প্রতিনিধি ২৭ জুলাই ২০২৩ , ২:৩৭:৪৯
পার্বত্য জেলা রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় একটি সেতু নির্মাণের ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তিতে রয়েছেন চার শতাধিক পরিবার। সেতুটি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ঝর্ণাটিলা গ্রামের সঙ্গে লংগদু সদরের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। দীর্ঘদিনেও সেতু নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৭ সালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কাপ্তাই হ্রদ বেষ্টিত ঝর্ণাটিলা গ্রামের সঙ্গে লংগদু উপজেলা সদরের যোগাযোগের জন্য সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এবং সেই বছরের এপ্রিলে রাঙামাটি আসনের বর্তমান সাংসদ দীপংকর তালুকদার আনুষ্ঠানিকভাবে সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটির ঝর্ণাটিলা অংশে পাঁচটি পিলারের কিছু অংশের কাজ করা হয়েছে। তবে লংগদু অংশে কোনো কাজ শুরু হয়নি। এই পথে চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা। তবে বর্ষায় কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়তে শুরু করায় কচুরিপানা এসে নৌকা চলাচলেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ নেমে এসেছে।
খেয়াঘাটের মাঝি ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঝর্ণাটিলা গ্রামে চার শতাধিক পরিবারের বসবাস। প্রতিদিন শতাধিক শিক্ষার্থী লংগদুর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য এই পথে যাতায়াত করে। লেকে পানি বেড়ে গেলে নৌকা একমাত্র চলাচলের ভরসা। এছাড়াও এই গ্রামে উৎপাদিত ফসল ও শাক সবজি বাজারে নিতে হলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় চাষিদের। পাশাপাশি কেউ অসুস্থ হলেও রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।
স্থানীয়রা আরও বলেন, সরকার সারা দেশে অসংখ্য সেতু ও রাস্তার কাজ করেছে। কিন্তু এই সামান্য একটা সেতুর কাজ করতে এতো সময় কেন লাগছে এটা রহস্যজনক। আমরা স্থানীয় নেতৃবৃন্দকেও অনেকবার বলেছি সবাই শুধু আশ্বাস দিয়েছে কিন্তু কোনো ফলাফল দেখতে পাচ্ছি না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহাম্মেদ বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে ছয় বছরেও গুরুত্বপূর্ণ একটা সেতুর কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। সেতু নির্মাণে জেলা পরিষদ প্রতি অর্থ বছরে বরাদ্ধ দেয় কিন্তু সেতুর কাজে কোনো অগ্রগতি নেই। শুনেছি এ বছরেও কিছু টাকা বরাদ্দ দিয়েছে জেলা পরিষদ। এই বরাদ্দ একসঙ্গে দেওয়া হলে ঠিকাদার কাজটিকে দ্রুত এগিয়ে নিতে পারতো।
লংগদু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিক্রম চাকমা বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেতুর বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন এই অর্থ বছরে কিছু বরাদ্দ দেবেন। আশা করছি বরাদ্দ পেলে ঠিকাদার নির্মাণ কাজটি শুরু করতে পারবে। সেতুটি দ্রুত নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ঝর্ণাটিলা এলাকাটি উপজেলা সদরের কাছে হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই নাজুক।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সদস্য আছমা বেগম বলেন, সেতুটির বিষয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সেতুটি নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে এবং এই অর্থ বছরে কিছু বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
সেতু নির্মাণের অগ্রগতি বিষয়ে জানতে জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।