রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করেছেন : মির্জা ফখরুল

  প্রতিনিধি ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ২:৩১:৫৫

শেয়ার করুন

 

 

শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আজকে ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে শেখ হাসিনা কিছু কথা বলেছেন। সেখানে তিনি (শেখ হাসিনা) সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করেছেন।

 

যুক্তরাষ্ট্রের ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের জবাবে শনিবার বিকেলে এক সভায় বিএনপি মহাসচিব এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

মতিঝিলে আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের সামনে সড়কে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের যৌথ উদ্যোগে ‘দ্রব্যমূল্য, মজুরি কমিশন, জাতীয় বেতন স্কেল, ন্যূনতম মজুরি, শ্রমিক পরিস্থিতি ও সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে একটি কনভেনশন হয়। কনভেনশনে ২০ টি সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেখানেই এ প্রসঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির মামলা নেই। যে টাকা তারা বলে ২ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা সেই টাকা এখন ৮ কোটির ওপরে চলে গেছে… ব্যাংকে জমা আছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়া যেন রাজনীতি করতে না পারেন তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে।

এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার খারাপ অবস্থার জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার তাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রেখে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

 

৪৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতারের ঘটনা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার একটা ভয়াবহ দানবের সরকার, লুটেরা সরকার। এরা সম্পদ বিদেশে পাচার করছে। আর আমার দেশে মানুষ অসহায় ও অভুক্ত থাকছে। এটাকে রাষ্ট্র বলা যায় না, এ দেশ আওয়ামী লীগের নির্যাতনকারী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলেছি- এই রাষ্ট্র পরিবর্তন করতে হবে, কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। সমস্ত রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একদফার আন্দোলন করছি … গণতন্ত্র হরণকারী, মানুষ হত্যাকারী এই শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং জনগণের হাতে ক্ষমতা তু্লে দিতে হবে।’

শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই শ্রমিক শ্রেণিই অতীতে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। আমি বিশ্বাস করি এবারও শ্রমিকরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। ইনশাল্লাহ আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। এই সরকারকে পদত্যাগ করতে সক্ষম হব, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে সক্ষম হব।’

জেএসডির সভাপতি আ.স.ম. আবদুর রব বলেন, ‘অনেকে আল্টিমেটাম দিচ্ছে যে- আমাদেরকে রাস্তায় নামতে দেবেন না। আমরা কিন্তু এখনও আল্টিমেটাম দেয়নি। যখন দেব তখন পরিস্থিতি কী হবে জানি না। তবে, আপনারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। জনগণ ধরলে কেউ রক্ষা পাবেন না।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আপনারা ভালো আছেন? জানি ভালো নাই। আপনারা যেন ভালো থাকতে পারেন সেজন্য আজকের এই কনভেনশন।’

তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণের পেটে ভাত নাই। আর আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীর ছেলের বাড়ি ভার্জিনিয়াতে। ৩০ একর জমি নিয়ে গলফ মাঠ দিয়ে সেই বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। বুঝেন এই লুটেরা সরকারের নমুনা।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘এই সরকার ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে। এটা আর মেনে নেওয়া হবে না। রাজপথের আন্দোলন জোরদার করে এদের পতন ঘটাতে হবে।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বায়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘লুটেরা নয়, শ্রমিক-কর্মচারী-মেহনতি মানুষের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে শ্রমিক ভাইয়েরা ঐক্যবদ্ধ হোন। এই কনভেনশনের উদ্দেশ্যে হচ্ছে সমগ্র শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ করে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে এই ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন ঘটানো। আসুন সেই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাই।’

শ্রমিক-কর্মচারী কনভেনশন আয়োজক কমিটির সমন্বায়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার ও মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় কনভেনশনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের ফয়জুল হাকিম লালা, জাতীয় শ্রমিক জোটের মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের আশরাফ আলী আকন্দ, শ্রমিক ফেডারেশনের শাহ মো. আবু জাফর, বিএনপির মজিবুর রহমান সারোয়ার, আবদুস সালাম আজাদ, হুমায়ুন কবির খান, ফিরোজ-উজ জামান মোল্লা, আমিনুল হক, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, সুমন ভুঁইয়া, শাহ আলম রাজা, সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের এএম ফয়েজ হোসেন বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া শ্রমিক ফেডারেশন, সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ, চতুর্থ শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতি, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোট, শ্রমিক অধিকার পরিষদ, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতি, বহুমুখি শ্রমজীবী ও হকার সমিতি, শ্রমিক আন্দোলন, শ্রমিক কল্যাণ মজলিস, জাতীয় শ্রমিক পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার শ্রমিক আন্দোলন, ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিক্সা ও মিশুক চালক ইউনিয়ন, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন, প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিষদ, শ্রমজীবী পরিষদ, ভাসানী শ্রমিক পরিষদ, প্রভৃতি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।

 


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content