রীতিমতো অবিশ্বাস্য, সত্যিকার অর্থেই অবিশ্বাস্য! শেষ ওভারের শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে রাজস্থানকে ১ রানে হারিয়েছে হায়দরাবাদ। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের চারে উঠে এলো প্যাট কামিন্সের দল।
বৃহস্পতিবার (২ মে) রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২০১ তুলে হায়দরাবাদ। দলের হয়ে ৪২ বলে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন নীতিশ কুমার। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের একদম শেষ বলে গিয়ে ১ রানে হেরেছে রাজস্থান।
হায়দরাবাদের ছুঁড়ে দেওয়া ২০০ পেরোনো পুঁজি তাড়া করতে গিয়ে ইনিংসের শুরুতেই বড় ধাক্কা খায় সফরকারীরা। রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন ওপেনার জস বাটলার এবং দলপতি সাঞ্জু স্যামসন।
অভিজ্ঞ ভুবনেশ্বর কুমারকে দিয়ে শুরুটা করেন হায়দরাবাদের অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। সু্যোগ পেয়েছে অভিজ্ঞ এই পেসারও আস্থার প্রতিদান দেন। ভুবির ব্যাক-অফ লেংথের বলে মার্কো জানসেনের তালুবন্দি হয়ে ‘গোল্ডেন ডাক’ উপহার দেন বাটলার। আউট হয়ে যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না মারকুটে এই ওপেনার।
এরপর ব্যাট হাতে নেমে অধিনায়ক স্যামসনও হতাশ করেন। ভুবেনেশ্বরের আউটসাইড অফের বুমেরাং গতির বলে সাঞ্জুর মিডল-স্ট্যাম্পই উড়ে যায়। তিন বল মোকাবিলায় রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন উইকেটকিপার এই ব্যাটার।
জোড়া উইকেট হারিয়ে খানিকটা ব্যাকফুটে চলে যায় সফরকারীরা। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন ওপেনার জয়সওয়াল এবং রিয়ান পরাগ। এই জুটির দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সচল থাকে রাজস্থানের রানের চাকা।
এই জুটিতে ১০ ওভারেই দলীয় ১০০ পেরিয়ে যায় সফরকারীরা। তবে দলীয় ১৩৫ রানের মাথায় নটরাজনের আউটসাইড অফের এক ইয়ার্কারে পরাস্থ হন জয়সওয়াল। ফেরার আগে ৭ চার ও ২ ছক্কায় সাজান ৪০ বলে ৬৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস।
দুই ওভার ব্যবধানে ফেরেন পরাগও। প্যাট কামিন্সের বলে দলীয় ১৫৯ রানের মাথায় মার্কো জানসেনের হাতে ধরার পড়ার আগে ৪ ছক্কা ও ৮ চারে ৪৯ বলে ৭৭ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস উপহার দেন তিনি।
ক্রিজে থিতু হওয়া দুই ব্যাটারকে হারিয়ে ফের চাপে পড়ে যায় রাজস্থান। এরপর ঠান্ডা মাথায় সেই চাপ সামাল দেন দুই ক্যারিবিয়ান রোভম্যান পাওয়েল ও শিমরন হেটমায়ার। তাদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে জয়ের পথ কিছুটা মসৃণ হয় সফরকারীদের। তবে একটি করে ছক্কা আর চারের পর নটরাজনের শিকার হয়ে বিদায় নেন হেটমায়ারও।
এরপর ব্যাট করতে নেমে আস্থার প্রতিদান দিতে ব্যর্থ হন ধ্রুব জুরেল। ব্যক্তিগত ১ রানে প্যাট কামিন্সের দ্বিতীয় শিকার বনে বান তিনি।
শেষ ওভারে গিয়ে রাজস্থানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩ রান। ভুবনেশ্বর কুমারের করা ওভারে ১ রান নিয়ে রোভম্যানকে স্ট্রাইক দেন। পরের ৪ বলে আসে ২, ৪, ২ ও ২ রান। আর জয়ের শেষ বলে গিয়ে রাজস্থানের দরকার ছিল ২ রান। এমন সমীকরণে ১ রান নিতে পারেননি রোভম্যান। শেষ পর্যন্ত ১ রানে হেরেছে সফরকারীরা।
এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করেন দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড ও অভিষেক শর্মা। তবে দলীয় ২৫ রানের মাথায় প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন সাবধানী মেজাজে ব্যাট করতে থাকা অভিষেক। আভেসের বলে জুরেলের মুঠোবন্দি হওয়ার আগে এক ছক্কায় ১০ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ১২ রান।
এরপর ব্যাটিংয়ে এসে ঘরের মাঠের সমর্থকদের রীতিমত হতাশ করেন আনমোলপ্রীত সিং। দুই অঙ্কের কোটা পেরোনোর আগেই সন্দ্বীপ শর্মার বলে জয়সওয়ালের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওয়ান-ডাউনে নামা টপ-অর্ডার এই ব্যাটার।
এরপর ব্যাট করতে নেমে হেনরিক ক্লাসেনকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন নীতিশ রেড্ডি। তাদের ব্যাটে ভর করে এগিয়ে যেতে থাকে হায়দরাবাদ। তাদের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহের ভীতও পায় দলটি। শেষ পর্যন্ত নীতিশ রেড্ডির ৮ ছক্কা ও ৩ চারে ৪২ বলের অপরাজিত ৭৬ আর ক্লাসেনের সমান তিনটি করে চার-ছক্কায় ৪২ রানের ক্যামিওতে ভর করে ২০১ রানের বড় পুঁজি পায় হায়দ্রাবাদ।
রাজস্থানের হয়ে আভেস দুটি এবং সন্দ্বীপ একটি উইকেট একটি উইকেট শিকার করেন।
সম্পাদকঃ মাহবুবা আক্তার। অফিসঃ ৭৫ ই-ব্রডওয়ে,নিউইয়র্ক এনওয়াই ১০০০২।ফোন:+৮৮০১৭১২৯০৩৪০১ ই- মেইলঃ dailyhaquekotha@gmail.com
প্রকাশিত সংবাদপত্রের অংশ