প্রতিনিধি ৯ আগস্ট ২০২৩ , ১০:১৮:৫৯
প্রথমে লাথি, কান ধরে ওঠবোস। তারপর নিজের থুতু চাটতে বাধ্য করা হলো মুসলিম এক যুবককে। ভারতের এক বিজেপি নেতার এমন নির্মম কর্মকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে ওই নেতার সমালোচনায় মুখর হয়েছেন নেটিজেনরা।
দ্য হিন্দু ও টাইমস নাও এর খবরে বলা হয়েছে, ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দুমকায় এই ঘটনা ঘটেছে গত ৬ আগস্ট। তবে ঘটনাটি প্রকাশ্যে এসেছে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট)।
ভাইরাল ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, সমবেত জনতার মধ্যে সাদা পোশাকে চেয়ারে বসে আছেন বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র কুনওয়ার। জারমুণ্ডির সাবেক বিধায়ক তিনি। তার সামনে অসহায়ভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তৌসিফ নামের এক মুসলিম যুবক।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দেবেন্দ্র কখনও তাকে লাথি মারছেন, কখনও কড়া ভাষায় নির্দেশ দিচ্ছেন কান ধরে ওঠবোস করতে। মুখ বন্ধ করে সেই আদেশ মানছেন তৌসিফ। শেষে তাকে আদেশ দেওয়া হয়, মাটিতে থুতু ফেলতে এবং বাধ্য করা হয় নিজের থুতু চাটতে।
সাবেক বিজেপি বিধায়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন তখন রীতিমতো চিৎকার করছেন, নানাভাবে হেনস্তা করছেন তৌসিফকে। প্রাণভয়ে শেষপর্যন্ত থুতু চাটতে বাধ্য হন ওই যুবক।
অমানবিক এই ঘটনার ছবি প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স প্লাটফর্মে এক পোস্টে দলটি জানিয়েছে, ‘ঝাড়খণ্ডে মুসলিম যুবককে বিজেপির সাবেক বিধায়কের হেনস্তার এই ঘটনা অত্যন্ত অমানবিক। বিজেপি নেতাদের নৈতিকতা বোধের অভাব স্পষ্ট। সামগ্রিকভাবে দলেরও সেই একই অবস্থা।’
ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লেও পুলিশের দাবি, তাদের কাছে হেনস্তার কোনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে,
খবরে বলা হয়েছে, তৌসিফ দুমকার সাধুডিহ গ্রামের বাসিন্দা। তার হেনস্তায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতার শাস্তির দাবিতে ইতোমধ্যেই সরব গ্রামবাসীরা। কিন্তু নিজের ‘দোষ’ মানতে নারাজ ওই বিজেপি নেতা। তার দাবি, তৌসিফ নদীতে স্নানরত মেয়েদের ছবি তুলছিলেন। তাই তিনি তাকে ‘শাস্তি’ দিয়েছেন।
তবে দেবেন্দ্রর এই দাবি মানতে নারাজ গ্রামবাসী। তারা জানান, এমন কিছুই ঘটেনি। ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরই নিজের দোষ ঢাকার চেষ্টা করছেন ওই বিজেপি নেতা।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের এক দলিত ব্যক্তির গায়ে প্রস্রাব করার অভিযোগ ওঠে এক বিজেপি বিধায়ক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সেই ঘটনাও ভারতে বিতর্কের জন্ম দেয়। পরে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ওই দলতি ব্যক্তিকে নিজের বাড়িতে ডেকে আনেন এবং তার পা ধুইয়ে দিয়ে ক্ষমা চান।