ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল পারমাণবিক বোমা ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন ইসরায়েলি এক মন্ত্রী। এর জেরে বেশ তোপের মুখে পড়েছিলেন তিনি। এবার এই ঘটনায় তদন্ত দাবি করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।
তিনি বলেছেন, পারমাণবিক অস্ত্র, যার অস্তিত্ব ইসরায়েলি মন্ত্রীরা স্বীকার করেছেন, সেগুলোর বিষয়ে তদন্ত করা উচিত। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় তুরস্ক কাজ করতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
শনিবার (১১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে জরুরিভাবে আয়োজিত আরব-ইসলামিক যৌথ শীর্ষ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।
সেখানে তিনি বলেন, ‘পরমাণু অস্ত্র থাকার বিষয়টি ইসরায়েলি মন্ত্রীরা স্বীকার করে নিয়েছেন এবং এই বিষয়টির তদন্ত হওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার নিয়ন্ত্রণের বাইরে যদি পারমাণবিক বোমা পাচার হয়ে থাকে, তাহলে সেগুলো অবশ্যই প্রকাশ করতে হবে।’
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান আরও বলেন, ইসরায়েল ‘পশ্চিমা দেশগুলোর নষ্ট হয়ে যাওয়া সন্তানের’ মতো কাজ করে থাকে এবং ইসরায়েলি প্রশাসন যে ক্ষতি করেছে তার ক্ষতিপূরণ তারা দিতে বাধ্য।
এই অঞ্চলে যুদ্ধবিরতির আহ্বান এবং স্থায়ী শান্তির বিষয়ে এরদোয়ান বলেছেন: ‘শান্তি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তা রক্ষার জন্য আমরা গ্যারান্টার হিসাবে কাজ করাসহ প্রয়োজনীয় সকল প্রচেষ্টা চালাতে প্রস্তুত।’
তুরস্কের এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘জেরুজালেম আমাদের রেড লাইন। শান্তির শহর হিসেবে পরিচিত জেরুজালেম এবং সমস্ত ফিলিস্তিনি ভূমি তাদের পুরোনো সময়ে ফিরে আসুক এটাই আমাদের কামনা।’
প্রসঙ্গত, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল পারমাণবিক বোমা ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন ইসরায়েলি এক মন্ত্রী। এই মন্তব্যের পর ইসরায়েলের চরম ডানপন্থি রাজনৈতিক দল ওৎজমা ইহুদি পার্টির ওই মন্ত্রীকে মন্ত্রিসভার সব বৈঠক থেকে বরখাস্তের ঘোষণা দেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
‘গাজায় পারমাণবিক বোমা ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে’
চলতি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে স্থানীয় বেতারমাধ্যম রেডিও কোল বারামাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গাজায় পারমাণবিক বোমা ফেলার বিকল্প চিন্তা ইসরায়েলের রয়েছে বলে মন্তব্য করেন নেতানিয়াহুর সরকারের হেরিটেজ মন্ত্রী আমিচাই ইলিয়াহু। সাক্ষাৎকারে ইলিয়াহু বলেন, তিনি গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের ‘আয়ারল্যান্ড বা মরুভূমিতে’ পাঠিয়ে দিয়ে সেখানে ইসরায়েলি বসতি ফিরিয়ে আনার পক্ষে।
অবশ্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ তার এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া ইসরায়েলের এই বিমান হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।
অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি শিশু। এছাড়া নিহতদের মধ্যে নারীর সংখ্যাও তিন হাজারের বেশি।
সম্পাদকঃ মাহবুবা আক্তার। অফিসঃ ৭৫ ই-ব্রডওয়ে,নিউইয়র্ক এনওয়াই ১০০০২।ফোন:+৮৮০১৭১২৯০৩৪০১ ই- মেইলঃ dailyhaquekotha@gmail.com
প্রকাশিত সংবাদপত্রের অংশ