প্রতিনিধি ১১ আগস্ট ২০২৪ , ১১:৪৫:৪৪
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মেহেদী হক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের একটি কার্টুন আঁকেন।সেই কার্টুন সম্বলিত পোস্টটি জনাব তারেক রহমান তার ভেরিফাইড পেইজে শেয়ার দিয়ে ইংরেজিতে লিখেন__
পোস্টের বাংলা -আমি গভীরভাবে আনন্দিত যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক কার্টুন আঁকার স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। 2006 সালের আগে, বাংলাদেশী কার্টুনিস্ট, বিশেষ করে শিশির ভট্টাচার্য, প্রায়ই আমার মা এবং আমাকে নিয়ে কার্টুন তৈরি করতেন। যাইহোক, গত 15 বছরে, আমরা কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে জোরপূর্বক গুমের শিকার হতে দেখেছি, তার কাজের জন্য অকল্পনীয় নির্যাতন এবং কারাবরণ সহ্য করতে হয়েছে। আরও অনেকে একই ধরনের নিপীড়নের মুখোমুখি হয়েছেন। শিশির ভট্টাচার্য অবশেষে কার্টুন তৈরি করা বন্ধ করে দেন। আমি কার্টুনিস্ট মেহেদীর ভক্ত, এবং শিশির ভট্টাচার্যের কাজও উপভোগ করতাম। আমি আন্তরিকভাবে আশা করি, তিনি শীঘ্রই আবারও নিয়মিত রাজনৈতিক কার্টুন তৈরি শুরু করবেন।
এর পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা।অনেকেই ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন।
REPECT…You… My Dear Leader.
Yes This OUR Leader.. Tarique Rahman.
This is very smart move from Mr. Tarique Rahman. You may love him or hate him, but this needs to be appreciated. বাংলাদেশের পলিটিক্যাল কালচার যদি বদলাতে হয়, সব পক্ষ থেকেই এমন উদ্যোগের কোন বিকল্প নাই।
এই পোস্টের Share এর মাধ্যমে তিনি একইসাথে বেশকিছু কাজ করে ফেলেছেন।
১. তাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে করা কার্টুনকে নিজেই শেয়ার করে প্রশংসা করার মাধ্যমে সহনশীলতাকে এনডোরসড করেছেন।
২. এর আগেও বিভিন্ন কার্টুনিস্ট তাদের বিগত শাসনামলে যে নির্ভয়ে তাদের কার্টুন আঁকতে পারতো, সমালোচনা করতে পারতো, সেই ব্যাপারটা মনে করিয়ে দিয়েছেন।
৩. শিশির ভট্টাচার্যের মত লোক, যিনি প্রথম আলোর কাভার পেজে তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপির টপ লিডারশিপকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে কার্টুন আঁকতে পারতো নির্ভয়ে, কিন্তু তারাই আওয়ামী আমলে এসে চুপচাপ হয়ে গেলেন কেন, সেই প্রশ্নটাও প্রকারন্তরে তুললেন। মানে তারা নিরপেক্ষভাবে কেন পরবর্তীতে কাজ করলেন না, এই জায়গাটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন।
৪. আহমেদ কবির কিশোর আওয়ামী আমলে জাস্ট লিগের একজন ব্যাংকখোর চ্যালাকে নিয়ে কার্টুন আঁকার কারণেই তার সাথে কী করেছে লীগের রেজিম, সেই ব্যাপারটা সামনে এনে পার্থক্য এঁকে দেখিয়ে দিলেন।
৫. একইসাথে সামনে যাতে এসব কার্টুনিস্ট পলিটিক্যাল কার্টুন আঁকতে পারে নির্ভয়ে, সেই ব্যাপারে তার মত জানানোর চেষ্টা করলেন।
পুনশ্চ:
বিশেষ একটা নোট যুক্ত করি, কিছুদিন আগেই ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম পাবলিকলি বলেছিলেন বেনজিরের অপকর্মের কথা তারা জানতেন, কিন্তু প্রকাশ করেন নাই ভয়ে। জাস্ট চিন্তা করেন লীগের আমলে তাদের বড় বড় নেতার কথা তো দূরের হিসাব, একজন পুলিশ প্রধানের দুর্নীতি পর্যন্ত প্রকাশ করতে পারতো না ডেইলি স্টারের মত বিগশট পত্রিকা।
অথচ সেই ডেইলি স্টার কিংবা প্রথম আলো বিএনপি আমলে খালেদা জিয়া কিংবা তারেক রহমানকে নিয়ে দেধারছে লিখতে পারতো। বিএনপি আমলে বসে তারা হাওয়া ভবন থেকে শুরু করে নানা ইস্যুতে বড় বড় স্টোরি করতো। তৎকালীন ডেইলি স্টারের সাংবাদিক এবং বর্তমানের আলোচিত সুইডেন থেকে প্রকাশিত নেত্র নিউজের তাসনিম খলিল ভাই নিজে কিছুদিন আগে স্বীকার করেছেন তারেক রহমানকে নিয়ে বিএনপি আমলে অনেক অনেক হার্ড কথা লিখতেন ডেইলি স্টারে, যেটা হয়ত পুরোপুরি প্রমাণ ছাড়া ওইভাবে কনক্লুসিভলি লেখা উচিৎ হয়নি তার। ওইগুলো তৎকালীন বিরোধী দল লীগের লোকজন কীভাবে ইউজ করে বেনিফিট নিতো, সেটাও তার কথার মাধ্যমে পরিলক্ষিত হয়েছে। এই ব্যাপারগুলো সততার সাথে খোলাসা করেছেন তাসনিম খলিল ভাই।
জাস্ট চিন্তা করেন তো লীগের আমলে কোন পত্রিকা বা টিভি চ্যানেল কি হাসিনা, জয় কিংবা ওবায়দুল কাদেরের মত কাউকে নিয়ে কোন টুঁ পরিমাণ শব্দ করতে পেরেছে? আবার আলজাজিরা, ডয়েচে ভ্যালে কিংবা নেত্র নিউজ যদি কোন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করতো ( যেমম, আজিজের কুকীর্তি কিংবা আয়নাঘরের বন্দিশালা), সেগুলো নিয়েও রিপোর্ট করার সাহস পেতো না কেউ।
যাইহোক, তারেক রহমান আজকে পোস্টে যা লিখলেন, আশা করবো তাদের পক্ষ থেকে এই কমিটমেন্ট সবসময় যাতে থাকে সামনের দিনগুলোতে। একইসাথে শুধু তারেক রহমান না, অন্যান্য সকল রাজনৈতিক নেতারাও যাতে সেইমভাবে Freedom of Expression এবং Freedom of Press কে রক্ষা করার চেষ্টা করেন, সেই প্রত্যাশা থাকবে।
গাজী সালাহউদ্দীন
সাধারণ সম্পাদক-টংগী পূর্ব থানা বিএনপি
সিনিয়র সহ-সভাপতি-গাজীপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল।