প্রতিনিধি ১০ জুন ২০২৩ , ৮:১১:০৬
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিজয়ী মেয়র জায়েদা খাতুনের প্রায় ৩০০ জন কর্মী-সমর্থক এখনো বিভিন্ন জায়গায় আটক রয়েছেন। এ পর্যন্ত মুক্তি মিলেছে প্রায় ৪ হাজার ৭০০ জনের। জায়েদা খাতুনের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম শনিবার সকালে নগরের ছয়দানা এলাকার নিজ বাসভবন প্রাঙ্গণে নগরের পূবাইল ও কাউলতিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ও সমবেত লোকজনের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেছেন।
এ সময় জাহাঙ্গীর আলম আরো বলেন, এই ভোটটা আনন্দের ছিল না। কষ্টের ছিল। একটা আদর্শের জায়গায় ছিল। আপন মানুষ কিভাবে পর হয়ে যায়, তা এই সিটি নির্বাচন দেখলেই আপনারা বুঝবেন। মিথ্যা কিভাবে সত্য হয়, আর সত্য কিভাবে ধ্বংস করে দেয়, তা এই গাজীপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই শহরের ১২ লাখ মানুষকে যারা মানুষ মনে করেনি, যারা মনে করেছিল সিল মেরে ক্ষমতায় বসে মানুষকে চুষে খাবে, তাদের বিরুদ্ধে এই নির্বাচন একটা প্রতিবাদ হয়েছে। এই শহর আপনাদের আমাদের সকলের শহর। যারা আমাদের লোকদেরকে ধরিয়েছে, হয়রানি করেছে, গ্রেপ্তার করিয়েছে বা আমাদের লোকদের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়েছে সেই সব নেতাদের ছাড় দেওয়া যাবে না।
কারণ শহরের মালিক জনগণ, পুলিশ নয়। লোকদের ধরে গাড়ি পোড়ার মামলা দিবে, বিস্ফোরক মামলা দিবে, এটা কোন সভ্য সমাজে হয় না। যারা এসব করিয়েছে তাদের কোনোভাবে ছাড় দেয়া যাবে না। অপরাধীদের ছাড় দিলে ভবিষ্যৎ বংশধররা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মাস্তান, মিথ্যাবাদী, প্রতারক, ভন্ড রাজনৈতিক থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি। আমরা মানুষকেও মুক্ত করে দেব। আমাদের কিছু লোক এখনো জেলখানায় রয়েছে। আমি মনে করি এই সপ্তাহে তারা মুক্ত হয়ে যাবে। আমাদের প্রায় পাঁচ হাজারের মতো মানুষকে ২৫ তারিখের ভোট পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৭০০ জনের মতো মুক্ত হয়েছে। এখনো ৩০০ জনের মতো আটক আছে। তাদেরকে আগামী সপ্তাহের মধ্যে মুক্ত করবো। আমরা বিজয় মিছিল করিনি। আমাদের লোকজনকে জেলে রেখে আমরা যদি বিজয় মিছিল করি তাহলে তারা কষ্ট পাবে। এছাড়া আমরা বিজয় মিছিল করলে আবার অনেকে লজ্জিত হবে। লজ্জায় ফেলতে চাইনি। আমরা সমাজের সবাইকে নিয়ে চলতে চাই। তবে যারা বাটপার, ধোকাবাজ, ক্ষতিকারক তাদেরকে দরকার নেই। আপনারা বিশ্বাস করে আমার মাকে মেয়র নির্বাচিত করেছেন। আপনাদের যা প্রয়োজন মায়ের সাথে মিলে, পরামর্শ করে আমি সেগুলোর সমাধান করে দেবো। আমরা আগামী এক তারিখ থেকে অনলাইন ভিত্তিক কার্যক্রম চালু করছি। নগরের যে কেউ কোন সমস্যায় পড়লে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে যাতে আমরা কয়েক মিনিটের মধ্যেই তা জানতে পারি। আমাদের মোবাইল টিম থাকবে যে কোন সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক আমাদের লোক ঘটনাস্থলে ছুটে যাবে। আমরা সকলে মিলেমিশে এই শহরে একটা সুন্দর পরিবেশ করে দিতে চাই। সেজন্য আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা চাই।
শত্রুপক্ষ এখনো ঘুমিয়ে নেই। তারা আমাদের লোকদের ক্ষতি করার অপদস্ত করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাই সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। মিলেমিশে থাকতে হবে।