প্রতিনিধি ১১ আগস্ট ২০২৪ , ১২:৫৩:১৮
শনিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছি আমরা। আমরা যাতে এক হতে পারি। কেউ আমাদের বিদেশি আক্রমণকারী না, আমরা আমরাই। আমরা গলাগলি করে বাঁচতে চাই, মারামারি করে না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেছেন, যারা অপরাধী তাদের বিচার করতেই হবে। তা না হলে আমরা মুক্তি পাবো না। তবে যে নিরপরাধ তার ওপরে কোন রকমের অপবাদ লাগিয়ে দিয়ে, অত্যাচার চালিয়ে আবার বর্বরতার দিকে যেন আমরা চলে না যাই। যখন অ্যাকশন নেয়া শুরু হবে, তখন সমর্থন চাই।
এসময় গত ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে মহাকাব্যের নায়ক হিসেবে আখ্যায়িত করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, আবু সাঈদ নিজেই তার মহাকাব্য রচনা করে গেছে। সে পুরো একটা জাতিকে দুঃস্বপ্ন থেকে জাগিয়ে দিয়েছে। বর্বরতা থেকে জাগিয়ে দিয়েছে। আমরা একটা বর্বর জাতি হয়ে গেছি। সে সেটা দেখিয়ে গেল কত বর্বর আমরা হতে পারি। আমরা স্বাধীন জাতি বলতেছি, মুক্ত জাতি বলতেছি, ফাঁকা কথা। আমরা বর্বরতার চূড়ান্তে গিয়ে পৌঁছেছি। এ বর্বরতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কি উপায় সেটা জানার জন্যই রংপুরে এসেছি। আবু সাঈদের কাছে আসছি, তার কাছে মাফ চেয়েছি। তোমাকে আমরা এ বর্বরতা থেকে মুক্তি দিতে পারিনি। ভবিষ্যতে যেন এটা আর না হয় তা আমরা নিশ্চিত করবো।
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এখন শুনছি হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের এটা নিয়ে আবার মারধর করছে। একটা মারামারি করল আবার এদিকে আরেক মারামারি। এটা যেন না হয়। যেখানে কোন একটা ওসিলা করে এরকম অত্যাচার হবে কারও ওপরে, সেটা রুখে দাঁড়াতে হবে। যা হয়ে গেছে সেটা থেকে আমরা মুক্ত হতে চাই। আমাদের পরিষ্কার করে ফেলতে চাই। আমরা পুনর্জন্ম লাভ করতে চাই। গড়াগড়ি করে বাঁচতে চাই না।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতির সম্ভাবনা অসীম। এই জাতির যে তরুণ সম্প্রদায়। তার যে সৃজনশীলতা, তার যে উদ্যম অন্য জাতির তুলনায় অনেক বেশি। এতটুকু জায়গার মধ্যে আমরা ১৭ কোটি মানুষ থাকি। এই ১৭ কোটি মানুষকে আমরা আরও বহু ওপরে নিয়ে যেতে পারি। শুধু খুনাখুনি এসব বাদ দিতে হবে। বড় কথা হলো আমরা নিজরদেকে কি দেখতে চাই। আমাদের স্বপ্নটা কি?
আমাদের স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করবো এবং আমাদের যে ক্ষমতা এটা যদি আমরা করি পৃথিবীর মানুষ এমনিই ভালবাসবে। পৃথিবীর বহু দেশে তো যাই কাজেই দেখি এর চেয়ে ঘনিষ্ঠ একটা জাতি, পরিবারের মতো জাতি খুব কম দেশে আছে।