কিনবো না।

মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই

বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ এখন যে পর্যায়ে আছে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের সেইটুকু থাকা দরকার, যদি কোনো আপৎকালীন সময় হয়, যেমন এই ঝড় ঝঞ্ঝা এরকম ক্ষেত্রে, আমাদের খাদ্য কিনতে যদি ঘাটতি দেখা দেয়, সেই খাদ্য কেনার মতো, অর্থাৎ তিন মাসের খাদ্য কেনার মতো ডলারটা যেন আমাদের হাতে থাকে। ওইটা নিয়েই রিজার্ভের জন্য চিন্তা। এ ছাড়া রিজার্ভের এত চিন্তা না। তিনি বলেন, ডলার সংকট এখন ‍পুরো বিশ্বব্যাপী, এটা শুধু বাংলাদেশে না। প্রথম গেল করোনা অতিমারি, আর তারপর ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধ, আর সেই যুদ্ধের সঙ্গে স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশন। যার ফলে আজকে সারা বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি যেভাবে বেড়ে গেছে। দ্বিতীয় হচ্ছে পরিবহন, পরিচালন ব্যয় বেড়ে গেছে, যার কারণে ডলার সংকটটা এখন সমগ্র বিশ্বেই রয়ে গেছে। শেখ হাসিনা বলেন, করোনা অতিমারির মধ্যে যেটা হয়েছিল যে আমদানি রপ্তানি বন্ধ, বিদেশে যাতায়াত বন্ধ, সবকিছু বন্ধ থাকাতে খরচও আমাদের কম ছিল, ভ্যাকসিন কিনতেই যা ডলার লেগেছিল, বাকি আমরা খুব ভালোভাবে একটা রিজার্ভ রাখতে পেরেছিলাম। কিন্তু এরপর যখন আবার অর্থনীতি উন্মুক্ত হলো, স্বাভাবিকভাবেই সেই সুযোগটা থাকেনি, ডলার খরচ হচ্ছে এবং হবে। তার থেকেও বড় কথা, মানুষকে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিচ্ছি, গ্যাস দিয়ে এখানে ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে, বিনিয়োগ হচ্ছে, উৎপাদন বাড়ছে। কাজেই ডলারের ওপর চাপ পড়বে, তবে সেই চাপটা আমরা একটা কথা বলি, আমরা তো আগেও সরকারে এসেছি, যখন ৯৬ সালে এসেছিলাম, তখন কতোটুকু ছিল আমাদের রিজার্ভ? জাতির পিতা যখন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়তে শুরু করেন, তখন তো এক পয়সাও রিজার্ভ ছিল না। আমরা কি চলি নাই, আমরা কি এগোতে পারিনি?

এমনই প্রস্তুতি নিলাম যে ঘূর্ণিঝড় চলেই গেল: যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলার সরকারের প্রস্তুতি থাকে জানিয়ে রসিকতা করে শেখ হাসিনা বলেন, এমনই প্রস্তুতি নিলাম যে ঘূর্ণিঝড় চলেই গেল, আঘাত হানতেই সাহস পেলো না। তবে আবার আসবে। একটা নিয়ম আছে, একটার পর পরই আরেকটা আসে, সেজন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি বলেন, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলাম। আমি নিজে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়েছি, বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা উপকূলীয় ১৩টি জেলায় ৭ হাজার ৪০টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছিলাম। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সাড়ে ৭ লাখেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত পুনর্বাসন কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়।

ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য পদ্মা সেতুর পেইন্টিং নিয়ে গেছি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে যে খুব ভালো মানের পেইন্টার আছে, যারা খুব চমৎকার পেইন্টিং করতে পারে, সেটা জানানোর জন্যই বিশ্বব্যাংকে পদ্মা সেতুর পেইন্টিং নিয়ে গেছি। বিশ্বের কারও যদি পেইন্টিংয়ের প্রয়োজন হয় আমাদের কাছে চাইতে পারবে। আর বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে প্রিয় জায়গাটা হচ্ছে পদ্মা সেতু। এটাই, আর কিছু না। অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ৫০ বছরের অংশীদারিত্ব শীর্ষক’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর পেইন্টিং বিশ্বব্যাংকের প্রধানকে উপহার দেন। এই উপহার দেয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী উল্লিখিত জবাব দেন।

আইএমএফ’র ঋণ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইএমএফ তাদেরই ঋণ দেয় যারা তা শোধ করতে পারে। কোনো অনাথ এ নিয়ে কী বললো এটা আমাদের দেখার বিষয় না।

আরও দেখতে :গাড়ীতে পতাকা ব্যবহার বন্ধসহ ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত ও সৌদি দূতের স্থায়ী এসকর্ট সুবিধা বাতিল


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content