ডেঙ্গু মোকাবিলায় সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে ঘর-বাড়ি পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি সবাইকে মশারি টানিয়ে ঘুমানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এখানে শুধু এমপি সাহেব ও ডাক্তার সাহেবদের দাঁড় করিয়ে দিলে হবে না। এখানে নিজেদের সচেতন হতে হবে। নিজের ঘর-বাড়ি পরিষ্কার রাখা, মশা কোথায় জন্মাচ্ছে সেটা দেখতে হবে। মশার প্রজনন ক্ষেত্র যেন তৈরি না হতে পারে এ ব্যাপারে সবার দায়িত্ব থাকতে হবে। সরকারের পক্ষে থেকে এ বিষয়ে প্রচেষ্টা আছে এবং প্রচেষ্টা চলবে। এ ব্যাপারে গবেষণাও চলছে, ইতোমধ্যে শুনলাম জাপান না কি টিকা আবিষ্কার করেছে। এগুলো তো আসলে সময় সাপেক্ষ।
তিনি বলেন, আমি দেশবাসীকে বলব সবাই নিজের ঘর-বাড়ি পরিষ্কার রাখুন এবং মশারি টানিয়ে ঘুমান। এখন তো ফ্যাশন হয়ে গেছে... কেউ মশারি টানায় না। অথচ মশারি টানানো একান্ত দরকার। ওষুধ দিতে দিতে মশাও চালাক হয়ে যায়,সেও ওষুধ সহ্য করে ফেলে। সেজন্য সবারই মশারি টানানো উচিৎ। এছাড়া ঘর-বাড়ি ও ছাদসহ আশপাশের এলাকায় যেন পানি জমে না থাকে, সে বিষয়ে সবাই যদি এলাকাভিত্তিক উদ্যোগ নেয়, তাহলে কিন্তু ডেঙ্গুর প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের যেটুকু করার আমরা সেটি সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া, চিকিৎসার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া... যা যা দরকার সেটি আমরা করছি।
তিনি আরও বলেন, যতই কমিটি করুন আর যাই করুন, মানুষের সচেতনতাটা যতক্ষণ না আসবে, নিজের ঘর-বাড়ি যতক্ষণ পর্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না রাখবে, নিজেকে সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা না রাখবে... ততক্ষণ পর্যন্ত এটা খুব বেশি যে করা যাবে তা নয়। কলকাতার অভিজ্ঞতা আমরা নেব, তারা কীভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করল এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
বঙ্গবন্ধুকন্য বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যথেষ্ট সচেতন। বারবার টেলিভিশনসহ সব জায়গায় বলা হচ্ছে, সারাক্ষণ কিন্তু আমরা প্রচার করে যাচ্ছি। এখন মানুষ কতটুকু সচেতন হয় সেটি হলো কথা। কোনো একটা জিনিস পরে থাকলে সেখানে গিয়ে মশা জমা হয়, পানি থাকলেও মশা জমা হয়। আসলে জাতিগতভাবে আমাদের একটু নিজেদের সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার। এটা খুবই দুঃখজনক এভাবে ডেঙ্গুতে মানুষ মারা যাচ্ছে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার সেটি আমরা করছি।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিউইয়র্কে অবস্থানকালে ১৭-২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশন এবং এর ফাঁকে অন্যান্য উচ্চ-পর্যায়ের ও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।
ওয়াশিংটন ডিসিতে ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। পাশাপাশি ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন।
৩০ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি বিমানে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এরপর লন্ডনে গিয়ে বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে দেওয়া এক সংবর্ধনায় যোগ দেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা বিষয়ে গঠিত এপিপিজি’র সভাপতি এবং যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগ ও ক্ষুদ্র ব্যবসা বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী রুশনারা আলী এমপির নেতৃত্বে অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের (এপিপিজি) এক প্রতিনিধিদলসহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্টজন তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
দুই দেশে মোট ১৬ দিনের সফর শেষে বুধবার দেশে ফিরেছেন শেখ হাসিনা।
সম্পাদকঃ মাহবুবা আক্তার। অফিসঃ ৭৫ ই-ব্রডওয়ে,নিউইয়র্ক এনওয়াই ১০০০২।ফোন:+৮৮০১৭১২৯০৩৪০১ ই- মেইলঃ dailyhaquekotha@gmail.com
প্রকাশিত সংবাদপত্রের অংশ