প্রতিনিধি ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ , ১১:৩০:৪০
অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মুরশেদুল কবীরসহ পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তাকে তিন মাসের দেওয়ানি বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (জানুয়ারি) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
আদালতে অগ্রণী ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। কর্মকর্তাদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির, অ্যাডভোকেট শামীম খালেদ, ব্যারিস্টার তানজীবুল আলম। মুন গ্রুপের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও অ্যাডভোকেট নুরুল আমীন।
গত ২৩ ডিসেম্বর আদালতের আদেশ অমান্য করায় অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মো. মুরশেদুল কবীরসহ পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তাকে তিন মাসের দেওয়ানি বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাদের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত।
এ রায় পাওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে তাদেরকে ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। অন্য চার কর্মকর্তা হলেন—অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখার জেনারেল ম্যানেজার মো. ফজলুল করিম, এলপিআরে যাওয়া আরেক জেনারেল ম্যানেজার এ কে এম ফজলুল হক, অগ্রণী ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজার-২ শ্যামল কৃষ্ণ সাহা, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর-১ মিসেস ওয়াহিদা বেগম।
মুন গ্রুপের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নুরুল আমীন বলেন, আদালত অবমাননার কারণে অগ্রণী ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের হাইকোর্ট তিন মাসের দেওয়ানি বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। একইসঙ্গে তাদের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন। বিস্তারিত পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে জানা যাবে। হাইকোর্টের এই দেওয়ানি সাজার রায়ের বিরুদ্ধে গতকাল বুধবার আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। আইনজীবীরা জানান, ২০১৭ সাল পর্যন্ত মুন গ্রুপের কাছে অগ্রণী ব্যাংকের ডিগ্রিমূলে পাওনা ৫৩৯ কোটি টাকা।
২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে পাওনার ২৫ শতাংশ কিস্তিতে পরিশোধের জন্য মুন গ্রুপের কাছে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঋণের ২৫ শতাংশ পরিশোধ না করলে মুন গ্রুপকে খেলাপি তালিকাভুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবিতে পাঠানো হবে। এই ব্যাংকের চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিম্ন আদালতে ঘোষণামূলে ডিগ্রি প্রার্থনা করা হয়। একইসঙ্গে ব্যাংকের চিঠির বিরুদ্ধে আদেশ প্রার্থনা করে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। নিম্ন আদালত এই আদেশ নামঞ্জুর করেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে মুন গ্রুপ হাইকোর্টে বিবিধ আপিল দায়ের করেন। হাইকোর্ট ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর ব্যাংকের চিঠির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। পাশাপাশি রুল দেন।
এদিকে নির্ধারিত সময়ে ঋণের ২৫ শতাংশ কিস্তি পরিশোধ না করায় মুন গ্রুপকে খেলাপি তালিকাভুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি পাঠায় অগ্রণী ব্যাংক। পরে মুন গ্রুপ অগ্রণী ব্যাংকের এমডিসহ চার নির্বাহীর বিরুদ্ধে ভায়োলেশন মোকাদ্দমা দায়ের করেন। মামলার শুনানি শেষে অগ্রণী ব্যাংকের এমডি, ডিএমডিসহ চার নির্বাহী তিন মাসের দেওয়ানি কারাদণ্ড দিয়েছেন। এদের মধ্যে একজন এলপিআরে যাওয়া নির্বাহী কর্মকর্তা রয়েছেন।