জাতীয়

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর ক্ষোভ প্রকাশ

  প্রতিনিধি ১৪ অক্টোবর ২০২৩ , ১:৪৩:৫৭

শেয়ার করুন

 

 

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সিটি কর্পোরেশন (চসিক), উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উন্নয়ন কার্যক্রম সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এসময় তিনি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চান।

এলজিআরডি মন্ত্রীর প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএর প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে খাস খনন ও সম্প্রসারণে প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে। এক বছরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে। প্রবর্তক মোড় থেকে চাক্তাই পর্যন্ত একটি খাল খননের ক্ষেত্রে ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতা রয়েছে। বাকিগুলোতে যেকোনোভাবে পানি চলাচলের ব্যবস্থা করা যাবে। তবে আমরা যেসব খাল খনন করি, সেগুলো মাটি এবং বর্জ্য দ্বারা ভরাট হয়ে যাচ্ছে। পুনরায় এগুলো খননের জন্য বরাদ্দ নেই। একারণে খননকৃত খালগুলো সিটি কর্পোরেশনকে বুঝে নিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।

এরপর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, সিডিএর অধীনে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী শুধুমাত্র গাইডওয়াল নির্মাণ করে দায়িত্ব শেষ করছে। তারা খাল থেকে কোনো মাটি সরিয়ে নিচ্ছে না। একারণে এগুলো বুঝে নেওয়া চসিকের পক্ষে সম্ভব না। মাটি সরিয়ে নেওয়ার বাজেট চসিকের নেই।

এসময় এলজিআরডি মন্ত্রী চসিক, সিডিএ এবং সেনবাহিনীকে বসে বিষয়টির সুরাহা করতে নির্দেশ দেন।

এরপর মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামের ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০টি বাদ দিলে সবগুলো গরিব এলাকা। মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রামে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করেনি। আয়বর্ধক প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন। তখন মন্ত্রণালয়ের তেমন বাধ্যবাধকতা ছিল না। এখন সেরকম নেওয়া যায় না। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিতে হয়। চসিক ৮১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৫৬টি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৪টা মাতৃসদন হাসপাতাল এবং ৩৬৪ ফোরকানিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা করে। চসিকের ১৬০ জন ডাক্তার রয়েছেন। এগুলো সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব থেকে পরিচালিত হয়। একারণে চট্টগ্রামের সঙ্গে অন্য সিটির তুলনা হবে না। আয়বর্ধক প্রকল্প হাতে নিতে দিলে মন্ত্রণালয়ের দিকে আর তাকিয়ে থাকতে হবে না।

জবাবে মন্ত্রী তাজুল বলেন, মন্ত্রণালয় তো সবকিছুতে বাঁধা দিচ্ছে না। যৌক্তিক আয়বর্ধক প্রকল্প হাতে নেওয়া হলে অনুমোদন দেওয়া হবে। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুনগত মান কমে গেছে।

এরপর মন্ত্রী চসিকের রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে জানতে চান। সভায় উপস্থিত চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, গত অর্থবছরে চসিক ৩৫৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। এর বাইরে প্রকৌশল বিভাগের কিছু রাজস্ব আহরণ করে। এ বছর ৪২৪ কোটির রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ মাসে প্রায় ১০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।

সভায় উপস্থিত চসিকে কাউন্সিলর হাসান মাহমুদ হাসনী চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের আয়ের একটি অংশ চসিককে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বন্দর প্রতিবছর ৩০-৫০ হাজার কোটি টাকা আয় করে। এখান থেকে এক হাজার কোটি টাকা চট্টগ্রামে সিটি কর্পোরেশনকে দেওয়া হোক। তাহলে চট্টগ্রামের উন্নয়নে কোনো সমস্যা হবে না।

এছাড়া ভবন নির্মাণে সিডিএর অনুমতির ক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়ে কাউন্সিলর হাসনী বলেন, সিডিএ থেকে অনুমতি নিয়ে অনেকে যথাযথভাবে ভবন নির্মাণ করছেন না। তারা ৬ ফুট রাস্তার কথা বলে অনুমতি নিয়ে ৪ ফুট রেখে ভবন নির্মাণ করে ফেলছে। আবার অনুমতি নিতে বাধ্যবাধকতা নেই বলে বিষয়টি ভবন মালিকেরা কাউন্সিলরদের জবাব দিচ্ছেন না। পরে কোনো সমস্যা হলে জনগণ সিটি কর্পোরেশনকে গালমন্দ করেন।

কাউন্সিলরের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, আয়ের অংশ পেতে আপনারা বন্দর চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করেন। প্রয়োজনে আপনার কাউন্সিলররা গিয়ে বিস্তারিত বন্দর চেয়ারম্যানকে অবহিত করেন। আর সিডিএর ভবন নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে আপনারা নিজেরা বসেন।

চসিকের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন— শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা।

 


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content