হঠাৎই আলোচনায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। ‘যুক্তফ্রন্ট’ নামে রাজনীতিতে নতুন জোটের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান অবশ্য এখানেই থেমে থাকেননি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে থাকা ইবরাহিম ইউটার্ন নিয়ে ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাচনে যাওয়ার। তবে এটাও স্বীকার করেছেন নতুন এই সিদ্ধান্তের জন্য তাকে ‘মীরজাফর’ বলা হতে পারে সেটা তিনি জানেন। তবে আগামী নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে তার আগ্রহের কমতি নেই। তাই ভোটে যাবেন। নতুন জোটে কল্যাণ পার্টি ছাড়াও রয়েছে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (মতিন)।
ইবরাহিমের এই ঘোষণা নিয়ে এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা তৈরি হয়েছে। কেউ তাকে বলছেন, বিশ্বাসঘাতক; কেউ বলছেন, তিনি লোভের ফাঁদে পা দিয়েছেন। গত কিছু দিন বিভিন্ন দলের ভাঙন বা বিএনপির কিছু নেতারা নির্বাচনে অংশ নেয়া নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিলো।
এরই প্রেক্ষিতে ইবরাহিমের বুধবারের ঘোষণা আলোচিত হচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক বিশেষ মুহূর্তে আবির্ভার ঘটেছিল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের। আলোচিত ওয়ান ইলেভেনের পর জরুরি অবস্থার সময় কয়েকটি রাজনৈতিক দল গঠিত হয়। এসব দল কিংস পার্টি হিসেবে পরিচিতি পায়। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ফেরদৌস আহমেদ কোরেশীর নেতৃত্বে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি), বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা প্রশিকার তৎকালীন চেয়ারম্যান কাজী ফারুক আহম্মদের ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা শেখ শওকত হোসেন নীলুর নেতৃত্বে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিমের নেতৃত্বে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি। ‘পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি’ স্লোগান সামনে রেখে দলটির আবির্ভাব হয়। সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এবং সর্বশেষ জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে ১২ দলীয় জোটে ছিলেন।
বিএনপির সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরেই আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন তিনি। গত সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে লড়েছিলেন তিনি। নির্বাচনের পর তিনি ফল প্রত্যাখ্যান করেন এবং পুনরায় নির্বাচন দাবি করেন। সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচন, সমসাময়িক গণতান্ত্রিক বিশ্বের ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় নির্বাচন হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশে বিতর্কিত নির্বাচন অতীতেও হয়েছে, ৩০ ডিসেম্বরও হলো। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ বা নির্বাচনী পর্যবেক্ষকগণ যেসব মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে কোনো একটি দেশের কোনো একটি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বা পার্লামেন্ট নির্বাচনকে বিতর্কিত বলে আখ্যায়িত করে থাকেন, তার বেশির ভাগই আমাদের নির্বাচনে উপস্থিত ছিল। কলঙ্কিত বা বিতর্কিত বা জালিয়াতিপূর্ণ বা প্রতারণাপূর্ণ নির্বাচনের তালিকাগুলোতে বাংলাদেশের একাধিক নির্বাচনের নাম যেমন আছে, তেমনি আরও বহু দেশের বহু নির্বাচনের নাম আছে।
সম্পাদকঃ মাহবুবা আক্তার। অফিসঃ ৭৫ ই-ব্রডওয়ে,নিউইয়র্ক এনওয়াই ১০০০২।ফোন:+৮৮০১৭১২৯০৩৪০১ ই- মেইলঃ dailyhaquekotha@gmail.com
প্রকাশিত সংবাদপত্রের অংশ