প্রতিনিধি ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৫:২৪:৩৭
১০০ বছর আগে স্প্যানিশ ফ্লুর ভয়াবহতা দেখেছে বিশ্ব। সম্প্রতি করোনা নামের এক ভাইরাস আবির্ভূত হয় মহামারি হিসেবে। প্রাণ গেছে প্রায় ৭০ লাখ। এবার নতুন আরেক ভাইরাসের ব্যাপারে আগেই সতর্ক করলেন যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, নতুন এই রোগের নাম এক্স। এটি কোনো ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাসের কারণে হতে পারে।
এ নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল। তাতে নেওয়া হয়েছে যুক্তরাজ্যের ভ্যাকসিন টাস্কফোর্সের সাবেক প্রধান কেট বিংহামের সাক্ষাৎকার। এতে তিনি বলেন, করোনা মহামারির চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করবে নতুন এই রোগ।
কেট বিংহাম বলেন, ‘ব্যাপারটি এইভাবে বলা যেতে পারে: ১৯১৮-১৯ সালের ফ্লুতে বিশ্বব্যাপী অন্তত ৫ কোটি মানুষ মারা যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যত লোক মারা যান, এই সংখ্যা তার দ্বিগুণ। নতুন কোনো রোগে এমন সংখ্যক মৃত্যুই দেখা যেতে পারে বিশ্বে। এই রোগ এরই মধ্যে দেখা দিয়েও থাকতে পারে।’
এই রোগ থেকে বাঁচতে এখনই বিশ্ববাসীকে প্রস্তুতি নিতে হবে বলে মনে করেন ব্রিটিশ এই নারী গবেষক। কেট বিংহাম বলেন, ‘এবার আর টিকা নিয়ে সময় লাগালে হবে না। গণটিকা কার্যক্রম চালাতে হবে দ্রুত।’
পৃথিবীতে এখনো অনেক ভাইরাস রয়েছে। বিজ্ঞানীরা ২৫টি ভাইরাস ‘পরিবার’ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এর প্রতিটিতে আছে বিভিন্ন ধরনের হাজার হাজার ভাইরাস। এসব ভাইরাস এক প্রজাতি থেকে অন্য প্রজাতিতে যেতে পারে। ফলে যেকোনো সময় যেকোনো ভাইরাস থেকে মহামারি সৃষ্টি হতে পারে।
‘করোনায় আমরা ভাগ্যবান ছিলাম’ বলে মন্তব্য করেন কেট বিংহাম। তবে এক্স রোগ যদি ইবোলা ভাইরাসের মতো হয়, তাহলে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ। তিনি বলেন, ‘ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মৃত্যুর হার ৬৭ শতাংশ। এমন মহামারি এলে মানুষ মারা যাবে দেদারসে।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, মহামারি বেড়ে যাওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করেন ব্রিটিশ এই নারী গবেষক। তিনি বলেন, ‘আধুনিক বিশ্বে আমরা যে পদ্ধতিতে বসবাস করছে, এটার কারণেই মূল্য দিতে হচ্ছে। প্রথম কথা হচ্ছে, বিশ্বায়ন। আরেকটি কারণ গাদা গাদা মানুষ শহরে বসবাস করছে। থাকতে হচ্ছে কাছাকাছি। একে অন্যের সংস্পর্শে আসছে।’
বনায়ন নির্মূলকরণ ও কৃষিকাজে আধুনিকায়নের কারণে পরিবেশের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। এতে বাস্তুতন্ত্র যেমন ভেঙে গেছে, তেমনই শুরু হয়েছে বিপর্যয়। এতেই হচ্ছে মহামারি।
এর আগে গত মে মাসে নিজেদের ওয়েবসাইটে এক্স রোগের তথ্য দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এতে বলা হয়, ‘আরও একটি মহামারির মুখোমুখি হতে যাচ্ছি আমরা। এ নিয়ে আমাদের তেমন জানা নেই।’