প্রতিনিধি ২০ অক্টোবর ২০২৪ , ৩:১৭:২৫
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ১৯৭২ সালে স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করে একজন ব্যক্তির অর্থাৎ শেখ মুজিবুর রহমানের বন্দনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। তার স্বাধীনতা সংগ্রামের পদক্ষেপগুলোতে ভূমিকা ছিলো কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে কোনো ভূমিকা ছিলো না। রোববার (২০ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, শেখ মুজিবের মুক্তিযুদ্ধে কোনো ভূমিকা ছিলো না কারণ তিনি মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগেই পাকিস্তানী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে ভারতে চলে গেছেন। তার পরিবারকেও পাকিস্তান সেনাবাহিনী দেখাশোনা করেছে। মুক্তিযুদ্ধে কোনও ভূমিকা শেখ মুজিবের আছে এটা ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে তিনি মানতে রাজি না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখা ব্যক্তিদের উদাহরণ টানেন তিনি। বলেন, মুক্তিযুদ্ধে যেসব চরিত্রগুলোর অবদান ছিলো তাদের আস্তে আস্তে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। জিয়াউর রহমান প্রথম যুদ্ধ শুরু করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিলো জেনারেল ওসমানী। তিনি এর প্রধান চরিত্র ছিলেন। এ ছাড়াও মোহাম্মদ আবেদ আলী, তাজউদ্দীন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলামদের নাম মুছে ১৯৭২ সালে এক নামের বন্দনা শুরু হয়।
ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রীয় রক্ষীবাহিনী তৈরি করা হয়। তাদের মাধ্যমে গুম এবং বিচার বহির্ভূত হত্যা শুরু হয়। এসব আন্তর্জাতিক অপরাধ। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে প্রথম কারচুপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এটিও চালু করেছিলেন পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা। ১৯৭৩ সালে দু’টি ঘটনা ঘটেছে প্রথমটি হলো কারচুপির নির্বাচন আরেকটি হলো মুজিবকে দেবতার আসনে বসানো। শেখ মুজিবের অত্যন্ত বিতর্কিত একজন ভাগ্নে ছিলেন শেখ মনি। তার স্লোগান ছিলো আইনের শাসন নয় মুজিবের শাসন চাই।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে লাখ লাখ মানুষ মারা গেছেন। তখন একবেলা রুটি আর একবেলা ভাত খেতে হত। এই দুর্ভিক্ষ হয়েছে অযোগ্য ও দুর্নীতিবাজ সরকারের কারণে। তখন চাল মজুদ করে ভারতে পাচার করা হত। ১৯৭৫ সালে তিনি গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেন। এর মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের বীজ বপন করা হয়েছে। ফলে ২০০৯ থেকে ২০২৪ আমরা ফ্যাসিবাদের সরকার দেখেছি। এটি হলো বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদের ইতিহাস।
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক বলেন, গত ১৫ বছরে আমরা গণমাধ্যমেও মুজিব বন্দনা দেখেছি। মুজিবের অনেক বিশেষণ দেয়া হয়েছে। এখনকার বয়ান হচ্ছে, শেখ মুজিব ভালো শেখ হাসিনা খারাপ। ১৫ বছর সময় পেলে শেখ মুজিব শেখ হাসিনার থেকে ভয়ঙ্কর ফ্যাসিস্ট হতেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।