আন্তর্জাতিক

গাজাবাসী রমজান করতে পারবে তো!

  প্রতিনিধি ৯ মার্চ ২০২৪ , ১:২৩:৫৮

0Shares

শেয়ার করুন

বিশ্ববাসীর চোখের সামনে দম্ভভরে অকাতরে অবিরাম ফিলিস্তিনি সাধারণ মানুষকে হত্যা করে চলেছে ইসরাইল। গাজায় গণহত্যায় যেন লাইসেন্স তাদের হাতে। সবাই দেখছে। কথা বলছে। অন্যদিকে কারো কোনো পরোয়া না করে গণহত্যায় মেতে উঠেছে ইসরাইল। যুদ্ধবিরতি, শান্তিচুক্তির কথা শুনতে শুনতে কেটে গেছে দিন, সপ্তাহ, মাস, বছর। কিন্তু গাজাবাসীর রক্তের বন্যা বন্ধ হয়নি। ইসরাইলকে কেউ যুদ্ধবিরতিতে যেতে বাধ্য করতে পারেনি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ২৪ ঘণ্টায় সেখানে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৮২ জনকে হত্যা করেছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১২২ জন।

 

পবিত্র রমজান দ্বোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে। গাজার মুসলিমরা অন্য মুসলিমদের মতো পবিত্র রমজান পালন করবেন। তারা সেহরিতে কি খাবেন, কি দিয়ে ইফতার করবেন তার কোনো ব্যবস্থা নেই। যৎসামান্য ত্রাণ আকাশ থেকে ফেলা হচ্ছে তা সমুদ্রে পানির ফোঁটা ফেলার সমান। বুভুক্ষু গাজাবাসীর বেশির ভাগকেই এই রমজানে রোজা রাখতে হবে অনাহারে, অর্ধাহারে। রমজানের শুরুতে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছার জন্য কঠোরভাবে চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যুদ্ধবিরতি না থাকায় পূর্ব জেরুজালেমে সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। ওদিকে অপুষ্টিতে ও পানিশূন্যতায় ভোগা আরও কমপক্ষে তিনটি শিশু মারা গেছে আল শিফা হাসপাতালে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, এ নিয়ে অনাহারে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৩। ৭ই অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলের হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ হাজার ৯৬০ ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন ৭২ হাজার ৫২৪ জন।
আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ বলেন, শুক্রবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফা ও মধ্য গাজায় আরও হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে অনেক মানুষ হতাহত হয়েছেন। ফলে অনেক মানুষ রাফা সিটি অথবা মধ্য গাজার অন্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে ছুটে গেছেন। মধ্য গাজায় জীবন হারানোর ভয় আছে। সেখানে আল আকসা হাসপাতাল মানুষে মানুষে গিজগিজ করছে। তাদেরকে যথাযথভাবে চিকিৎসা দেয়ার মতো পর্যাপ্ত মেডিকেল সরঞ্জামের সঙ্কট আছে। মানুষে মানুষে গাদাগাদি রাফায় রাতভর আবাসিক ভবনগুলোতে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে শুধু বিপুল সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছেন এমন নয়। একই সঙ্গে আভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বহু মানুষ। আহত যেসব মানুষ রাফায় অবস্থিত নাজ্জার হাসপাতালে পৌঁছেছেন, তারা ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। মেডিকেল স্টাফরা নিঃশেষ হয়ে গেছেন। ২৪ ঘণ্টা ধরে তারা সপ্তাহে সাতদিনই কাজ করছেন গত ৫ মাস ধরে। চিকিৎসা খাতে এটা অত্যন্ত গুরুতর পরিস্থিতি এটা। হানি মাহমুদ বলেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে আমরা দেখতে পাচ্ছি অনাহারে, পানিশূন্যতায় মারা যাচ্ছি শিশু। সেখানে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়েছে।

ওদিকে যোদ্ধাগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা শনিবার সকালের দিকে একটি ‘বুরকান’ রকেট দিয়ে ইসরাইলের সেনাবাহিনীর সামরিক ঘাঁটিতে হামলা করেছে। ইসরাইলের সেনাদের দাবি ওই রকেটটি ইসরাইলের উত্তরে ইইফতহাচ এলাকায় উন্মুক্ত স্থানে পতিত হয়েছে। ইসরাইলের সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লেবাননে হিজবুল্লাহর রকেট উৎক্ষেপণ সাইটকে লক্ষ্য করে পাল্টাহামলা চালিয়েছে তারা।

 

ওদিকে সামুদ্রিক পথে ত্রাণবাহী জাহাজ নোঙর করার জন্য গাজা উপকূলে একটি ঘাট নির্মাণের জন্য সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন জো বাইডেন। পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি প্যাট্রিক রাইডার বলেন, এই নির্মাণকাজে প্রয়োজন হবে এক হাজার মার্কিন সেনা। সময় লাগতে পারে এক থেকে দুই মাস।


শেয়ার করুন

0Shares

আরও খবর

Sponsered content