প্রতিনিধি ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ , ৪:০৬:২৮
ডিভোর্স হওনের অনেকদিন পর তুমি আমারে কইলা সংসারখানা ভাঙনের বেবাক দ্বায়ভার শুধু আমার। আমারে এমন কলঙ্ক দিছো শুইনা খুশি হইয়্যা যায় আমার প্রথম প্রেমিক। আমি কলঙ্কের দাগ মনে লইয়্যা জনে জনে কানলাম, বনে বনে কানলাম। তবুও কাউরে বুঝাইতে পারলাম না আমি নির্দোষ।
বাপে কইলো আমি বদমেজাজি, মায়ে কইলো আমার ধৈর্য নাই তাই সংসারখানা ভাইঙা গেছে। প্রতিবেশী ফুফু চাচিরা আমার নষ্টা মাইয়া কইয়্যা আমার নামে কলঙ্ক রটাইলো। সমাজের মানুষ আমারে কইলো অপয়া।
তুমি আসলে ঠিকি কইসো বেবাক দোষ আমারই। আমার উচিৎ ছিল তুমি যেই ঠোঁট দিয়া আমারে অকথ্য ভাষায় কাটাকাটি করছো, সেই ঠোঁটেরর কাটাকাটি ভুইলা চুমু খাওয়া। যেই শরীরে লালচে দাগ বইয়্যা আছে তোমার চড়-থাপ্পড়ের, সেগুলা আড়াল কইরা ওই শরীরল রাইত হইলে তোমার সামনে মেইলা ধরা। যেই শরীরে পর’নারীর গন্ধে ভরা-ঘৃণা না কইরা সেই শরীরটারে ঝাপটে ধরা।
মায়ে ঠিকি কইছিল আমি বদমেজাজি। আমার উচিৎ ছিল শান্ত হওয়া। দোষ না কইরাও দোষী বানাইয়া দেওয়া, হাঢ়ভাঙা খাটুনির পরেও অর্কমা কইলে চুপচাপ সবকিছু হজম করা, আমার শান্ত থাকা উচিৎ ছিল।
বাবা ঠিকি কইছে আমার ধৈর্য নাই। আমার উচিৎ ছিলো তুমি রাইত বারোটা বাজে বন্ধুবান্ধব নিয়া আড্ডা দিয়া আসতা তখন টেবিলে ভাতের প্লেট সাজায়া তেমার লাইগা অপেক্ষা করা। লবন কম বা ভাত ঠাণ্ডা অপবাদ দিয়া বউরে বেশ্যা কইয়া গাইল দেওনের পরও ধৈর্য ধরে স্বামীর সেবা যত্ন করা। মায়ের মতো আদরের বদলে শাশুড়ী থেকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শোনার পরও মুখ বুজে সহ্য করা।
একটা ভাঙা পা’ও নিয়া হামাগুড়ি দিয়া বাঁইচা থাকা যায়, কিন্তু ভালোবাসাহীন কোনো সম্পর্ক নিয়া ভালা থাকোন যায় না, সংসার করোন যায় না। ভালোবাসাহীন একটা সম্পর্ক বইয়া বেড়ানো মানে নিজেরে নিজে শ্বাসরোধ কইরা মাইরা ফেলা।
মাইনা নিলাম যাবতীয় ভুল আমারই, স্বীকার করে নিলাম অপরাধ। তোমরা ভালা থাকো, ভালা থাকুক তোমাগো সব ভালা দিন। দুনিয়ার বড়োই অদ্ভুত নিয়ম, বিচ্ছেদের কলঙ্ক শুধু নারীর গায়েই মাখে, পুরুষের গায়ে বিচ্ছেদের কলঙ্ক মাখতে নাই, মাখে নাই কেউ কোনোদিন।
লেখা: আরিফ হুসাইন