খেলাধূলা

কোরিয়ান কোচ নিয়ে বিপাকে হকি

  প্রতিনিধি ৭ আগস্ট ২০২৩ , ৩:৩৭:০৮

শেয়ার করুন

 

 

 

বাংলাদেশের হকির প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট এশিয়ান গেমস। আসন্ন চীনের হাংজু এশিয়ান গেমসের জন্য বাংলাদেশ দল দক্ষিণ কোরিয়ান কোচ ইয়ং কিউ কিমের অধীনে অনুশীলন করছে। কোচের ভাষাগত সমস্যার সঙ্গে অনুশীলন পদ্ধতি ও আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে হকি অঙ্গনে।

কোরিয়ান কোচের অধীনে জিমিরা দুই বেলা করে অনুশীলন করছেন। সপ্তাহ তিন দিন জিমেও অনেক ঘাম ঝরাচ্ছেন। এত পরিশ্রম করেও কোচের মন পাচ্ছেন না খেলোয়াড়রা। অনুশীলনে একটু এদিক-ওদিক হলেই কোচ মেজাজ হারান। দলীয় সূত্র মতে, কোচ কোনো কৌশল বা বিশেষ স্কিল একবার দেখান। এরপর সেটি অনুরুপ না হলেই ক্ষিপ্ত হন। যদিও দলটির ম্যানেজার মাহবুব এহসান রানার ভিন্ন মন্তব্য, ‘খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমি কয়েকবারই বসেছি। তারা আমাকে এমন কোনো অভিযোগ বলেনি। বাংলাদেশে যত বিদেশি কোচ এসেছে তার মতো পরিশ্রমী কোচ আসেনি। সে প্রচুর পরিশ্রম করে এবং অনেক ক্ষেত্রে একাধিকবারও খেলোয়াড়দের কৌশল দেখায়।’

 

বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনে বিভেদের সুর নতুন কিছু নয়। হকি নির্বাচন নিয়ে সবাই এক ছাতার নিচে দাড়ালেও কোচ ইস্যুতে আবার ঐক্যের ভাঙনের সুর শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে ফেডারেশনের অনেক কর্মকর্তার কাছেই কোচের যোগ্যতা ও কর্মকান্ড প্রশ্নবিদ্ধ। কোরিয়ান কোচ ও ফেডারেশনের মধ্যকার যোগসূত্র ছিলেন সাবেক জাতীয় খেলোয়াড় ও দলের ম্যানেজার মাহবুব এহসান রানা। কোচের যোগ্যতা ও নিয়োগ সম্পর্কে রানার ব্যাখ্যা, ‘ফেডারেশন থেকে আমাকে জাতীয় দলে বিদেশি কোচ খোজার দায়িত্ব দেয়ার পর বাংলাদেশে কাজ করেছে এমন কোচদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। অনেকেই স্বল্প সময়ে আসতে রাজি হননি। এই কোচ স্বল্প মেয়াদে রাজি হলে আমি ফেডারেশনকে জানাই। এরপর ফেডারেশনই তাকে নিয়োগ দিয়েছে। যখন নিয়োগ হয় তখন আমি ফেডারেশনের কমিটিতে ছিলাম না।’ ফেডারেশনের কমিটিতে না থাকলেও রানাকে জাতীয় দলের ম্যানেজার করা হয়েছিল।

ফেডারেশনের এক সূত্রের দাবি, কোরিয়ান কোচ মূলত স্কুল শিক্ষক ও আন্তর্জাতিক কোচিংয়ের সনদ নেই। এই প্রসঙ্গে ম্যানেজার রানার উল্টো প্রশ্ন, ‘তিনি কোরিয়ার হয়ে হকি বিশ্বকাপ ও অলিম্পিক খেলেছেন। খেলোয়াড় হিসেবে তাকে আগে থেকেই চিনতাম। কোচ হিসেবে তাকে প্রথম পেলাম ফ্রাঞ্চাইজ হকিতে। কোচিং সনদ না থাকলে ফ্রাঞ্চাইজে তাকে দেয়া হলো কেন?’

কোচের সম্মানী নিয়েও রয়েছে নানা কানাঘুষা। বড় মাপের কোচ না হয়েও এই কোচের পেছনে বড় অঙই ব্যয় করছে ফেডারেশন। কোচের আর্থিক বিষয়ে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক একেএম মমিনুল হক সাঈদ বলেন, ‘কোচের আবাসন, গাড়ি, দোভাষীর পেছনেই কয়েক লাখ টাকা ব্যয়। এরপর সম্মানী তো রয়েছেই। এশিয়ান গেমস, স্বল্প মেয়াদের জন্য কোচ না পাওয়া ও সামগ্রিক প্রেক্ষাপটেই এই কোচের ব্যাপারে সম্মত হয়েছে ফেডারেশন।’ বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে হকির আগে তায়কোয়ান্দো ও জিমন্যাস্টিক্সে কোরিয়ান কোচ কাজ করছেন। তায়কোয়ান্দো কোচ ইতোমধ্যে বাংলা রপ্ত করলেও জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশন দোভাষীর জন্য অর্ধ লক্ষ টাকার বেশি ব্যয় করে প্রতি মাসেই।

 

কোচ নিয়ে নানা প্রশ্নের পাশাপাশি দল নির্বাচন নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। ১৫ জুলাইয়ের আগে হকি ফেডারেশন ১৮ জনের চূড়ান্ত তালিকা দিয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও সিনিয়র খেলোয়াড় সারওয়ার হোসেন নেই চূড়ান্ত তালিকায়। ১৮ জনের তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পরও এসেছে রদবদল। এই রদবদল নিয়ে গত পরশু ফেডারেশনের অনানুষ্ঠানিক এক সভায় বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে।

পারিবারিক কারণে ১৫ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহের জন্য ছুটি চেয়েছেন কোরিয়ান কোচ। যদিও এখনো ছুটি মঞ্জুর বা টিকিট নিশ্চিত করেনি ফেডারেশন। হকি অঙ্গনে গুঞ্জন রয়েছে, কোচ গেলে আর নাও ফিরতে পারেন।

 


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content