প্রতিনিধি ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ১১:১৫:৪৯
রাজধানীতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো গণমিছিল কর্মসূচির বিপরীতে গতকাল শান্তি ও উন্নয়নের সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ওই সমাবেশের আয়োজন করে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে বিকাল ৩টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের সামনে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। একই সময় মোহাম্মদপুর টাউন হল এলাকায় মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। দুটি সমাবেশে নগরের প্রতিটি থানা-ওয়ার্ড ও ইউনিটের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে যোগ দেন।
দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, এতদিন বিএনপি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দিকে তাকিয়ে ছিল। আওয়ামী লীগকে হটিয়ে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসাবে। কী দেখলেন আজকে? বাইডেন সাহেব নিজেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেলফি তুললেন। এই দৃশ্য দেখে বিএনপি’র এখন কি হবে? এখন তাদের কোন যাত্রা? পতনযাত্রা না, বিএনপি’র পশ্চাৎযাত্রা শুরু হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি’র যে গণমিছিল, সেটা দেখে মনে হচ্ছে গণমিছিলে আর জনগণ আসবে না, জনগণ নেই।
তাদের নেতাকর্মীরা আর আমেরিকার দিকে তাকাবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি একটি দল, তারা সারা বাংলাদেশে মিথ্যার মহামারি ছড়াচ্ছে। মিথ্যার মহামারি এখন বিএনপি’র অবদানে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। তাদের গ্রামের একজন কর্মীও মিথ্যা কথা বলা শিখে গেছে। মির্জা ফখরুল সাহেব সিঙ্গাপুরে গিয়ে বৈঠক করে দেশে এসে একদফা আন্দোলন দিলেন, একদফা আন্দোলন ভুয়া।
তিনি বলেন, বিএনপি’র মিছিল আন্দোলনে জনগণ নেই, আমেরিকাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বিএনপি’র আন্দোলন সব ভুয়া, তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে কতো ধানে কতো চাল।
বিদেশিদের আগমন আওয়ামী লীগের জন্য সবুজ সংকেত বলেও জানান দলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নীতি অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতেই পছন্দ করে।
বিএনপি উপরে উপরে আন্দোলন করবে এবং তলে তলে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বাচন না করলে তারেক রহমান নির্বাচন মনোনয়নের বাণিজ্য কীভাবে করবে? বিএনপি’র বিরুদ্ধে খেলা হবে, ফাউল করলে হলুদ কার্ড লাল কার্ড দেখানো হবে। বিএনপি দিনের আলোতেও রাতের অন্ধকার দেখে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রমুখ।
এদিকে বিএনপি’র আন্দোলনের হাট ভেঙে গেছে, মির্জা ফখরুলদের দম ফুরিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন,তারা নানা সময় নানা লোকের ওপর ভর করে। না জানি বিএনপি কখন কবিরাজদের দ্বারস্থ হয়। সেটার জন্য আমি অপেক্ষা করছি। মোহাম্মদপুরের টাউন হল এলাকায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ড. ইউনূসের ওপর ভর করেছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, নোবেল পেলে কেউ আইনের আওতায় আসবেন না, এমন কোনো নজির পৃথিবীর কোথাও নেই। তিনি শ্রমিকদের পাওনা দেননি। সে কারণে তিনি আইনের আওতায় আসবেন। পৃথিবীর সব দেশে শ্রমিকদের জন্য আইন রয়েছে, আমাদের দেশেও আছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার কথা বলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তাহলে বুঝতে পারবেন বাংলাদেশ কীভাবে বদলে গেছে। এগুলো দেখে পাকিস্তানের গা জ্বলে। তাদের দোসর বিএনপি’র গাত্রদাহ হচ্ছে। কারণ, শেখ হাসিনার উন্নয়ন দেখে বিএনপি বুঝে গেছে তারা জনগণের কাছে কি মুখে ভোট চাইবে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। আগামী নির্বাচনে মানুষ ভোট দিয়ে চতুর্থবারের মতো শেখ হাসিনাকে আবারো বিজয়ী করবে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, দেশে অপপ্রচার চালাবেন না। আসুন, নির্বাচনে আসুন। আর ষড়যন্ত্র করে লাভ নেই। কারণ, শেখ হাসিনা শ্রমিকের মজুরি এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যে, রিকশাচালক ভাইয়েরা দুপুর দুইটা পর্যন্ত রিকশা চালিয়ে এক হাজার, ১২শ’, ১৫শ’ টাকা আয় করেন। অর্ধেক দিনের উপার্জন দিয়ে তারা ২০ কেজি চাল কিনতে পারেন। হাছান মাহমুদ বলেন, ফখরুল সাহেব বললেন, সরকার নাকি তাকে গ্রেপ্তার করবে। কিন্তু যদি কেউ অপরাধ না করে, তাহলে কেন সে গ্রেপ্তার হওয়ার কথা বলবে। আসলে তার মনে পুলিশ পুলিশ। নিশ্চয়ই তিনি কোনো যড়যন্ত্র বা অপরাধের সঙ্গে জড়িত।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য সাদেক খান, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।