প্রতিনিধি ২১ জুন ২০২৪ , ৯:৫৯:৪৬
ইসরায়েলের টানা সাড়ে আট মাসের আগ্রাসনে পর্যুদস্ত ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউরোপের আরেকটি দেশ আর্মেনিয়া। সেইসঙ্গে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে চলা ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা ও গণহত্যার তীব্র নিন্দাও জানিয়েছে দেশটি।
শুক্রবার (২১ জুন) পূর্ব ইউরোপীয় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘোষণা দিয়েছে বলে নিজেদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে আরব নিউজ।
ঘোষণায় গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি সহিংসতার অবসান দাবি করেছে আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই স্বীকৃতি দেওয়ার মধ্য দিয়ে পূর্ব ইউরোপের দেশটি ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তাদের বৈধ অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে। আর্মেনিয়ার এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে, যা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
আর্মেনিয়া ও ফিলিস্তিনের মধ্যে এই নতুন কূটনৈতিক সম্পর্ক দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর্মেনিয়া ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে সমর্থন জানিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করেছে, যা ভবিষ্যতে অন্য দেশগুলোর জন্যও একটি উদাহরণ হতে পারে।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আর্মেনিয়ার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এটি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য একটি বড় অর্জন বলে অভিহিত করেছেন। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি আর্মেনিয়ার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, এই স্বীকৃতি ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামে নতুন উদ্দীপনা যোগাবে।
ইতোমধ্যে এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে এসেছে এবং বিভিন্ন দেশে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আর্মেনিয়ার এই সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন জোরদার করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এর আগে, গত ৩০ মে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে স্লোভেনিয়া সরকার। গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ এবং সব ইসরায়েলি বন্দির মুক্তিও দাবি করেছেন স্লোভেনীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা শান্তির বার্তা।’ তার আগে, ২৮ মে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয় ইউরোপীয় দেশ স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ড। দেশগুলোর নেতারা জানান, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য তাদের দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, হামাস নির্মূলের নামে গত সাড়ে আট মাস ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচার হামলা ও হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যে ইসরায়েলি হামলায় ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া ৮৮ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।