আন্তর্জাতিক

দিল্লিতে যমুনা নদী বিপদসীমায় বন্যায় নিহত ৩৭

  প্রতিনিধি ১১ জুলাই ২০২৩ , ১১:৩৭:২৪

শেয়ার করুন

ভারতে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। মৌসুমী ভারি বৃষ্টিপাতে উত্তরাঞ্চলজুড়ে তলিয়ে গেছে জনপদ। গত তিন দিনে সেখানে কমপক্ষে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ অবস্থায় রাজধানী দিল্লিতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেখানকার নিম্নাঞ্চল, যা বন্যাপ্রবণ, সেখান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।

সোমবার রাতে দিল্লিতে যমুনা নদী বিপদসীমার ২০৫.৩৩ মিটার অতিক্রম করে। মঙ্গলবার সকালে তা ২০৬.৩২ মিটারে পৌঁছে যায়। এর কারণ, হাথনিকুণ্ড ব্যারেজ থেকে অধিক পরিমাণ পানি ছেড়ে দিয়েছে হরিয়ানা। কর্মকর্তারা বলছেন, যমুনা নদীর পানি আগের অনুমান থেকে অনেক বেশি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি আরও বাড়বে।

 

এ নদীতে উচ্চ মাত্রায় বন্যার মাত্রা হলো ২০৭.৪৯ মিটার। অর্থাৎ পানি এই সীমায় পৌঁছলে বা একে অতিক্রম করলে উচ্চ মাত্রায় বন্যা দেখা দেবে। এ অবস্থায় বন্যায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। তাদেরকে নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন রিলিফ ক্যাম্প এবং কমিউনিটি সেন্টারে।
দিল্লি সরকার বন্যাপ্রবণ এলাকা মনিটরিং, যমুনায় পানির স্তরে নজর রাখতে ১৬টি কন্ট্রোলরুম স্থাপন করেছে দিল্লি সরকার। বন্যা মোকাবিলায় বেশ কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ৪০ বছরের মধ্যে দিল্লিতে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর আগে এমন বৃষ্টিপাত হয়েছিল ১৯৮২ সালে। তখন ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছিল ১৬৯ মিলিমিটার। ফলে এই বৃষ্টিপাত অপ্রত্যাশিত এবং শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য তা সামাল দেয়া কঠিন। এমন বৃষ্টিপাত সামাল দেয়ার উপযোগী করে ড্রেনেজ নির্মাণ করা হয়নি।

ওদিকে আবহাওয়া অফিস আরও ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাষ দিয়েছে। তারা বলেছে এমন বৃষ্টিপাত হতে পারে হিমাচল প্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তর প্রদেশ এবং রাজস্থানে। ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে ভারতের উত্তরাঞ্চলের প্রায় সব জায়গা। আক্রান্ত এলাকায় রিলিফ ও উদ্ধার অভিযান বৃদ্ধি করেছে আর্মি ও জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বাহিনী। ওই অঞ্চলে বেশ কিছু নদী উপচে পড়ছে। হাঁটু সমান পানির নিচে ডুবে আছে শহর, সড়ক, এবং ভবনগুলো। ভারি বর্ষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হিমাচল প্রদেশ। দেখা দিয়েছে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাড়িঘর এবং কোটি কোটি রুপির সম্পদ।

এ অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী সুখবীন্দর সিং সুখুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি সব রকম সাহায্য ও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। ভারি বর্ষন ও ভূমিধসের ফলে বেশ কিছু সড়ক ও হাইওয়ে ব্লক হয়ে আছে উত্তরাখণ্ডে। নদনদীর পানি সেখানে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। ভারি বর্ষণ হয়েছে রাজস্থান, পাঞ্জাব ও হরিয়ানায়। সেখানে নিম্নাঞ্চল এতে পানিতে ডুবে গেছে। ফলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। রাজস্থানে ভারি বর্ষণে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। রাস্তা, রেল সড়ক, হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। মঙ্গলবারও সেখানে আরও বৃষ্টি হওয়ার কথা।


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content