প্রতিনিধি ৩১ অক্টোবর ২০২৩ , ১০:৩০:০৮
নিজেদের বৈশ্বিক মানচিত্রের অনলাইন সংস্করণ থেকে রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের নাম মুছে দিয়েছে চীন। শীর্ষ দুই চীনা কোম্পানি বাইদু এবং আলিবাবা সোমবার মানচিত্রের যে অনলাইন সংস্করণে প্রকাশ করেছে, তাতে পাওয়া যাচ্ছে না ইসরায়েলের নাম।
প্রথম এই ব্যাপারটি খেয়াল করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ‘এমনকি লুক্সেমবার্গের মতো ক্ষুদ্র দেশের নামও (চীনা মানচিত্রের অনলাইন সংস্করণে) দেখা যাচ্ছে, কিন্তু ইসরায়েলের নাম নেই।’
প্রসঙ্গত, লুক্সেমবার্গের আয়তন মাত্র ২ হাজার ৫৮৬ দশমিক ৪ কিলোমিটার এবং ইসরায়েলের আয়তন ২২ হাজার ৭২ কিলোমিটার।
চীনের অনেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীও ব্যাপারটি লক্ষ্য করেছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রতিবেদন প্রকাশ করার পরও মানচিত্রের অনলাইন সংস্করণনটি একই রকম আছে। চীনের ভেতরেও এ ব্যাপারটি নিয়েঢ আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।
বৈশ্বিক মানচিত্রের অনলাইন সংস্করণ থেকে ইসরায়েলকে বাদ দিতে চীনের সরকারি পর্যায় থেকে কোনো নির্দেশ এসেছে কি না— জানতে চাওয়া হয়েছিল বাইদু এবং আলিবাবা কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
গত ৭ অক্টোবর ভোররাতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় গাজার নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। সেদিন সীমান্তের বেড়া বুলডোজার দিয়ে ভেঙ্গে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করেন শত শত প্রশিক্ষিত হামাস যোদ্ধা।
ইসরায়েলে ঢুকে প্রথমেই কয়েক শ বেসামরিক লোকজনকে নির্বিচারে হত্যা করেন তারা, সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ২১২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে ধরে নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা।
এ ঘটনায় সেদিন থেকেই গাজা উপত্যকায় বিমান অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। সেই সঙ্গে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় গাজার বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর অভিযানে ৭ অক্টোবরের পর এ পর্যন্ত উপত্যকায় নিহত হয়েছেন ৮ হাজারেরও বেশি মানুষ এবং এই নিহতদের ৪০ শতাংশ শিশু এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক। অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জনের কিছু বেশি ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক।
এদিকে এই সংঘাতের শুরু থেকেই দুই পক্ষকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছে চীন। দেশটির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত ঝাই জুন সম্প্রতি বলেছেন,‘চীন চায় মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত বন্ধ হোক এবং উভয়পক্ষ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করুক। এ লক্ষ্যে চীন মিসরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ও সমন্বয় রক্ষা করে চলেছে।’
‘এবং আমরা মনে করি, যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনিদের মানবিক সহায়তা প্রদানের ব্যাপারটিকে এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’