প্রতিনিধি ২৭ আগস্ট ২০২৪ , ৩:১০:০৫
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ এবং এর নিবন্ধন বাতিল চেয়ে করা রিটটি সরাসরি খারিজ চেয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি আদালতকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জিত বাংলাদেশ ও দেশের সংবিধান মানুষের রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নেয়ার এখতিয়ার দেয়নি। বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার মানুষের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা। মঙ্গলবার বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটের শুনানিতে অংশ নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল একথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল রিটটি খারিজ চেয়ে আদালতকে বলেন, এই রিটটি যাদের বিরুদ্ধে করা হয়েছে, সেই আওয়ামী লীগকে রিটে পক্ষভুক্ত করা হয়নি এবং কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি। এই রিটের কোনো লোকাস স্ট্যান্ডাই নেই। এই রিট মেইনটেনেবল নয়। তাই রিটকারীকে খারিজ করার আবেদন করছি। অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো উদ্দেশ্য নেই কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ বা নিবন্ধন বাতিল করার। সংবিধানে সংগঠন ও রাজনৈতিক দল পরিচালনার যে স্বাধীনতা রয়েছে, এই সরকার সেটিতে বিশ্বাস করে। আর বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারের সঙ্গে জড়িতদের অন্যায় অবিচারের বিচার আইন আদালতের মাধ্যমে হবে।
সেটার জন্য কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা সমীচীন নয়। অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, আওয়ামী লীগে অনেক ভালো নেতাকর্মী আছেন, যারা তাদের আদর্শে বিশ্বাস করেন। তাই, তাদের সে বিশ্বাসের দল নিষিদ্ধ করা আদালতের কাজ নয়। ‘বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা, আজ জেগেছে জনতা’ এমন সেøাগানের প্রেক্ষাপটে ছাত্র- জনতার গণঅভ্যুত্থানে যে নতুন স্বাধীনতা এসেছে, সেখানে সবার বাকস্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হতে হবে। তাই, রাজনৈতিক দল পরিচালনার স্বাধীনতা এ সময় বন্ধ হতে পারে না।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমরা দেখেছি প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয়েছে। যেটি আমাদের কারোরই কাম্য ছিল না। বিগত কর্তৃত্ববাদী শাসনের সঙ্গে বিচার বিভাগের সমর্থনের ও অবিচারের প্রেক্ষাপটেই এমন ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী হিসেবে বিচার বিভাগে কোনো আক্রমণ হলে সেটি আমাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণেরই বিষয়। তাই, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা নিয়ে মাঠের রাজনীতি আদালতে টেনে আনা ঠিক নয়। আর কোনো রাজনৈতিক দল এই রিট নিয়ে আদালতে আসেনি।
একপর্যায়ে রিটকারী আইনজীবী শুনানির জন্য আরও সময় চাইলে আগামী ১লা সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে আদেশ দেয় আদালত।
মানবাধিকার সংগঠন সারডা সোসাইটির পক্ষে নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া এই রিটটি করেন।