শিক্ষা

কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে আওয়ামী লীগের বাধা-গুলি, গুলিবিদ্ধ ২, আহত ২৫

  প্রতিনিধি ৩ আগস্ট ২০২৪ , ৯:৪১:৩৮

শেয়ার করুন

কুমিল্লায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। নগরীর রাণীর দিঘীর দক্ষিণ পাড় ও বাগিচাগাও এলাকায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মারধর ও গুলি করে।

 

এ পর্যন্ত দু’জন গুলিবিদ্ধ ও প্রায় ২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর জানা গেছে। বাগিচাগাও এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাদের হাতে প্রকাশ্যে অস্ত্র ও গুলি করতে দেখা যায়। এদিকে, চান্দিনায় এসিল্যান্ডের সরকারি ব্যবহৃত গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা।
আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে কুমিল্লা জিলা স্কুল এলাকায় গণমিছিলের উদ্দেশে অবস্থান নেন প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী। এ সময় তারা বিভিন্ন ধরনের গান, কবিতা আবৃত্তি ও স্লোগান দিতে থাকেন। তাদেরকে বাধা দিতে দুই পাশে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। এ সময় সরকারকে ‘স্বৈরাচার’ উল্লেখ করে পদত্যাগ দাবি করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ‘এক দুই তিন চার, স্বৈরাচার তুই গদি ছাড়’, ‘শিবির ট্যাগের ছলচাতুরী, বুইজা গেছে জনগণ’, ‘দফা এক দাবি এক, স্বৈরাচারের পদত্যাগ’, ‘আবু সাঈদ মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
পরে দু’পাশ থেকে শিক্ষার্থীদের উপর গুলি করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এসময় স্থানীয় পত্রিকার দু’জন সাংবাদিককে মারধর করে একজনের ফোন নিয়ে যান তারা। এছাড়াও আন্দোলনকারী নারী শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে চড়-থাপ্পড় ও লাঠি দিয়ে আঘাত করেন।


এরপর টাউনহল মোড় থেকে টমসম ব্রিজ রোডের সিএনজি স্টেশন, ভিক্টোরিয়া কলেজ গেইট, রাজগঞ্জ মোড়, জিলা স্কুল গেইটসহ বিভিন্ন গলিতে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে শর্টগান, রামদা, লাঠি নিয়ে মহড়া দেন পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক দেখলেই মারধর ও হুমকি দিতে থাকেন। ইত্তেফাকের সংবাদ প্রদায়ক মানছুর আলম অন্তরকেও আওয়ামী লীগের একজন কর্মী লাঠি হাতে মারার জন্য তেড়ে আসেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া শিক্ষার্থী জোবায়দা ইয়াসমিন মুমু বলেন, সারাদেশের সাথে সমন্বয় করে আজকে আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছি। এখানে আমাদের একটাই দাবি সরকারের পদত্যাগ।

সরকারের পদত্যাগ ছাড়া শিক্ষার্থী সমাজ আর ঘরে ফিরবে না। এ আন্দোলন আর কোটা আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না। পুলিশ প্রশাসন আমাদের ভাইদের উপর গুলিয়ে চালিয়েছে। তাদেরকে বলবো, এখন সাবধান হোন। আপনাদেরও ছেলে-মেয়ে আছে, তাদের দিকে তাকান। আর কুমিল্লার সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন পয়েন্ট পয়েন্টে অবস্থান করে আমাদের বাধা দিচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আহত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার সামনে আমার এক ভাইকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে নাড়ীভুঁড়ি বের হয়ে যায়। আরেকজনের হাতে গুলি লেগেছে। জিলা স্কুলের ভেতরে আমাদের ছাত্ররা আটকা পড়েছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাইফুল বলেন, ‘আবু সাঈদের মতো জীবন দিতে আজকে মাঠে নেমেছি। জীবন দেবো না হয় স্বৈরাচার সরকার পদত্যাগ করিয়ে মাঠ ছাড়বো। আমার ভাইগুলোর রক্তের দাগ বাংলার জমিনে এখনো শুকায়নি। কি দোষ ছিল তাদের? তারা সংবিধান অনুযায়ী তাদের অধিকারের কথা বলেছিল। আজকে আমাদের আন্দোলনের দাবি একটা, স্বৈরাচার সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে’।

কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিকুল্লাহ খোকন বলেন, ছাত্রদের সাথে শিবির ও বিএনপি’র লোকেরা একাকার হয়ে দেশকে নাশকতার দিকে নিতে চায়। আমরা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি।


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content