প্রতিনিধি ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ , ১১:৫৭:৪৬
গাজায় ইসরায়েলি ‘যুদ্ধাপরাধ’ আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইসরায়েল যদি ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বন্ধ না করে, তবে ভয়াবহ আঞ্চলিক সংঘাত সৃষ্টি হবে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলকে পাশবিকতা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা জোসেপ বোরেলের সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অবিলম্বে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের পাশবিক হামলা বন্ধ এবং গাজায় মানবিক ত্রাণ সররবরাহ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে গাজাবাসীকে বিতাড়নের যেকোনো পরিকল্পনার ব্যাপারে তেল আবিবকে সতর্ক করে দেন।
আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণেই ফিলিস্তিন ইস্যুর সমাধান হচ্ছে না। তিনি বলেন, ইসরায়েলি সেনারা যদি গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে হামলা বন্ধ না করে তাহলে চলমান যুদ্ধ মধ্যপ্রাচের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে।
ফোনালাপে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরের উত্তেজনা অবিলম্বে বন্ধ হবে বলে বোরেল অভিমত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, গাজায় বোমা হামলা করার সময় ইসরায়েল যেন আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে – সেজন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন তেল আবিবকে রাজি করানোর চেষ্টা করছে।
বোরেল ইরানকে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে গঠনমূলক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে যুদ্ধ বা সহিংসতার মাধ্যমে নয় বরং কূটনীতি ও আলাচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। তবে তিনি যুদ্ধ বন্ধ করতে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করবেন কিনা সে সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি।
উল্লেখ্য, গাজা উপত্যকার নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের ওপর প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল পাশবিকতা চালিয়ে গেলেও কোনো পশ্চিমা দেশ বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন পর্যন্ত তেল আবিবকে আগ্রাসন বন্ধ করার আহ্বান পর্যন্ত জানায়নি। গাজায় এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ১৫,২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের শতকরা ৭০ ভাগ নারী ও শিশু।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দী করে নিয়ে গাজা উপত্যকায় ফিরে যায়। সেদিন থেকেই ইসরায়েলের বিমানবাহিনী গাজায় ভয়াবহ রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে যা এখন পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলছে।
ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এবং আমাদের পবিত্র স্থাপনা আল-আকসায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেবে। এগুলোই হামাসের এই অভিযানের কারণ।’