আবু হোরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকলকে সম্বোধন করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন বলতো; কাহারও ঘরের দরওয়াজা সংলগ্ন যদি একটা প্রবাহিত নদী থাকে এবং ঐ দৈনিক পাঁচবার ঐ নদীতে গোসল করে, তাহার শরীরে কি ময়লা থাকতে পারে? সকলে উত্তর করিল না, কোন প্রকার ময়লাই থাকতে পারে না। তখন হযরত (দঃ) ফরমাইলেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের অবস্থও তদ্রপই; উহার দ্বারা আল্লাহ্ তা'আলা গুনাহ্ মুছিয়া দেন। বোখারী শরীফ - হাদিস নং- ৩২৪
জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) বর্ণনা করিয়াছেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ছিলাম। একদা পূর্ণিমার রাতের চাঁদের প্রতি দৃষ্টি করিয়া হযরত (দঃ) উপস্থিত সাহাবীগণকে বলিলেন, তোমরা ( বেহেশতে যাইয়া ) আল্লাহ্ তা'আলাকে এইরুপে স্পষ্টরুপে দেখিতে পাইবে যেমন এই পূর্ণিমার চাঁদকে দেখিতেছ- কোন প্রকার ভীর ও কোলাহল ছাড়াই দেখিতে পাইবে। কিন্তু এই নিয়ামত হাসিলের জন্য সূর্য উদয়ের ও অস্তের পূর্ববর্তী ( ফজর ও আসরের ) নামাজদ্বয়ের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখিতে হইবে। বোখারী শরীফ - হাদিস নং- ৩৪০
আবু হোরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, যে ব্যক্তি সূর্যাস্তের পূর্বে আছরের নামাজের এক রাকাতের সময় পায়, সে পূর্ণ নামাজ পড়িবে এবং যে ব্যক্তি সুরযদয়ের পূর্বে ফজর নামাজের এক রাকাতের সময় পায়, সে পূর্ণ ফজরের নামাজ আদায় করিবে। বোখারী শরীফ - হাদিস নং- ৩৪২
আবু হোরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, নবী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শপথ করিয়া বলেন, আমার এরূপ ইচ্ছা হয় যে, আযানের পর কাহাকেও ইমাম বানাইয়া নামাজ আরম্ভ করিবার আদেশ দেই এবং আমি ঐ সমস্ত লোকদের বাড়ি খুঁজিয়া বাহির করি যাহারা নামাজের জামাতে শরীক হয় নাই এবং কাহারও দ্বারা জ্বালানী কাঠ আনাইয়া ঐ ব্যক্তিগন ঘরে থাকা অবস্থায় তাহাদের বাড়ি-ঘরে আগুন লাগাইয়া দেই। হযরত রাসুল্লাহ ( দঃ ) ক্ষোভ প্রকাশ করিয়া বলেন, খোদার কসম বহু লোক এখনও আছে যে, সামান্য কিছু শীর্নী পাওয়ার আশা থাকিলে তাহারা রাত্রিকালে ইশার সময়ও মস্জিদে আসিতে কণ্ঠিত হয় না। ( কিন্তু জামাতের প্রতি ততটুকু আকৃষ্টও হয় না। বোখারী শরীফ - হাদিস নং- ৩৯১
আব্দুল্লাহ ইবনে (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, জামাতের নামাজ একাকী নামাজ অপেক্ষা সাতাইশ গুন বেশি সওয়াব রাখে। বোখারী শরীফ - হাদিস নং- ৩৯২
আবু হোরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন,ঘরে বা দোকানে নামাজ পড়া হইতে ( মসজিদের ) জামাতে নামাজ পড়া (অতিরিক্ত) পঁচিশ গুন বেশি সওয়াবের পাত্র। কারন যখন কোন ব্যক্তি উত্তমরূপে ওজু করিয়া অন্য কোন উদ্দেশ্য নয়, একমাত্র নামাজন উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে চলিতে থাকে তখন তাহার প্রত্যেকটি পদক্ষেপে এক একটি গুনাহ্ মাফ হইয়া এবং এক একটি মর্তবা বাড়ান হয়। তারপর সে যখন নামাজ পড়ে, ( এমন কি নামাজান্ত যাবত নামাজ স্থানে বসিয়া থাকে ) ফেরেশতাগন তাহার জন্য দোয়া করিতে থাকেন - হে খদা তাহার গুনাহ্ মাফ কর, হে খোদা - তাহার উপর রহ্মত নাযিল কর - এবং সে ব্যক্তি নামাজের জন্য যত সময় অপেক্ষায় থাকে - একমাত্র নামাজই তাকে বাড়ি চলিয়া আসা হইতে বাধা দিয়া রাখিয়াছে, তাহার জন্য ঐ সম্পূর্ণ সময় নামাজের মধ্যে গণ্য হয়। বোখারী শরীফ - হাদিস নং- ৩৯৩
আবু হোরায়রা (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, যে ব্যক্তি রুকু বা সিজ্দা হইতে ইমামের পূর্বে মাথা উঠায়, সে কি ভয় করে না যে, আল্লাহ্ তা'আলা তাহার মাথা বা তাহার আকৃতি গাধার ন্যায় করিয়া দিতে পারেন ? বোখারী শরীফ - হাদিস নং-৪১৩
নিশ্চয়ই তোমাদের কেউ যখন নামায আদায় করে তখন সে তার প্রতিপালকের সাথে (মুনাজাত করে) নির্জনে কথা বলে। নামায বান্দা ও তার প্রতিপালকের মহব্বত এবং তাঁর দেওয়া অনুকম্পার কৃতজ্ঞতা প্রকাশের প্রতীক। নামায আল্লাহর নিকট অতি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার প্রমাণসমূহের একটি এই যে, নামায হল প্রথম ইবাদত যা ফরয হিসেবে পালনের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং মেরাজের রাতে, আকাশে, মুসলিম জাতির উপর তা ফরয করা হয়েছে। তা ছাড়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে, ‘কোন আমল উত্তম’ জিজ্ঞাসা করা হলে তার প্রত্যুত্তরে তিনি বলেছেন: “সময় মত নামায আদায় করা”। (বুখারী ও মুসলিম)।
সম্পাদকঃ মাহবুবা আক্তার। অফিসঃ ৭৫ ই-ব্রডওয়ে,নিউইয়র্ক এনওয়াই ১০০০২।ফোন:+৮৮০১৭১২৯০৩৪০১ ই- মেইলঃ dailyhaquekotha@gmail.com
প্রকাশিত সংবাদপত্রের অংশ