নির্বাচন

আমরা মনে করি নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে-টেরি এল ইসলে

  প্রতিনিধি ৩০ জুলাই ২০২৩ , ৮:১৪:২০

শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রের টেনেট ফাইন্যান্স ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের প্রতিনিধি টেরি এল ইসলে বলেছেন, আমরা একটি স্বাধীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলছিলাম, তবে সেটা বাংলাদেশের সংবিধান সম্মত নয়। এটা করতে হলে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অধীনে নির্বাচন করার কোনো লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক নেই। সংবিধান পরিবর্তনের জন্য অনেক সময় প্রয়োজন, যেটা এই মুহূর্তে সম্ভব না। রোববার সকালে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সদস্য টেরি এল ইসলে এসব কথা বলেন।

টেরি এল ইসলে বলেন, আমি আমেরিকা সরকারের প্রতিনিধিত্ব করি না। তবে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক টিমের সদস্য হিসেবে আমরা আশাবাদী। আমরাও মনে করি নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে। এই নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরেপক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে সমর্থ হবে।

সম্প্রতি আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনি ব্লিঙ্কেনের বরাত দিয়ে টেরি এল ইসলে বলেন, ব্লিঙ্কেন বলেছেন, তারা বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চান। সেজন্য আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তারা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখবে।

এ সময় ইউরোপীয় ইউনিয়ন রিপোর্টার নিক পউল বলেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে একটি ফলপ্রসূ বৈঠক করেছি। আমরা আশাবাদী যে, নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশে একটি অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সচেষ্ট হবে।

 

যেহেতু দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন স্বাধীন, তাই কমিশন এবং প্রশাসন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করবে বলে আমরা আশাবাদী।
ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যান আবেদ আলী বলেন, আমরা কমিশনের সঙ্গে খুব সৌহার্দপূর্ণ আলোচনা করেছি। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি ও সাম্প্রতিক সময়ের নির্বাচন সম্পর্কে তারা জানতে চেয়েছে। আগামী নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা আসতে চাইছেন। এ বিষয়ে ইসির বিধিমালা জানতে চেয়েছেন। ইসি আশ্বস্ত করেছে পর্যবেক্ষকরা ভোটের আগে ও পরে আসতে পারবে। কমিশন থেকে কোন বাধা নেই। আবেদ আলী আরও বলেন, প্রতিনিধিরা ঢাকা-১৭ আসনে হিরো আলমের উপরে হামলায় ইসি কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চেয়েছেন। কমিশন এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। যারা হামলা করেছে তাদের গ্রেপ্তার ও পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে কমিশন জানিয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেহেতু অসাংবিধানিক, সেই বিষয়ে (প্রতিনিধি) উনাদের কোন আগ্রহ নাই। উনারা বলেছেন সংবিধানে যেটা আছে সেটার আলোকেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। উনারা বলছেন, কমিশনের যেই আইন আছে, সেটার যেনো সঠিক প্রয়োগ হয়। রাজনৈতিক দলগুলো ও সরকার যেনো ইসিকে সাপোর্ট দেয় এই বিষয়গুলো নিশ্চিত করলে, এই কমিশনের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। এটা উনারা আশা প্রকাশ করেছেন।

নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসবেন কি না, আসতে হলে তাদের কি করণীয় এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। মূলত আলোচনা হয়েছে যে, বর্তমান নির্বাচন কমিশন কিভাবে সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন আয়োজন করবে, কিভাবে কাজ করবে সেটা জানতে চেয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি নির্বাচনে প্রার্থীদের উপর যে আক্রমণ করা হয়েছিল, সে বিষয়ে সরকার এবং নির্বাচন কমিশন কি ব্যবস্থা নিয়েছে এই বিষয়গুলো তারা জানতে চেয়েছিলেন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে যদি আসতে চায় তাহলে স্বাগত জানানো হবে। তবে অবশ্যই তাদেরকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসতে হবে।

বৈঠকে আরও অংশ নেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, চার নির্বাচন কমিশনার, আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি দলের সদস্যদের মধ্যে জাপানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সমাজকর্মী ইউসুকি সুগু, চীনের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সমাজকর্মী এনডি লিন, ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের পক্ষে অধ্যাপক ড. মাহফুজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, সার্ক মানবাধিকার ফোরামের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মজুমদার প্রমুখ।

 


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content