রাজনীতি

প্রভুরা এসে দেশের পট পরিবর্তন করতে পারবে না-

  প্রতিনিধি ২০ আগস্ট ২০২৩ , ১২:২০:১০

শেয়ার করুন

 

বিদেশি প্রভুরা বাংলাদেশে এসে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।

তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। বিদেশি প্রভুর কাছে ধরনা দেন কোনো অসুবিধা নেই। বিদেশি প্রভুরা এসে এই দেশের পট পরিবর্তন করতে পারবে না। এই দেশের ক্ষমতার মালিক জনগণ। জনগণ যতদিন শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে কোনো শক্তির ক্ষমতা নেই এই সরকারের পতন ঘটাতে পারে।

শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ জাতীয় শ্রমিক লীগ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, আপনারা (বিএনপি) যে প্রভুর দেশে দৌড়াচ্ছেন সেই প্রভুর দেশের সংস্থা আইআরআই জরিপ করে বলেছে দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ এখনো শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল। ৭০ শতাংশ মানুষের আস্থাশীল সরকারের পতন ঘটানোর সুযোগ নেই।

বিদেশিদের চাপে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মুখ শুকিয়ে গেছে, বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে হানিফ বলেন, গতকাল একটা ভাষণে মির্জা ফখরুল বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নাকি মুখ শুকিয়ে গেছে। উনার প্রভু পাকিস্তান আর পশ্চিমারা চাপ দেওয়ায় নাকি আমাদের মুখ শুকিয়ে গেছে। ফখরুল সাহেব আগস্ট মাস বাঙালির শোকের মাস, রক্ত ক্ষরণের মাস। এই মাসে আমর শোকাতুর থাকি। এটা উৎসবের মাস নয় যে, আপনি আমাদের হাসি মুখ দেখবেন।

তিনি বলেন, আপনারা আওয়ামী লীগের রুদ্র মূর্তি দেখেছেন। এই আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুই দুইবার আপনাদের ক্ষমতা থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে দিয়েছিল। আওয়ামী লীগের কর্মীদের চেনেন না এখনো। আওয়ামী লীগের কর্মীদের হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। আগস্ট মাস যাক তারপর দেখবেন আমাদের নেতা-কর্মীদের অবস্থান।

হানিফ বলেন, কালকে দেখলাম খুব খুশি ছিলেন আর আজকে দেখলাম আপনার (মির্জা ফখরুল) মুখ শুকিয়ে গেছে। পরশুদিন আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের পত্রিকায় খবর এসেছে, বন্ধু রাষ্ট্র থেকে তারা বলেছেন এই বাংলাদেশে যদি শেখ হাসিনার সরকার দুর্বল হয় তাহলে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অস্বস্তির মুখে পড়তে পারে। এতেই তার ঘুম হারাম হয়ে গেছে। উনি বলেছেন এটা নাকি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের শামিল। কী বাক্য!

আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, লজ্জা হয় না মির্জা ফখরুল। কিছুদিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই দেশের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যখন ভিসানীতি ঘোষণা করেছিল তখন খুশিতে বাগ বাগুম করে অভিনন্দন জানালেন। এই দেশের রাজনীতি, নির্বাচন নিয়ে সকাল বিকাল আপনারা বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন, দৌড়াচ্ছেন। তাদেরকে দিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন সেই বক্তব্য আপনাদের ভালো লাগছে। এসব আপনাদের কাছে রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ বলে মনে হয়নি। এখন পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র তারা অস্বস্তির কথা বলেছে এতেই মনে হচ্ছে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ। নির্লজ্জ দালালির একটা সীমা আছে ফখরুল।

তিনি বলেন, আমি আগেও বলেছি, রাজাকারের সন্তান রাজাকারই হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় এরা রাজাকার ছিল এখনও এরা পাকিস্তানের রাজাকার। এরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি ধ্বংস করেছিল। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে কী ছিল বাংলাদেশ? বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানিয়েছিল, নরক বানিয়েছিল। আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল, ১০ হাজার মা-বোনের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল একটাই, আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করে আজীবন ক্ষমতায়। সেদিন কোথায় ছিল মানবতা, কোথায় ছিল গণতন্ত্র, কোথায় ছিল আইনের শাসন?

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা কারো দয়ায় বা কোনো মেজরের হুইসেলে আসেনি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস লড়াই-সংগ্রাম করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম। পাকিস্তানিরা যখন বুঝতে পেরেছিল তাদের পরাজয় নিশ্চিত তখন তারা পুরো দেশকে পোড়া মাটির ভূ-খণ্ড বানিয়ে গিয়েছিল। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশ পুনর্গঠন করেছিলেন। প্রশাসন, অফিস আদালত ঠিক করেছিলেন। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী, বিডিআর গঠন করেছিলেন। সংবিধান রচনা করে দেশকে উন্নয়নের ধারা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক সেই সময়ে জাতির মহান নেতাকে হত্যা করা হয়।

হানিফ বলেন, আমরা বহুবার বলেছি ৭৫ এ আত্মস্বীকৃত খুনি কর্নেল ফারুক রশীদরা ছিল ভাড়াটে খুনি, ভাড়াটে লাঠিয়াল। এর মূল শক্তি ছিল পাকিস্তান ও একাত্তরে আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করা পশ্চিমা পরাশক্তি। একাত্তরের পরাজয়ের চরম প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করেছিল। আর মূল নেপথ্যে কুশীলব হিসেবে কাজ করেছিল খুনি জিয়া।

বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন তার প্রমাণ তিনি রেখে গেছেন উল্লেখ করে হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেখে আমরা ভেবেছিলাম এরাই বোধ হয় মূল হোতা। কিন্তু তারাই পরে বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের কাছে বলেছে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরিকল্পনা তার (জিয়াউর রহমান) কাছ থেকে পেয়েছে, তার পরামর্শ, সমর্থন এবং তার নির্দেশে তারা এগিয়ে গেছে। জিয়া যে বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলব ছিল তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের আইনের আওতায় না এনে তাদের পুরস্কৃত করেছে, তাদের প্রমোশন দিয়েছে।


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content