প্রতিনিধি ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ , ১০:০০:১৯
বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিকাশে ভারতের প্রভাবে পিছুটানের অভিযোগ অস্বীকার যুক্তরাষ্ট্রের
নির্বাচনকে কোনো ভাবেই অবাধ ও সুষ্ঠু মনে করিনাঃ স্টেট ডিপার্টমেন্ট মুখপাত্র মিলার
বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিকাশে ভারতের প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটেছে – এমন অভিযোগ মানতে নারাজ স্টেট ডিপার্টমেন্টর মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। পাশাপাশি বিগত নির্বাচন কোনো ভাবেই অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে করা একাধিক প্রশ্নের জবাবে এভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
ব্রিফিংয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট করেসপন্ডেন্ট মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, কানাডার নির্বাচনে হস্তক্ষেপের জন্য রাশিয়া এবং চীনের পাশাপশি ভারতের নাম তদন্তে উঠে এসেছে মর্মে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। বাংলাদেশেও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ধরে রাখতে ভারতের হস্তক্ষেপের বিষয়টি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনসম্মুখে বলেছেন, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতোই এবারও তাদের নির্বাচনী বিজয়ে পাশে ছিলো ভারত। সমালোচকরা বলছেন, ভারতের প্রভাবের কারণে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বিকাশের নীতি থেকে পিছু হটেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী ?”
জবাবে মিলার বলেন, “কানাডার তদন্তের বিষয়ে আমার আসলে কিছু বলার নেই। এ বিষয়ে কানাডা তথ্য দিতে পারবে। আমি যে বিষয়ে কথা বলবো সেটা হলো, বাংলাদেশের গণতন্ত্র। এর আগেও এই ইস্যুতে অনেকবার কথা বলেছি। বাংলাদেশে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা যেনো প্রতিষ্ঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র তার পররাষ্ট্রনীতিতে এগুলোকে প্রাধান্য দেয়। বাংলাদেশের জনগণের সমৃদ্ধির জন্য গণতান্ত্রিক নীতিসমূহের যেনো বিকাশ হয় সে উদ্দেশ্যে সরকারের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা অব্যাহত থাকবে।”
অপর এক প্রশ্নে এই প্রতিবেদক জানতে চান, “জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন অনতিবিলম্বে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেবার আহ্বান জানিয়েছে। ৭ জানুয়ারির কারচুপির নির্বাচনে নিজেদের জয় নিশ্চিত করতে ক্ষমতাসীন সরকার বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাসহ
বিরোধীদলের ২৫ হাজার নেতা-কর্মীকে আটক করেছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া খর্ব করার দায়ে কর্তৃত্ববাদী এই সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। কেনোনা নির্বাচনের আগে আপনার ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন।”
জবাবে মিলার বলেন, “আপনি এর আগে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমাদের মূল্যায়ন শুনেছেন। এই নির্বাচনকে আমরা কোনো ভাবেই অবাধ এবং সুষ্ঠু মনে করি না। নির্বাচনের সময়ে বিরোধীদলের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেফতারের বিষয়েও আমরা উদ্বেগ জানিয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি দুইটি বিষয় নিয়ে কথা বলবো। প্রথমত, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের জন্য সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। দ্বিতীয়ত, বিরোধীদলের সদস্য, গণমাধ্যম কর্মী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া এবং নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এই বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা অব্যাহত থাকবে।”