জাতীয়

কয়লার অভাবে বন্ধ পায়রার উৎপাদন

  প্রতিনিধি ৫ জুন ২০২৩ , ১০:২৫:৩৫

শেয়ার করুন

দেশের সবচেয়ে বড় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিক বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খুরশেদুল আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ২৫শে মে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এই কেন্দ্র থেকে ১ হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যেতো।

অন্যদিকে, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হওয়ায় দেশের চলমান লোডশেডিং পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। খোদ রাজধানীতেই দফায় দফায় লোডশেডিং হচ্ছে। দেশজুড়ে জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড দাবদাহে বিদ্যুতের যাওয়া-আসা মানুষের জীবনযাপনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। দেশে এখন বিদ্যুতের সর্বোচ্চ দৈনিক চাহিদা ১৫ হাজার মেগাওয়াটের কিছু বেশি। তবে প্রতিদিন সরবরাহ হচ্ছে ১১ থেকে সাড়ে ১১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সরকার বলছে, ডলার সংকটে তেল ও গ্যাস আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। তাই চাহিদা অনুসারে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন বিদ্যুতের চাহিদা দৈনিক সাড়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াট। তবে খাত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এই চাহিদা ১৭ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছেছে। গত রোববার দুপুর ১২টায় সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হওয়ার কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, বিদ্যুতে বর্তমানে ১২০ কোটি ঘনফুট গ্যাস দেয়া হচ্ছে, যা নিকট অতীতের মধ্যে সর্বোচ্চ। তার পরও পরিস্থিতি সামলাতে পারছে না সরকার। কারণ কয়লাভিত্তিক রামপাল, পায়রা ও বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং বেসরকারি তেলভিত্তিক বিদ্যুকেন্দ্রগুলো জ্বালানি সংকটে উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। গত শনিবার প্রায় ৪ হাজার ৪৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হয়েছে। আর কেন্দ্র মেরামত ও সংরক্ষণের জন্য ৩ হাজার ২৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়নি। দেশের সবচেয়ে বেশি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) চাহিদার ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ কম পাচ্ছে। খোদ ঢাকাতে দিনরাত সবসময় লোডশেডিং হচ্ছে। গ্রামে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম গণমাধ্যমকে বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানা চালানোই মুশকিল হয়ে গেছে। ডিজেল খরচ বেড়ে গেছে। এর পরও যদি আমাদের জানা থাকতো, কখন বিদ্যুৎ যাবে, কখন আসবে তাহলে সে অনুসারে শ্রমিকদের কাজে লাগানো যেতো। এখন তো লোডশেডিংয়ের কোনো শিডিউল নেই। দেশে লোডশেডিং পরিস্থিতি যে অসহনীয় হয়ে উঠেছে, তা খোদ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও স্বীকার করেছেন। তবে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content