রাজনীতি

আদালত আওয়ামী ফ্যাসিবাদের এক দমনযন্ত্র-মির্জা ফখরুল ইসলাম

  প্রতিনিধি ২ আগস্ট ২০২৩ , ৩:৩০:৪২

শেয়ার করুন

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানকে সাজা দেওয়াটা আওয়ামী দুঃশাসনের কোনো ব্যতিক্রমী ঘটনা বলে কারও মনে হয়নি। অবৈধ আওয়ামী সরকারের ফরমায়েশি রায়ের আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। বিচার বিভাগের দলীয়করণের এটা আরেকটি নিকৃষ্ট নজির।

বুধবার সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রায়-পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমান এবং তার স্ত্রীকে যে সাজা দেওয়া হবে তা নিয়ে কারো সংশয় ছিল না। কারণ বিরোধী দলের প্রধান নেতাদের নির্মূল করতে যেভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করা হয়, সেই নীলনকশা ধরেই সরকারপ্রধান এগিয়ে যাচ্ছেন। রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে রাখা আওয়ামী সরকার তাদের কোনো প্রতিপক্ষ রাখতে চায় না।

তিনি বলেন, সরকারপ্রধান নিজেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী রাখতে চান। সেজন্য আইন আদালত ও প্রশাসনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে রাজনৈতিক প্রধান প্রতিপক্ষকে নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর হয়েছেন। আজ এই ফরমায়েশি রায় দেওয়ার ঘটনা দেশকে গণতন্ত্রশূন্য করার ধারাবাহিক চক্রান্তের অংশ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দেশজুড়ে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র নব্য বাকশালী দুঃশাসনকে চিরস্থায়ী রাখতে। সেজন্য আইন আদালতকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের এক দমনযন্ত্র হিসেবে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিবেকবান বিচারক, ন্যায়বিচার করার কারণে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে মামলা থেকে খালাস দেওয়ায়, সেই বিচারক মোতাহার আর দেশে থাকতে পারেননি। সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বিচার বিভাগে সরকারি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ‘গানপয়েন্টে’ দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, এই রায় যে শেখ হাসিনার নির্দেশ মোতাবেক হয়েছে তার বড় প্রমাণ আদালতে প্রায় ৪৯ লাখ মামলার জট থাকলেও আলোর গতিতে চলেছে এ মামলার কার্যক্রম। রাত ৮টা ৯টা পর্যন্ত একতরফাভাবে সাজানো সাক্ষীকে দিয়ে শেখানো বুলি বলানো হয়েছে আদালতে। একমাসে এই মামলাটির জন্য প্রতিদিন শুনানি করে ৪২ জন সাক্ষী দ্রুত গতিতে নিজেরা নিজেরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের আইনজীবীরা এ ধরনের অস্বাভাবিক বিচার কার্যের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করতে গেলে তাদের ওপর পুলিশ ও সরকারদলীয় আইনজীবীরা একাধিকবার হামলা চালিয়েছে। তাদের আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। গোটা দেশবাসী অবাক বিস্ময়ে হতবাক হয়ে প্রত্যক্ষ করেছে কীভাবে তামাশার বিচারের নামে ক্যামেরা ট্রায়াল চালানো হয়েছে। আজকের ফরমায়েশি রায় সরকারপ্রধানের হিংসা ও আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশজুড়েই যখন আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে জনগণের মধ্যে যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে সেটিকে বিভ্রান্ত করতে অবৈধ আওয়ামী সরকারের এটি একটি কুটচাল। একদফার চলমান আন্দোলনকে নেতৃত্বশূন্য করতে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে প্রতিহিংসা মেটানো হয়েছে।

ফখরুল বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির বহুল আলোচিত হত্যা মামলা আদালতে তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য ৯৯ বার পেছানো হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ৭৩ বার পেছানো হয়েছে। এরকম বহু আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর মামলা হিমাগারে ফেলে রেখে তারেক রহমান ও তার সহধর্মিনী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে এই সাজানো মিথ্যা মামলার কার্যক্রম ১ মাস ২০ দিনে শেষ করা ও আদেশ দেওয়ার মানে হলো জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে নির্মূল করা। প্রধানমন্ত্রী হিংসার প্রয়োগে দ্বিধা করেননি। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাজা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content