প্রতিনিধি ২৭ আগস্ট ২০২৩ , ৯:৩৬:৫৪
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির তিন নেতা সিঙ্গাপুর গেছেন। পত্রপত্রিকায় লেখা হয়েছে এটা কি আদৌ চিকিৎসা, নাকি আরও কোনো ষড়যন্ত্র করার উদ্দেশ্যে তাদের এই নেতারা একইসঙ্গে সিঙ্গাপুর গেলেন। এটা অনেকের প্রশ্ন।
রোববার (২৭ আগস্ট) গ্রেনেড হামলায় নিহত আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সহধর্মিনী বেগম আইভি রহমানের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে আইভি রহমান পরিষদ।
হাছান মাহমুদ বলেন, পত্রিকায় দেখলাম চট্টগ্রামে ছাত্রদল বিএনপি অফিসে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। কখন যে নয়াপল্টনের অফিসে যুবদল তালা লাগিয়ে দেয়, সেটি দেখার বিষয়। তাদের (বিএনপি) ঘরের মধ্যে এখন অন্তর্জ্বালা শুরু হয়েছে। নইলে ছাত্রদল বিএনপি অফিসে তালা লাগানোর কথা না। এটি শুরু হওয়ার কারণ হচ্ছে, বিদেশিদের কাছে বারবার ধর্না দিয়ে কোনো লাভ হয়নি। বিদেশিরা তাদের দাবি-দাওয়া, তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার এগুলোর প্রতি কোনো সমর্থন জানায়নি। বিদেশিরা শুধু একটি সুন্দর নির্বাচন দেখতে চায় বাংলাদেশে। আমরাও (আওয়ামী লীগ) একটি সুন্দর নির্বাচন করতে চাই।
তিনি বলেন, নির্বাচন বর্জন করার অধিকার বিএনপির আছে। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা যদি কেউ করে, তাহলে দেশের মানুষ কঠোর হস্তে সেটি প্রতিহত করবে। এটি ২০১৪ সাল নয়, ২০২৩ সাল। এখন ২০১৩-১৪ সালের পুনরাবৃত্তি করবেন, সেটি এই দেশের মানুষ করতে দেবে না।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিচালনা করা হয়েছিল। এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হচ্ছে তারেক রহমান। তার পরিকল্পনায় হাওয়া ভবনে কয়েক দফা বৈঠক হয়। সেগুলো ২১ আগস্টের মামলার প্রসেডিংয়ে আছে। কখন, কোথায় বৈঠক হয়? হাওয়া ভবনে কয়বার বৈঠক হয়। আমি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সাক্ষী।
তিনি বলেন, এই গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হবে, সেজন্য ফারুক রশিদ তখন ঢাকায় এসেছিল। বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরও এই হামলায় যুক্ত করা হয়েছিল। যখনই শুনেছে শেখ হাসিনা মৃত্যুবরণ করেনি, তারপর তারা চলে গেছে। এই হামলার পর হাওয়া ভবনের প্রথম প্রশ্ন ছিল, শেখ হাসিনা বেঁচে আছে? যখন শুনেছে তিনি (শেখ হাসিনা) বেঁচে আছেন, তারা হতাশায় নিমজ্জিত হয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা করা।
তিনি আরও বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে মোস্তাক এবং জিয়া। আর ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারেক জিয়া। তারা আসলে হত্যার রাজনীতিটাই করে। হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই জিয়াউর রহমানের উত্থান এবং ক্ষমতায় টিকে থাকাটাও হত্যার রাজনীতির মাধ্যমে অব্যাহত রেখেছে। তার (জিয়াউর রহমান) বিরুদ্ধে যখনই সেনাবাহিনীতে ক্যু এর প্রচেষ্টা হয়েছে, তখনই নির্বিচারে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও সৈনিকদের হত্যা করা হয়েছিল।
আইভি রহমানের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আইভি রহমান একজন কর্মীবৎসল নেত্রী ছিলেন। তিনি কর্মীদের সঙ্গে উঠতেন, চলতেন, বসতেন। এমন কোনো মিটিং নেই, যেখানে তিনি থাকতেন না। তিনি শৌখিন ছিলেন। যত্নসহকারে স্বামীর খোঁজ খবর রাখতেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও আইভি রহমান পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক আ আ স ম আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আলোচনা আরও বক্তব্য রাখেন সভায় আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, আইভি রহমান পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আক্তারুজ্জামান খোকা, সদস্য মুহাম্মদ রোকন উদ্দিন পাঠান, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাড. বলরাম পোদ্দার, যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী ডেইজি সারোয়ার, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।