প্রতিনিধি ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ১১:১৯:২২
মৃ’ত্যুর পর গায়ে থুতু দেয়ার জন্য তাঁর ম’রদেহ বাইরে রেখে দেওয়া হয়েছিল।
বলছি ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের কথা
যদি জিজ্ঞেস করি কে সর্বপ্রথম বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার প্রস্তাব রাখেন?
সেই ইতিহাস আমরা অনকেই মনে রাখি নি। ইতিহাসে যিনি আড়ালেই থেকে গেলেন। আসুন একটু জেনে নিই-
পাকিস্তান স্বাধীন হয় ১৯৪৭ খ্রীষ্টাব্দের ১৪ই আগস্ট। মাত্র ছয় মাসের মাথায় করাচিতে ২৩শে ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ খ্রীষ্টাব্দে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে যিনি স্পষ্ট ভাষায় দাবি তুলেন – “বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করা হোক”, সেই মানুষটির নাম ‘ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত’।
ধীরেন্দ্রনাথ দত্তই সর্বপ্রথম বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তুলে ছিলেন। ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সেই দাবি পাকিস্তান পার্লামেন্টে প্রত্যাখ্যাত হয়। তারপরই ভাষা আন্দোলনের সূচনা ঘটে।
ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পাকিস্তান পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘‘পূর্ব পাকিস্তানের ৬ কোটি ৯০ লাখ মানুষের মধ্যে ৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাংলায় কথা বলে, তাই আমার বিবেচনায় বাংলা হওয়া উচিত রাষ্ট্রভাষা।’’ তার এই বক্তব্যকে জিন্নাহর ‘‘উর্দু হবে রাষ্ট্রভাষা’’ ঘোষণার প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ বলা যায়। সুতরাং তাঁকে ‘ভাষা আন্দোলনের জনক’ বললেও অত্যুক্তি হবে না।
আজ আমরা উনাকে মনে রাখি না। অথচ পাকিস্তানের শাসকেরা তাঁকে মনে রেখেছিল!
১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ রাতে কুমিল্লার কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী এ্যাডভোকেট আবদুল করিমের তত্ত্বাবধানে ছোট ছেলে দিলীপকুমার দত্তসহ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাদেরকে ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট নিয়ে যাওয়া হয়।আর্মিরা ধরে নিয়ে ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে নিষ্ঠুরভাবে অত্যাচার করে হ’ত্যা করা হয় তাদের। ৮৪ বছর বয়সী মানুষটিকে হাত-পা ভে’ঙ্গে প’ঙ্গু এবং দুই চোখে কলম ঢুকিয়ে অন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বলে জানা যায়। মৃ’ত্যুর পর গায়ে থুতু দেয়ার জন্য তাঁর ম’রদেহ বাইরে রেখে দেওয়া হয়েছিল।
হুতত্ত্বা ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সহ সকল শহীদের কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি।