প্রতিনিধি ২৯ অক্টোবর ২০২৪ , ১২:৩০:৩০
স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের প্রশ্রয়ে সুবিধাভোগীদের চরম লুটপাটে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে খেলাপি ঋণ। একদিকে লুটপাট করে ব্যাংক খালি করা, অন্যদিকে এর ভয়ঙ্কর চিত্র দেশের মানুষের কাছ থেকে আড়ালে রাখা। বিগত সরকারের এমন সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে, জুন মাস শেষে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশই খেলাপি। এরমধ্যে চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসেই বেড়েছে ৬৬ হাজার কোটি টাকা।
খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইতোমধ্যে নামে-বেনামে ঋণের নামে লুট করতে সহায়তা করা এমন ১০টি বেসরকারি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয়, পুরো ব্যাংক খাত ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজাতে চায় সরকার। গঠন করা হয়েছে বিশেষ টাস্কাফোর্স।
ব্যাংক খাত বিশেষজ্ঞ তৌফিক চৌধুরী বলেন, ২০১৫ সালে বড় বড় ঋণগুলো পুনর্গঠনের সময় বলা হয়েছিল, ভবিষ্যতে ঋণখেলাপিদের আর কোনো সুবিধা দেওয়া হবে না। কিন্তু পরবর্তীতে অর্থমন্ত্রী বললেন খেলাপিদের এক্সিট দিতে হবে। আমাদের দেশের এই পলিসিগুলোই তাদেরকে আরও সাহস দিয়েছে।
রাজনৈতিক সহযোগিতা ছাড়া এসব অনিয়ম সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার চাইলেই এটি সমাধান করা সম্ভব। অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে বেশকিছু ভালো উদ্যোগ নিয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ড. সায়েম আমির ফয়সল জানান, যত ঋণ বরাদ্দ হবে তা পত্র-পত্রিকায় ছাপালে মানুষ জানতে পারবে। তাহলে দুর্নীতির হার ১০০ শতাংশ কমে আসবে। তখন যারা ঋণখেলাপি করবে জনগণ তাদের ছাড়বে না।
অর্থঋণ আদালতের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম বলেন, খেলাপি ঋণ সৃষ্টি ব্যাংক নিজেই করে। ঋণটাই এমনভাবে দেওয়া হয়েছে যাতে এটা খেলাপি হয়। যাতে লোকটা ঋণ পরিশোধ করতে না পারে।
ভবিষ্যতে খেলাপি বন্ধে বড় ঋণগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে প্রদানের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৯১০ কোটি টাকা। যার বড় অংশই আদায় অযোগ্য।