গুজব ছিলো পদ্মা সেতু নির্মাণে লাগবে শিশুর মাথা। ২০১৯ সালে সারা দেশে ২১ গণপিটুনির ঘটনায় প্রাণ যায় ৫ জনের। সবচেয়ে আলোচিত মেয়ের স্কুলের সামনে গণপিটুনিতে মা রেনুর মৃত্যু। পদ্মা সেতুর আজ বছরপূর্তি। বিচারের অপেক্ষায় থেকে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন রেনুর মা। রেনুর সন্তান দুটি আবারও হয়েছে অভিভাবক হারা।
সাড়ে সাত বছরের তাসমিন তুবা আর ১৫ বছরের তাহসিন। তিনবছর আগে নিহত মায়ের ছবিই এখন তাদের একমাত্র স্মৃতি। মাকে হারিয়ে নানী সফুরা বেগমই ছিলো তাদের অভিভাবক। সেই নানীও অন্যভুবনে রেনুর কাছে গিয়েছে। আর শূন্য করে দিয়েছে শিশু দুটির পৃথিবী।
[caption id="attachment_3031" align="aligncenter" width="300"]
রেনুর দুই শিশু সন্তান[/caption]
পাঁচ বোন এক ভাইর মধ্যে রেনু ছিলো সবার ছোট। পিটাপিঠি বড় হওয়া বোন নাজমুন নাহার নাজমার কাছেই তুবা বড় হচ্ছে। তাকেই মা বলে ডাকে। আর ছেলে কিশোর তাহসিন আল মাহিদ হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করছে। এখনো পরিবারটি সেই ভয়াবহ ঘটনার আতঙ্ক থেকে বেরোতে পারেনি। পদ্মা সেতু নিয়ে পরিবারটি গর্বিত। কিন্তু তাদের দাবি হত্যাকারীদের বিচার।
তিনবছর আগে উত্তর বাড্ডার এই স্কুলেই মেয়ের ভর্তির খোঁজ নিতে গিয়ে প্রাণ দেন গনপিটুনিতে। অজ্ঞাত ৫শ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন রেনুর ভাগ্নে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু। বছরের পর বছর কেটে যাওয়ায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল হক ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। এর মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্ক দুইজন। ঢাকার সপ্তম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের শুরু হয় শিশু দুজনের বিচার। পৃথক আদালতে চলছে প্রাপ্তবয়স্ক ১৩ অভিযুক্তের বিচার।
দেশী বিদেশী সব ষড়যন্ত্র রুখে প্রতিদিন পদ্মা সেতু পাড়ি দিচ্ছে মানুষ। দীর্ঘসময় নদীপারের অপেক্ষার মৃত্যুর গল্প ছাপিয়ে তৈরি হচ্ছে জীবনের গল্প। বাড্ডার রেনু দেখে যেতে পারলেন না পদ্মা সেতু। গৌরবের সেতুর বাতাসে যেনো কারো দীর্ঘশ্বাস না থাকে। গুজব ও গণপিটুনির শিকার সবাই বিচার পাবে এমন প্রত্যাশা সবার।
সম্পাদকঃ মাহবুবা আক্তার। অফিসঃ ৭৫ ই-ব্রডওয়ে,নিউইয়র্ক এনওয়াই ১০০০২।ফোন:+৮৮০১৭১২৯০৩৪০১ ই- মেইলঃ dailyhaquekotha@gmail.com
প্রকাশিত সংবাদপত্রের অংশ