প্রতিনিধি ২৬ নভেম্বর ২০২৩ , ১১:৪৪:০৯
তামিল নায়িকারা এত বেশি সুন্দরী হয় কেন?
তামিল নায়িকা বেশী সুন্দরী নয়। তাদেরকে আপনার কাছে আকর্ষনীয় করে উপস্থাপন করা হয়
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের নিজস্ব চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো, বোম্বের ইন্ডাস্ট্রি ; বলিউড। তারা দেশে বিদেশে জনপ্রিয়তায় শীর্ষে। অথচ, আপনি যদি সিনেমার টেকনিক্যাল বিষয়গুলো বিবেচনা করেন, তাহলে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বাঙালী ও তামিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। আপনারা সবাই জানেন, শুধুমাত্র বাঙ্গালী আর তামিলরাই অস্কার পুরস্কার পেয়েছে। এমনকি, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বিশেষ করে, টেকনিক্যাল পুরস্কার, তামিল ও বাঙ্গালীরাই পায়।
নারীকে আকর্ষনীয় করে উপস্থাপন করার পেছনে, নির্মাতাদের তিনটি কৌশল/পদ্ধতি অছে।
নায়িকা নির্বাচন – ফটোগ্রাফী – সঠিকভাবে শরীর প্রদর্শন
এই তিনটি বিষয়েই তামিলরা খুব দক্ষ। এজন্যই তারা নারীকে আকর্ষনীয়ভাবে উপস্থাপন করতে পারে। ওই তিনটি টেকনিক্যাল বিষয় বোঝার আগে, ওই “আকর্ষনীয়” কথাটিকে ভালোভাবে বুঝতে হবে। সুন্দর ও আকর্ষনীয়, এই দুটি সম্পুর্ন ভিন্ন জিনিস। গাছে সুন্দর ফুল শোভা পায় ; আকর্ষনীয় ফল ঝুলে থাকে। আকর্ষণীয় হলো সেই জিনিস, যেটা নিতে বা পেতে ইচ্ছা করে (সুন্দর না হলেও চলবে)। মোবাইলে ১০০ টাকা রিচার্জ করলে, ১০০ টাকা বোনাস। এটা একটি আকর্ষনীয় অফার (সুন্দর নয়)। আকর্ষনীয় হলো সেই জিনিস, যেটা নিতে বা পেতে ইচ্ছা করে। এবার দেখুন – ওই তিনটি টেকনিক্যাল বিষয়, কিভাবে নায়িকাকে আকর্ষনীয় করে তুলতে পারে।
নায়িকা নির্বাচনঃ হলিউডে অনেক আগে থেকেই বিষয়টার প্রচলন আছে। ভারতে তামিলরাই এটার সর্বোচ্চ ব্যাবহার করে। বিষয়টা হলো – Girl next door (পাশের বাড়ির মেয়ে)। ভারতবর্ষের মানুষের কাছে নায়িকা জিনিসটা একটি আসাধারন বিষয়। নায়িকা কিছুটা পরী বা রাজকন্যার মতন ; ধরাছোঁয়ার অনেক বাইরে। তারা অসাধারণ সুন্দরী। নায়িকাকে দেখে মনে হয়, তাদের দেহ মোমের তৈরি। এভাবেই, সাধারন মানুষের কাছে, নায়িকাকে অসম্ভব কল্পনা মনে হয়। কিন্তু, এই Girl next door পদ্ধতিটা হল – নায়িকা চরিত্রে সাধারন কোন নারীকে দেখায়। তাকে দেখলেই মনে হয়, চেষ্টা করলে আমি হয়তো তার কাছে পৌছাতে পারবো। এভাবেই সেই নায়িকাকে পাওয়ার একটা আগ্রহ তৈরি হয়। সেই আগ্রহ বা আকাঙ্ক্ষাটাই আকর্ষন।
তামিল সিনেমাতে ঠিক তেমনই Girl next door টাইপের সাধারন দেখতে মেয়েকে নায়িকা বানায়। যাতে তাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে মনে না হয়। তাকে দেখলে, তাকে পাবার ইচ্ছা জাগে।
ফটোগ্রাফীঃ সিনেমার ভেতরে যে ফটোগ্রাফী থাকতে পারে, এটা অনেকই জানেন না। পুরো ভারতবর্ষে সিনেমার ফটোগ্রাফিতে তামিলরা সেরা। প্রায় প্রতি বছরই, এই বিষয়ে তারা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। মেকআপ, সাজসজ্জা ইত্যাদিকেও ফটোগ্রাফির একটা অংশ ধরতে পারেন।
তামিল সিনেমাতে দক্ষ ফটোগ্রাফির কারনে, নায়িকা অনেক বেশী আকর্ষনীয় হয়ে ওঠে। আকর্ষণীয় অর্থ – তাকে পেতে ইচ্ছা হয়।
সঠিকভাবে শরীর প্রদর্শনঃ এটা সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন বিষয়, এবং এটার জন্য সবচেয়ে বেশী দক্ষতার প্রয়োজন। কখনো কি লক্ষ্য করেছেন – পর্ন সিনেমার একজন নায়িকা, সারা শরীর উন্মুক্ত করে দেখায়। তবুও সেই দৃশ্যটি মানুষ কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভুলে যায়। অথচ, কোন সামাজিক সিনেমার নায়িকার পিঠের সামান্য অংশ, বা কোমরের সামান্য অংশ দেখেই, কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচনা চলে। এমন কেন হয়? সেটার পেছনে ওই একটাই কারন -আকর্ষন। পুরো শরীর না দেখিয়ে, সামান্য কিছু দেখিয়ে আকর্ষন বাড়িয়ে দেয়।
তামিল দক্ষ নির্মাতারা, সেভাবে আকর্ষন বাড়িয়ে দিতে পারে। এজন্যই, একটি সাধারন মেয়েই আপনার কাছে আকর্ষনীয় হয়ে ওঠে।
মুল কথা – তামিল নায়িকারা তেমন সুন্দরী নয়। তারা একবারে সাধারন, পাশের বাড়ির মেয়ের মতন দেখতে। তারা সাধারন দেখতে বলেই, মানুষের মধ্যে তাদেরকে পাবার একটা আকাঙ্ক্ষা জাগে। দক্ষ নির্মাতারা, বিভিন্ন কৌশলে মানুষের সেই আকাঙ্ক্ষা বাড়িয়ে দেয়। এভাবেই সেই নায়িকারা আকর্ষনীয় হয়ে ওঠে। মনে রাখবেন, বিষয়টা হলো আকর্ষন (সৌন্দর্য নয়)।
তথ্য সূত্র -গুগল,ফেসবুক ও তামিল বন্ধু।