অর্থনীতি

দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ কোন খাতে ব্যবহার হচ্ছে,এ নিয়ে আলোচনায় মার্কিন কর্মকর্তা ঢাকায়

  প্রতিনিধি ৬ আগস্ট ২০২৩ , ১০:৪০:৩৫

শেয়ার করুন

দেশে দেশে পাচার হওয়া অর্থের ব্যবহার তথা তা কোনো দেশ বা জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতা, যুদ্ধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, মাদক বা অস্ত্র চোরাচালানে ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা? তা খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনায় এই মুহূর্তে ঢাকা সফর করছেন বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিষয়ক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশেষ অ্যাসাইনমেন্টপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পারমাণবিক অস্ত্র ও নিষেধাজ্ঞা বিশেষজ্ঞ রিচার্ড নেফিউ। রোববার থেকে তিনি তার ৩ দিনের ঢাকা মিশন শুরু করেছেন।

সফরের প্রথম দিনে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়িত্বশীল প্রতিনিধিদের সঙ্গে। রোববার বিকালে সেগুনবাগিচার দুদক কার্যালয়ে ঘণ্টাব্যাপী মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, নেফিউ ছাড়াও বৈঠকে তার অপর দুই সফরসঙ্গী ডিল্যান এইকেনস ও ম্যাক্স মার্টিন ছিলেন। সচিব ছাড়াও দুদকের দুই মহাপরিচালক আক্তার হোসেন ও সৈয়দ ইকবাল হোসেন এবং পরিচালক (গোয়েন্দা ইউনিট) আবদুল্লাহ আল জাহিদ মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সচিবের ভাষ্য মতে, প্রাথমিক আলোচনায় দুর্নীতি দমনে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা বিষয়ে কথা হয়।

সেখানে এটি নিরসনে দুদক গৃহীত কার্যক্রমসমূহ নিয়ে মতবিনিময় হয়। এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী দুর্নীতি দমনে বিদ্যমান কৌশলসমূহের পাশাপাশি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে নিত্য নতুন কৌশল কি হওয়া উচিত তা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়। সচিব জানান, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের দুদকের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দুর্নীতি দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখার বিষয়ে তাদের গভীর আন্তরিকতা ব্যক্ত করে। দুদকও পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে সম্মতি জ্ঞাপন করে।

অর্থপাচার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এ ব্যাপারে কোনো কথা হয়নি। তবে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে কৌশলগত দিকগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

 

দেশে অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করা তথা বিদ্যমান রাজনৈতিক মতপার্থক্য ভুলে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানকে উৎসাহিত করতে বন্ধু এবং উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে চলে?ছেন ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসহ পশ্চিমা দুনিয়ার প্রতিনিধিরা।
এ নিয়ে একটি স্বতন্ত্র ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যাতে মোটা দাগে নির্বাচনের পথে প্রতিবন্ধকতাকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রকাশ্য হুমকি রয়েছে। এসবের সঙ্গে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বিশেষজ্ঞ রিচার্ড নেফিউর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের আচমকা সফরের কোনো যোগসূত্র রয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নে দুদক সচিব বলেন, নির্বাচন বা রাজনীতি নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো আলাপ হয়নি। হওয়ার কথাও নয়। তবে বৈঠক শেষে ফিরে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিচার্ড নেফিউর খোলাসা করে কিছু না বললেও ‘আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন। উল্লেখ্য, গত বছরের জুলাইতে বৈশ্বিক দুর্নীতি দমনের বিষয়টি সমন্বয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিশেষ দায়িত্ব পান রিচার্ড নেফিউ। জগৎ বিখ্যাত কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির ওপর ব্যাপক গবেষণাকারী নেফিউ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল সফর করছেন। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল সফরের অংশ হিসেবে এবার তিনি বাংলাদেশে এলেন। আজ পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনসহ সরকারে বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করবেন তিনি। বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে স্টেট ডিপার্টমেন্টের গ্লোবাল অ্যান্টি-করাপশন কো-অর্ডিনেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই কর্মকর্তা বাংলাদেশ সফর শেষে সরাসরি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট জমা করবেন।


শেয়ার করুন