প্রতিনিধি ২২ জুলাই ২০২৩ , ১২:২৯:৫৫
জেলা প্রতিনিধি:- ত্রুটিপূর্ণ বাস ও বেপরোয়া গতি ঝালকাঠির বাস দুর্ঘটনার কারণ বলে মনে করছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। আর যাত্রীদের অভিযোগ, অতিরিক্ত যাত্রী তোলা নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে চালক ইচ্ছাকৃতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।
তবে আসলে কী ঘটেছিল তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি পুরাতন ও ত্রুটিপূর্ণ ছিল। তাছাড়া যারা বেঁচে ফিরেছেন তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যাত্রীরা বলেছেন, রাজাপুর স্টেশনের পর থেকেই বাসচালক বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন।
শনিবার (২২ জুলাই) বিকেলে এসব তথ্য জানান দক্ষিণাঞ্চলে উদ্ধার সংস্থার এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন কমিটি গঠন করেছে। এতে শিগগিরই আমরা জানতে পারব মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার কারণ।
এদিকে আহত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি আরিফ নামের একজন বলেন, ৪০ সিটের গাড়িতে কমপক্ষে ৬০ জন লোক ছিল। আমি চালকের ঠিক পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চালক যাত্রীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি চলছিল। ঠিক তখনই দেখলাম গাড়িটি এলোমেলো চলা শুরু করে। এরপরই পুকুরে পড়ে যায়।
এই যাত্রী আরও বলেন, আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাসটি সড়ক থেকে পুকুরে পড়ে ডুবে যায়। বাসটি পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে যায়। এর মধ্যে একটু ফরসা দেখে সেদিকে এগিয়ে যেতেই একটি জানালা পাই। পরে সেই জানালা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসি।
আরও কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, দুর্ঘটনার আগে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা নিয়ে চালকের সঙ্গে তর্কাতর্কি হচ্ছিল যাত্রীদের। তর্ক করতে গিয়ে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন নয়তো ইচ্ছাকৃতভাবে বাসটিকে পুকুরে নামিয়ে দেন।
সাইফুল নামের আরও এক যাত্রী বলেন, রাস্তা ফাঁকা ছিল। চালক ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী নিচ্ছিলেন। এ নিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে তর্কের মধ্যেই তিনি বাসটি পুকুরে নামিয়ে দেন।
এক নারী যাত্রী বলেন, ‘আমি কেমনে বাস থেকে বেরিয়েছি তা নিজেই স্মরণ করতে পারছি না। চালকের পেছনের চেয়ার ধরে দাঁড়িয়েছিলাম। যাত্রীদের সঙ্গে চালক ও হেলপার দুজনই তর্ক করছিলেন। এর মধ্যেই বাসটি পুকুরে পড়ে যায়।’
উল্লেখ্য, শনিবার (২২ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে ঝালকাঠি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ছত্রকান্দা নামক স্থানে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের একটি পুকুরে পড়ে যায়।
দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত অবস্থায় ৩৫ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।