জাতীয়

ভারত সফরে যাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তুলবেন মিয়ানমার প‌রি‌স্থি‌তি

  প্রতিনিধি ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৯:১৬:০৭

শেয়ার করুন

মিয়ানমা‌র সীমান্তের চলম‌ান প‌রি‌স্থি‌তি নয়াদি‌ল্লি সফ‌রে তু‌লে ধর‌বেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন-ভারতে গিয়ে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, সিকিউরিটি অ্যাডভাইজারের সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে সার্বিক বিষয়গুলো আলোচনা করব। যেহেতু মিয়ানমার ভারতেরও প্রতিবেশী রাষ্ট্র, আমাদেরও প্রতিবেশী রাষ্ট্র।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়া‌রি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণাল‌য়ে আয়োজিত এক সংবাদ স‌ম্মেল‌নে তিনি এ তথ‌্য জান‌ান।
সেখানে মিয়ানমারের ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিকে আজ মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) তিন দি‌নের সফ‌রে দি‌ল্লি যাওয়ার কথা র‌য়ে‌ছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।

আরও দেখতে-আবারও মিয়ানমারের মর্টারশেলে বিধ্বস্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার বসতঘর

তিনি বলেন, আমরা সবসময় ভারতের সহযোগিতা চেয়ে এসেছি। মিয়ানমার থেকে যাদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়েছে, তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের সহায়তা আমরা বহু আগে থেকেই চেয়েছি। সুতরাং এ বিষয়গুলো স্বাভাবিকভাবেই আলোচনায় উঠবে।

এদিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে বাংলাদেশে দুজনের মৃত্যু এবং সীমান্তে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়। পরে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে আসেন রাষ্ট্রদূত।

জানা গেছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগের মহাপরিচালক মিয়া মুহাম্মদ মাইনুল কবির তাকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানান।

মিয়ানমা‌রের রাষ্ট্রদূত‌কে তলবের প্রস‌ঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব‌লেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দিতে যেখানে আমরা কাজ করছি। সেই প্রেক্ষাপটে এ ঘটনা অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অগ্রহণযোগ্য। এটা আমরা জানিয়েছি।

মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ‌কে প্রবেশ করতে দেওয়া হ‌চ্ছে কিনা-জান‌তে চাইলে হাছান মাহমুদ ব‌লেন, ওপার সীমান্তে যেসব বিজিপি সদস্য পরিবারসহ থাকত, তারা এসেছে। এই বাইরে কেউ নয়। গতকাল এবং আজ মিয়ানমার সিমান্ত অতিক্রম করে ২২৯ জন বিজিপি সদস্য এসেছে। এর মধ্যে আর এসেছে কিনা জানি না। তবে আসার সম্ভবনা আছে। মিয়ানমার থে‌কে বাংলা‌দেশ সীমা‌ন্তে ৩০টির মতো মর্টার‌শেল এবং দুইজনের নিহত হওয়ার তথ‌্যও তু‌লে ধ‌রেন তিনি।

মিয়ানম‌া‌র ইস‌্যু‌তে বাংলা‌দেশ আর কত ভুগ‌বে, এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী ব‌লেন, আজ আমরা কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি। এটি গ্রহণযোগ্য নয়, সেটি জানিয়েছি। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত তার সরকারের কাছে আমাদের কড়া প্রতিবাদের বার্তাটি পৌঁছে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

একইদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ তার দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ আছে। মিয়ানমারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা তাদের নাগরিক ও সীমান্তরক্ষীদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। এখন তাদেরকে বিমান নাকি নৌকায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

সীমান্ত পরিস্থিতি এবং তৃতীয় দেশ বা জাতিসংঘের যুক্ততা নিয়ে জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের সীমান্ত যথেষ্ট সুরক্ষিত আছে। তারা পালিয়ে আসায় তাদের আশ্রয় দিয়েছি। যেহেতু দুই দেশের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে, সেহেতু তৃতীয় পক্ষকে এখানে জড়িত করার কোনো প্রশ্ন নেই।’

প্রসঙ্গত- গত পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জান্তার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর এ সংঘাত বেড়ে যায়। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে মিয়ানমারের সঙ্গে।


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content