প্রতিনিধি ৭ আগস্ট ২০২৪ , ৭:২৮:৩৮
আমাদের সন্তানেরা এ আধুনিক যুগে মোবাইল আর কম্পিউটার নিয়ে নয় তারা দেশ নিয়েও ভাবে।দেশে দূর্নীতি,লুটপাট আর জুলুমবাজ সরকারের একতরফা নির্বাচন ও দ্রব্য মূল্যের বৃদ্ধিতে যখন আমরা মধ্যবিত্ত পরিবার যখন হিমশিম খাচ্ছি।যখন ভাবছি কবে এই থেকে মুক্তি পাবো।ঠিক তখনই আমাদের সন্তানেরা দেখিয়ে দিলো।বুকের তাজা রক্ত ঢেলে এ দেশ থেকে জুলুমবাজ দূর্নীতি লুটেরা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটিয়ে ছাত্র-জনতার বিজয় এনে দিল।অনেকে এ বিজয় কে দ্বিতীয় স্বাধীনতাও বলছেন।তবে দেশের রাজনৈতিক দল গুলো দীর্ঘ দিনযাবৎ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন হাজার হাজার মামলা হামলা সয়ে গুম খুন,জেল-জুলুম সয়ে মুক্ত গনতান্ত্রিক দেশ পুনঃউদ্ধারের।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিভিন্ন সংবাদ যখন আওয়ামী লীগ সরকার প্রচার করতে দিচ্ছে না তখন সকল সত্য সংবাদ প্রচারে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন অন-লাইনের সর্ববৃহৎ সংগঠন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবী ও মিডিয়া হিসেবে লড়াই করা জিয়া সাইবার ফোর্স,যমুনা টিভিসহ অসংখ্য অন-লাইন একটিভিস্ট সাধারণ জনতা।
টানা কয়েক দিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছিল রাজধানীসহ সারাদেশে। আন্দোলনের সবশেষ কর্মসূচি ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ ছিল সোমবার। এর আগে কয়েকদিন ধরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ, হতাহতের ঘটনা ঘটে। এমন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এমন খবরে নানা স্থানে অগ্নিসংযোগ করে উত্তেজিত জনতা।
পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাছে শিক্ষার্থীরা
ঢাকার রাস্তায় নামে ছাত্র-জনতার ঢল। রাতব্যাপী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় হামলার গুজব চলে। এতে আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন নগরবাসী। ফলে মঙ্গলবার প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া তেমন একটা বাইরে বের হয়নি লোকজন। যানবাহন চলেছে হাতেগোনা। দিনব্যাপী থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করেছে রাজধানীতে।
আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ক্ষতচিহ্ন রাজধানীজুড়ে। সংঘর্ষে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রাণ হারিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য। ফলে নগরীতে ঘুরে কোনো ট্রাফিক পুলিশের দেখা মেলেনি। চলমান পরিস্থিতির কারণে কর্মবিরতি পালন করছেন থানা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশসহ সকল কর্মকর্তা। ফলে ছাত্র ও জনতা নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে ট্রাফিকের দায়িত্ব।
বুধবাট নগরীর আব্দুল্লাহপুর,হাউজবিল্ডিং,এয়ারপোর্ট, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কাওরানবাজার, শাহবাগসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে বিগত কয়েক দিনের তুলনায় নগরীতে যানবাহনের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। আবার নয়া পল্টনে ছিল বিএনপি সমাবেশ।
সেখানে লাঠি হাতে দুই মিনিট পর পর বিভিন্ন পাশের গাড়ি ছাড়ছেন বেশ কয়েকজন তরুণ। বাইক চালকদের মাথায় হেলমেট না থাকলে অনুরোধ করছেন যেন, পরবর্তী সময়ে হেলমেট ব্যবহার করেন। রিক্সা চালকদের সারিবদ্ধভাবে একপাশে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি মিরপুর-১০নং গোল চত্বরে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট না করারও আহ্বান জানানো হচ্ছে। সেইসঙ্গে পাড়া-মহল্লায় কেউ যেন আক্রমণের শিকার না হন, সে বিষয়ে সবাইকে কাজ করারও আহ্বান জানাচ্ছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের এমন ভূমিকায় খুশি নগরবাসী।অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে সাধুবাদ জানাচ্ছে।
নাদিয়া আহমেদ নামের এক ফেসবুক আইডিতে লিখেন__
খু্বই আশ্চর্যের ব্যাপার! কোন ট্রাফিক ট্রেনিং ছাড়াই ছাত্ররা যেভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
তারা জানে দেশপ্রেম কি? দুপুরে কঠোর রোদে তারা ট্রাফিক রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। কপাল থেকে ঘাম ঝরছে। কারো হয়তো ছাতা আছে কঠিন রোদ থেকে বাঁচার জন্য। কেউ হয়তো বা ছাতা ছাড়াই ট্রাফিকে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তারপরও কাজ করে চলছে। প্রত্যেকটা গলিতে এবং রাস্তায় নোংরা পরিষ্কার করছে।
অভিভাবক হিসেবে আমাদেরও কিছু নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। চলুন আমরাও তাদের পাশে দাঁড়াই, উৎসাহ দেই। পাশাপাশি আমরা কিন্তু
এক বোতল পানি, এক বোতল খাবারের প্যাকেট কিন্তু তাদেরকে দিতে পারি?? তাদের কাছেও ভালো লাগবে।আমাদের সন্তানের হাতে তুলে দিতে পারি। উন্নত বিশ্বের যে যে স্কুলে পরিষ্কার করার দায়িত্ব, সেই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের। চলুন আমরা বাংলাদেশেও প্রত্যেকটি স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের নিজ দায়িত্বে তাদের স্কুল পরিষ্কার করার দায়িত্ব গ্রহণ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করি। সকল অভিভাবকরা সচেতনভাবে উৎসাহ প্রদান করি। এটা আমাদের দেশ ,পরিষ্কার করার দায়িত্ব আমাদের নিজেদের। প্রত্যেকটা অভিভাবক তাদের সন্তানকে উৎসাহ অবদান করুন এবং নিজেও তাদের পাশে এসে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন। বাংলাদেশকে সোনার বাংলাদেশের রূপান্তরিত করুন। এটার জন্য সকলের সহযোগিতা দরকার, সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।