জাতীয়

চীনের প্রেসিডেন্টকে শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার বার্তা দিবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

  প্রতিনিধি ২১ আগস্ট ২০২৩ , ৯:৫৩:৫২

শেয়ার করুন

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক চূড়ান্ত প্রায়। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিক্‌স শীর্ষ সম্মেলনের সাইড লাইনে হবে কাঙ্ক্ষিত সেই বৈঠক। আজ থেকে সেই সম্মেলন শুরু হচ্ছে। এতে সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশের সরকার প্রধান অংশ নিচ্ছেন। বৈঠকে বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক রাজনৈতিক বাস্তবতা, বাংলাদেশের সম-সাময়িক পরিস্থিতিসহ দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হবে। সেগুনবাগিচা জানিয়েছে, বৈঠক হচ্ছে- এটা নিশ্চিত তবে উভয়ের সুবিধাজনক সময়ক্ষণ ঠিক হবে সম্মেলনে যাওয়ার পর। বৈঠকের আলোচ্যসূচির ড্রাফ্‌ট চালাচালি হচ্ছে বলেও জানিয়েছে ঢাকার দায়িত্বশীল সূত্র।

বৈঠকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে কী আলোচনা হতে পারে? জানতে চাইলে সোমবার বিকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনার শেষ নাই। চীন আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। আমরা অনেকগুলো প্রজেক্ট সই করেছি, এমওইউ সই করেছি, প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলারের সই। আর প্রাইভেটে ১৩ মিলিয়ন।

তার থেকে আট বছরে ৪ বিলিয়ন এ পর্যন্ত পেয়েছি, সেগুলো যেন ত্বরান্বিত হয়; সেটা আলোচনা হতে পারে। এটা গুরত্বপূর্ণ একটা ইস্যু। আমরা চীনের কাছ থেকে যে ঋণ নিচ্ছি, তার সুদের হার কম হওয়া চাই। এটার ওপর আলোচনা হবে। দুনিয়াব্যাপী তাদের ঋণে সুদের হার বাড়িয়েছে। আমরা বলবো, আমাদের দেয়া ঋণ সস্তায় বিবেচনা করলে ভালো হয়। আলোচনায় জলবায়ু ইস্যু থাকবে। আমাদের নিয়মিত অভিবাসনের বিষয়টি আসতে পারে। আমরা বিনিয়োগে জোর দেবো। আমরা বলবো, আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ চাই। বাণিজ্য বাড়াতে চাই। চীন বাংলাদেশকে বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য অনকে ছাড় দিয়েছে জানিয়ে মোমেন বলেন, চীন বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য আমাদের অনেক ছাড় দিয়েছে। তবুও বাণিজ্য একপেশে হয়ে গেছে। আমরা বলবো বাণিজ্য আরও বাড়াও, বিনিয়োগ করো।
বাংলাদেশ ও চীনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ওই বৈঠকে স্থিতিশীলতার বিষয়টি থাকছে কিনা- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা আমাদেরও কনসার্ন। পুরো অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা দরকার। আমি যেখানে যাই এটা বলি। আমি বৈঠকে থাকলে এটা তুলবো। মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় রাখা গেলে এ অঞ্চলের জন্য মঙ্গল হবে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা সবচেয়ে জরুরি। শেখ হাসিনা হচ্ছেন শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতীক। প্রধানমন্ত্রীকে যদি রাখা যায়, পুরো অঞ্চলের জন্য, আমাদের জন্য তো বটেই, ভারত, নেপাল ও ভুটান প্রত্যেকের মঙ্গল হবে। সেটাই আমি বলবো। ভারতকে তিনি সেটাই বলেছিলেন জানিয়ে মন্ত্রী অভিযোগ করেন চট্টগ্রামের একটি অনুষ্ঠানে তিনি এ সংক্রান্ত বক্তব্য দিয়েছিলেন, যা মিডিয়াতে ভিন্নভাবে এসেছে। মন্ত্রী বলেন- আমি মনে করি ছোট-খাটো ইস্যু নিয়ে আমাদের শান্তি বিঘ্নিত হয়। আমাদের বেসিক পলিসি শান্তি ও স্থিতিশীলতা। আমি খুব খুশি ভারতবর্ষ অত্যন্ত পণ্ডিত অত্যন্ত পরিপক্ক, তারাও এটা মনে করে। শুধু ভারতের জন্য না সারা অঞ্চলের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা দরকার।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে (২০০১-০৬) দেশ রসাতলে ছিল দাবি করে তিনি বলেন, আবারও যদি বিএনপি-জামায়াতের জোট ক্ষমতায় আসে বাঙালিদের বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে। তার ভাষ্যটি ছিল এমন- ‘বাংলাদেশে যদি আবার বিএনপি-জামায়াতের মতো সরকার আসে। ২০০১ থেকে ২০০৬ আমরা দেখেছি, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জিহাদী। এগুলো তো প্রমোট হয়েছে। দেশটা তখন রসাতলে গেছে।’ এ সময় তিনি আফগানিস্তানের প্রসঙ্গে উত্থাপন করে বলেন, দেশটিতে ২৯ মিলিয়ন লোক। তারা জিহাদী হয়ে গেছে। তাবৎ দুনিয়াকে তারা কাঁপিয়ে দিছে। বাধ্য হয়ে আমেরিকা আফগানিস্তান দখল করছে জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশে ১৭০ মিলিয়ন লোক, এ দেশে যদি এ রকম জিহাদী হয় সারা অঞ্চলের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। বাঙালিদের তো ১২টা বাজবেই তখন। এই যে সুন্দর ভবিষ্যৎ দেখছেন, ওগুলো তখন ভুলে যাবেন। তখন আফগানিস্তানের মতো কষ্টে থাকবেন। চীনের নেতৃত্বাধীন রিজিওনাল কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপে বাংলাদেশের যুক্ত হচ্ছে কি-না? জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের পণ্ডিতরা, যারা এসব নিয়ে স্টাডি করেন তারা বলছেন, যোগদান করলে আমাদের দেশের জন্য মঙ্গল হবে। কিন্তু আমরা এখনো এ নিয়ে ফাইনাল আলাপ করিনি। আমরা এখনও এটাতে সম্মতি দেইনি, সইও করিনি।

জোহানেসবার্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক নয়, দেখা হবে

জোহানেসবার্গে ব্রিক্‌স সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হচ্ছে কি-না? জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নয়া দিল্লিতে আলোচনার জন্য রাজি হয়েছেন। ব্রিকসে ওনার (মোদি) সময় হবে বলে মনে হয় না। তবে যেহেতু অনুষ্ঠানে দু’জনই যাচ্ছেন, দেখা তো হবেই।

 


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content