প্রতিনিধি ৩ জুন ২০২৩ , ২:১৫:৫০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কে আমাদের ভিসা দেবে না, কে আমাদের স্যাংশন দেবে! ও নিয়ে মাথা ব্যাথা করে লাভ নেই। ২০ ঘণ্টা প্লেনে জার্নি করে আটলান্টিক পার হয়ে আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না। পৃথিবীতে আরও অনেক মহাসাগর আছে, অনেক মহাদেশ আছে। সেইসব মহাদেশেই আমরা যাতায়াত করব, বন্ধুত্ব করব। আমাদের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে, উন্নত হবে, চাঙ্গা হবে।
শনিবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকার ট্রাক স্ট্যান্ডের উত্তর পাশে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তেজগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ভবনে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগে সভাপতি শেখ হাসিনা। ফলে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নিজস্ব ঠিকানা পেল ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ। এদিন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের নিজস্ব কার্যালয়ও ওই ভবনে হবে বলে ঘোষণা দেন দলীয় সভাপতি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের এটা মনে রাখতে হবে, বিশ্বব্যাপী যে খাদ্যমন্দা, বাংলাদেশের জনগণকে যেন সেটা স্পর্শ করতে না পারে। তার জন্য আমাদের উর্বর মাটি ব্যবহার করতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রেখে উৎপাদন বাড়াতে হবে।’
‘আমরা নিজের পায়ে চলব, নিজের দেশকে গড়ে তুলব, কারও মুখাপেক্ষী হব না’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোনো অশুভ শক্তি মানুষের ভাগ্য নিয়ে যেন আর ছিনিমিনি খেলতে না পারে। এদের করালগ্রাস থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করাই আমাদের দায়িত্ব।’
আমেরিকাকে বিএনপির দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা ভোট চুরি করে, ভোট নিয়ে চিরদিন খেলছে, জনগণের ভাগ্য নিয়ে খেলছে- আমেরিকাকে বলব ওই সন্ত্রাসী দলের দিকে নজর দিন। কানাডার হাইকোর্ট বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল ঘোষণা দিয়েছে। সন্ত্রাস ও দুর্নীতির দায়ে এই আমেরিকা তাদের ভিসা দেয়নি। এখন বিএনপি আবার তাদের কাছে ধর্ণা দেয়। আর কিছু বলতে চাই না।’
‘২০ ঘণ্টা জার্নি করে আমেরিকা না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না’
বাংলাদেশের কিছু অর্থনীতিবিদ ও জ্ঞানীগুনীর দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আমরা তো লেখাপড়া জানি না। কিন্তু বাংলাদেশের মাটি ও মানুষকে চিনি। বাংলাদেশটাকে চিনি, নদী-নালা-খাল-বিল চিনি। বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গল কোথায়, কল্যাণ কোথায়, কী করলে ভালো হবে- সেটা আমরা খুব ভালো করে জানি। সেটা মাথায় রেখেই কিন্তু আমরা দেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে। ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যানও করে দিয়েছি। যাতে আমাদের বদ্বীপ পরিবেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষা পায়, দেশটা যেন সুন্দরভাবে চলতে পারে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যাতে সুন্দরভাবে চলতে পারে, সেই পরিকল্পনাও করে দিয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের প্রতি আমার আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে। তারা জানে, একমাত্র নৌকায় ভোট দিলেই তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। নৌকায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছে, নৌকায় ভোট দিয়ে উন্নত জীবন পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়ে ডিজিটাল দেশ পেয়েছে। নৌকায় ভোট দেওয়ার ফলেই আজ স্কুল-কলেজ-মসজিদ-মাদরাসা সবকিছুর উন্নতি হচ্ছে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলীয় প্রধান বলেন, ‘জনগণের কল্যাণে ত্যাগ স্বীকার করলে তারা কিন্তু সেটার মর্যাদা দেয়, এই কথাটা মনে রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ ত্যাগ করতে এসেছে, ভোগে বিশ্বাস করে না। সেই কথাটা মাথায় রেখে জনগণের সেবক হিসাবে আমি কাজ করে যাচ্ছি।’
জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ এবং সমাবেশ পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
এছাড়াও অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
আরও জানুন-বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারবো বলেই দিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী